এই সময়- বইয়ের ফ্লাপের লেখা অন্নদাশঙ্কর রায়ের সাম্প্রতিক একগুচ্ছ নানা স্বাদের প্রবন্ধ নিয়ে প্রকাশিত হল এই গুরুত্বপূর্ণ সংকলন। নাম ‘এই সময়’, কিন্তু এ-গ্রন্থের কয়েকটি প্রবন্ধে রয়েছে সেই সময়ের কথাও যখন অন্নদাশঙ্কর কাছ থেকে দেখছেন জওহরলাল নেহরুর মতাে বণাঢ্য ব্যক্তিত্বকে | দেখছেন কখনও ফোটোগ্রাফারের ছদ্মবেশে, কখনও শ্রোতার ভূমিকায়, কখনও সহসদস্যরূপে সাহিত্য অকাদেমির নানান সভায় । রয়েছে সেই সময়ের কথা, যখন চকিতে আই-সি-এস-এর চাকরি ছেড়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। নিলেন, না নিতে হল ? কেন ? কোন পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত তাঁর ? শুধু কি ব্যক্তিগত কারণে ? বি-বি-সি থেকে প্রচারিত আলােড়ন-জাগানাে ধারাবাহিক ‘ইয়েস মিনিস্টার’-এর ধরনে অন্নদাশঙ্কর এ-বইতে এই প্রথম শােনালেন ‘নাে মিনিস্টার’ নামের অমূল্য আত্মকাহিনী, যাতে এই কৌতূহলকর জিজ্ঞাসার পুরাে উত্তর বিধৃত । রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রনৈতিক ; সাম্প্রতিক ও জ্বলন্ত আরও কিছু সমস্যা নিয়েও বেশ কিছু আলােচনা ‘এই সময়’ প্রবন্ধ-গ্রন্থে। সূচি নাে, মিনিস্টার...১১ হিজ হাইনেস...২২ নেহরু : যেটুকু দেখেছি...২৭ তিন প্রধানমন্ত্রী...৩৮ রাষ্ট্রপতি বনাম প্রধানমন্ত্রী...৪৭ যার হাতে টিকিট তার হাতেই টিকি...৫০ যে খেলার যা নিয়ম...৫৫ স্বাধীনতা সংগ্রামে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি...৬০ ধর্মনিরপেক্ষ না ধর্মে নিরপেক্ষ...৬৪ সহ-অবস্থান...৭২ বিদেশী বা বহিরাগত...৭৪ ভারত কি ছিন্নভিন্ন হতে চলেছে...৭৭ প্রসঙ্গ খলিস্থান...৮০ প্রসঙ্গ গাের্খাল্যাণ্ড...৮৫ প্রসঙ্গ ইলম...৮৮ প্রসঙ্গ বাংলাদেশ...৯৪ পরমাণু চিন্তা...১০০ সহ-অস্তিত্ব না সহ-নাস্তিত্ব...১০৭ সতীদাহ না বধূদাহ...১১১ ফিরে চল মাটির টানে...১১৮ সমাধান কোন পথে...১২০ নিরাপত্তার প্রশ্ন...১২২ নববর্ষ ভাবনা...১২৪ স্বাধীনতা দিবসের চিন্তা...১২৫ আমাদের গণতন্ত্র কলঙ্কমুক্ত হবে...১২৭ ‘তমস'...১২৮ আরাে এক ‘তমস’ ?...১৩০ তমসাে মা জ্যোতির্গময়...১৩৪ নেহরু শতবার্ষিকী...১৩৫ নেহরুনামা...১৩৭ আজাদ শতবার্ষিকী...১৪৩
(মার্চ ১৫, ১৯০৪ - অক্টোবর ২৮, ২০০২), একজন স্বনামধন্য বাঙালি কবি ও লেখক। ভারতের উড়িষ্যা জেলার তার জন্ম। তিনি একজন বিখ্যাত ছড়াকারও। অন্নদাশঙ্করের জন্ম হয় ব্রিটিশ ভারতে বর্তমান উড়িষ্যার ঢেঙ্কানলে । তাঁর পিতা ছিলেন ঢেঙ্কানল রাজস্টেটের কর্মী নিমাইচরণ রায় এবং তাঁর মাতা ছিলেন কটকের প্রসিদ্ধ পালিত বংশের কন্যা হেমনলিনী । ছোটবেলায় ঢেঙ্কানলে তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয় । ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ম্যাট্রিক পাশ করেন । এরপর সংবাদপত্রের সম্পাদনা শিখতে কলকাতা বসুমতী পত্রিকার সম্পাদক হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষের কাছে যান । তিনি শর্টহ্যান্ড, টাইপরাইটিং এবং প্রুফরিডিং-ও শেখেন । কিন্তু এই কাজ তাঁর ভালো লাগেনি । এরপর তিনি কটকের র্যাভেনশ কলেজ থেকে আই.এ পরীক্ষা দেন এবং তাতে পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন । ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে বি.এ পরীক্ষাতেও তিনি পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে প্রথম স্থানাধিকারী হন । ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে এম.এ পড়তে পড়তে আই.সি.এস পরীক্ষায় তিনি দ্বিতীয়বারে পূর্ববর্তী রেকর্ড ভেঙে প্রথম স্থান অধিকার করেন । তিনিই প্রথম ভারতীয় হিসেবে এ গৌরব লাভ করেন। সেই বছরেই তিনি সরকারি খরচে আই.সি.এস হতে ইংল্যান্ড যান । সেখানে তিনি দুই বছর ছিলেন । এই সময়ে তাঁর ধারাবাহিক ভ্রমণ কাহিনী পথে প্রবাসে বিচিত্রায় প্রকাশিত হয় । ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন কন্যা অ্যালিস ভার্জিনিয়া অনফোর্ডকে বিবাহ করে তিনি তাঁর নাম দেন লীলা রায় । লীলা রায় বহু বই বাংলা থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন । অন্নদাশঙ্করের অনেক লেখা লীলাময় ছদ্মনামে প্রকাশিত হয়েছিল । ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রথম নদীয়া জেলার ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে কাজে যোগ দেন । তিনি বছর এই পদে থেকে বিভিন্ন জেলায় কাজ করে কুমিল্লা জেলায় জজ হিসাবে নিযুক্ত হন । ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি সরকারী কাজে নিযুক্ত থেকে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে তিনি পশ্চিমবঙ্গের বিচার বিভাগের সেক্রেটারি হন । ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে তিনি স্বেচ্ছায় সরকারী চাকরি থেকে অবসর নেন । ২৮ অক্টোবর , ২০০২ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।