ব্যাক কভার ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ক্যাপ্টেন বজলুল গনি পাটোয়ারী আটকে পড়েন পশ্চিম পাকিস্তানে। দেশপ্রেমিক এই বাঙালি সেখান থেকে পালিয়ে এসে যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে। সম্মুখযুদ্ধে শত্রুকে পরাজিত করে ছিনিয়ে আনেন স্বাধীনতা। সেই অবিশ্বাস্য, শ্বাসরুদ্ধকর কাহিনি উঠে এসেছে এই বইয়ে। ১ম ফ্লাপ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সামরিক বাহিনীর অনেক বাঙালি সদস্যের মতো এই বইয়ের লেখক ক্যাপ্টেন বজলুল গনি পাটোয়ারীও আটকে পড়েন পশ্চিম পাকিস্তানে। কিন্তু সব সময় তাঁর মন পড়ে থাকে দেশের মানুষের কাছে। দৃঢ়সংকল্প করেন, যেভাবেই হোক শত্রুভূমি থেকে পালাবেন, যোগ দেবেন মুক্তিযুদ্ধে। নানা পরিকল্পনার পর মেজর তাহের, মেজর জিয়াউদ্দিন, মেজর মঞ্জুর ও ক্যাপ্টেন বজলুল গনি পাটোয়ারী একাত্তরের জুলাই মাসে শিয়ালকোটে একত্র হন। সঙ্গে মেজর মঞ্জুরের স্ত্রী, শিশুপুত্র ও কন্যা। এক ঝড়বৃষ্টির রাতে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে তাঁরা পাড়ি দেন কাশ্মীর সীমান্ত। তারপর দিল্লি হয়ে ছড়িয়ে পড়েন বিভিন্ন রণাঙ্গনে শত্রুর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে। প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের এক ক্রান্তিকালে লেখককে ডেল্টা (ডি) কোম্পানির নেতৃত্ব ও পুরো ইউনিটের উপ-অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিতে হয়। তারপর শুরু হয় জীবন বাজি রেখে একের পর এক লড়াই। এক বাঙালি সেনা কর্মকর্তার পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান ও লড়াই এবং প্রাণের বিনিময়ে বিজয় অর্জনের অবিশ্বাস্য উপাখ্যান এই বই।
বজলুল গনি পাটোয়ারী (অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল) জন্ম ১৯৪২ সালে চাঁদপুরে। তিনি ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের কাকুল মিলিটারি একাডেমিতে চতুর্থ ওয়ার কোর্সে যোগ দেন। প্রশিক্ষণ শেষে একজন পদাতিক অফিসার হিসেবে পাকিস্তানের খাড়িয়ান সেনানিবাসের ৩৩ বালুচ রেজিমেন্টে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি গোপনে পশ্চিম পাকিস্তান ছেড়ে ভারত হয়ে যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি তৎকালীন কর্নেল এম এ জি ওসমানীর নির্দেশে একাত্তরের আগস্ট মাসে ‘সিনিয়র টাইগার্স’ নামে পরিচিত প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ডেল্টা (ডি) কোম্পানির নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর অতিরিক্ত দায়িত্ব ছিল যুদ্ধকালে প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের উপ-অধিনায়কের দায়িত্ব পালন। তারপর রণাঙ্গনের সম্মুখ সারিতে থেকে যুদ্ধ করেছেন সিলেট অঞ্চলে। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে সম্মানিত করে।