উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা [জীবন ও কর্ম] ★বই সম্পর্কে কিছু কথা: আয়েশা সিদ্দীকা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা ছিলেন নববী কাননের সেই ফুল যার অপূর্ব সুবাস নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সর্বদা মোহিত ও মাতোয়ারা করে রাখতেন। তিনি ছিলেন নববী সংসারের সেই জ্যোতি যিনি তাঁর উজ্জ্বল জ্যোতিতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাম্পত্য সংসারকে সদা আনন্দময় ও পুলকিত করে রাখতেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাই ভালোবেসে আদর করে তাঁকে ডাকতেন ‘হুমায়রা’। তিনি স্বউচ্ছ্বাসে বলতেন: “নারীদের ওপর আয়েশার মর্যাদা এমন, সকল প্রকার খাদ্যের ওপর সারীদের মর্যাদা যেমন।” [বুখারী: ৩৪১১] শুধু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছেই নয়, বরং তিনি তাঁর অনন্য গুণে আকাশে ও ফেরেশতালোকেও ছিলেন সম্মানে ভূষিত। স্বয়ং জিবরীল ‘আলাইহিস সালাম তাঁর কাছে সালাম পাঠিয়েছিলেন। [বুখারী: ৩৭৬৮] তাঁর গৃহে অবস্থানকালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর ওহী নাযিল হতো। “উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা [জীবন ও কর্ম]” শীর্ষক গ্রন্থটিতে ইসলামের অন্যতম মহান নারীব্যক্তিত্ব, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্যতম সহধর্মিণী এবং জ্ঞানের আলোকবর্তিকা উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহার অনন্যসাধারণ জীবন, চরিত্র ও সমাজে তাঁর অবদান তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। এটি কেবল একটি জীবনীগ্রন্থ নয়; বরং এটি ইতিহাস, জ্ঞান-বিজ্ঞান, সাহিত্য, দীনদারি ও একজন নারীর অনন্যসাধারণ অবদান সম্পর্কিত তথ্যভাণ্ডার। এই গ্রন্থটি নারীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহার জীবনচরিত প্রমাণ করে, ইসলামে নারীর ভূমিকা শুধুমাত্র গৃহকোণে আবদ্ধ নয়; বরং তারা শরীয়তের গণ্ডির ভেতর থেকে সর্বক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা পালন করতে পারে। বর্তমান যুগে, যখন নৈতিক অবক্ষয় এবং পারিবারিক ভাঙন ক্রমশ বাড়ছে, আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহার জীবনী আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, সহমর্মিতা, দায়িত্বশীলতা ও পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতেই একটি সুস্থ সমাজ গড়ে উঠতে পারে। তাঁর জীবন থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা শুধু নারী নয়, পুরুষদের জন্যও সমানভাবে প্রযোজ্য। পারিবারিক জীবনে কীভাবে ভালোবাসা, ত্যাগ ও দায়িত্বশীলতা বজায় রাখা যায়, তা আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহার জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে প্রতিফলিত হয়েছে।
Title
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা জীবন ও কর্ম
ভারত-উপমহাদেশে সিরাতচর্চা, ইতিহাস ও আরবিভাষার সাহিত্য নিয়ে যারা গবেষণামূলক কাজ করেছেন, কর্মগুণে হয়েছেন বিশ্ববরেণ্য—সাইয়েদ সুলাইমান নদবি রহ. তাদের সবচেয়ে অগ্রসারির। ১৮৮৪ সালে ব্রিটিশ-ভারতের বিহারের দিসনাতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বিশ্ববিখ্যাত নদওয়াতে পড়াশোনা করে সেখানেই দীর্ঘ দিন আরবিভাষার পাঠদান করেন এই প্রাজ্ঞ প্রতিভাধর; পাশাপাশি ছিলেন আন-নদওয়া আরবি পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক। কর্মজীবনে শিক্ষকতা ও সম্পাদনার পাশাপাশি লিখেছেন অসংখ্য কালজয়ী গ্রন্থ, প্রদান করেছেন পৃথিবীখ্যাত সিরাত-বিষয়ক ভাষণ—খুতুবাতে মাদরাজ নামে যা বিশ্ববিখ্যাত। সিরাতুন নবি (যুগ্ম), সিরাতে আয়েশা, আরদুল কুরআন, খৈয়ামসহ যা-ই তিনি লিখেছেন, সেটিকেই করে তুলেছেন পাঠ-অনিবার্য। এসব আকরগ্রন্থ তাকে এনে দিয়েছে অমরত্বের মর্যাদা। তার লেখা ইতিহাসের পাণ্ডুলিপিগুলো শাস্ত্রীয় সংজ্ঞা পার হয়ে হৃদয়কেও স্পর্শ করে প্রবলভাবে।