اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ وَحْدَهْ، وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلٰى مَنْ لَا نَبِيَّ بَعْدَهْ، وَمَن ْوَالَاهُ وَبَعْدُ.
আল হামদুলিল্লাহ, মহান আল্লাহর অশেষ দয়া ও করুণায় ‘বিষয় ভিত্তিক আয়াত-হাদীস সঞ্চয়ন’ বইটি প্রকাশিত হলো।
মহিমান্বিত কুরআন ইসলামী শরী’আতের প্রথম ও প্রধান উৎস। এ কিতাব সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন,
﴿الٓرٰ ۟ کِتٰبٌ اُحْکِمَتْ اٰیٰتُهٗ ثُمَّ فُصِّلَتْ مِنْ لَّدُنْ حَکِیْمٍ خَبِیْرٍ ﴾
অর্থাৎ, “আলিফ-লাম-র। এ (কুরআন হচ্ছে এমন একটি) কিতাব, যার আয়াতসমূহ অত্যন্ত সুস্পষ্ট (ও সুবিন্যস্ত) করে রাখা হয়েছে, অত:পর (এর বর্ণনাসমূহও এখানে) বিশদভাবে বলে দেওয়া হয়েছে, (এ কিতাব) এক প্রজ্ঞাময় সর্বজ্ঞ সত্তার কাছ থেকে তোমাদের কাছে এসেছে।)” [সূরা ১১ : হুদ : ১]
মহাগ্রন্থ আল কুরআন সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “এ কুরআন একটি রশিতুল্য, যার এক প্রান্ত আল্লাহর হাতে এবং অপর প্রান্ত তোমাদের হাতে। অতএব তা মযবুত করে ধরো; তাহলে তোমরা এরপর কখনো পথভ্রষ্ট হবে না, হবে না ধ্বংসপ্রাপ্ত।” (সহীহ্, ইবনু হিব্বান : ১২২)
সকল বিদ্বান ও বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন যে, মহিমান্বিত আল কুরআনই হলো ইসলামী শরী‘আতের মূল উৎস এবং সকল কিছুর ওপর নির্ভুল প্রমাণ। তাই এর মাঝে যা বর্ণিত হয়েছে সে অনুযায়ী আমল করা ফরয। এ অলৌকিক মহাগ্রন্থটি অনেক ধরনের বিধি-বিধানকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
মহিমান্বিত আল কুরআনের পর ইসলামী শরী’আতের দ্বিতীয় উৎস হলো হাদীসে নববী, যা অনেক ক্ষেত্রে কুরআনের অনুরূপ মর্যাদায় স্থান পেয়েছে। কেননা মহান আল্লাহ তার প্রিয় নবী ও রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কিছু কিছু বিষয়ে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা প্রদান করেছেন। পবিত্র কুরআন দীন-ইসলামের মূলনীতি ও সাধারণ বিধানাবলির নীতিমালা অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং এগুলোর কিছুর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ প্রদান করেছে। আর অবশিষ্ট কিছুর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য ছেড়ে দিয়েছে। যেমন মহান আল্লাহ বলেন,
﴿وَ اَنْزَلْنَاۤ اِلَیْکَ الذِّكْرَ لِتُبَیِّنَ لِلنَّاسِ مَا نُزِّلَ اِلَیْهِمْ وَلَعَلَّهُمْ یَتَفَکَّرُوْنَ﴾
অর্থাৎ, “আর আমি তোমার প্রতি নাযিল করেছি কুরআন, যাতে তুমি মানুষের জন্য স্পষ্ট করে দিতে পারো, যা তাদের প্রতি নাযিল করা হয়েছে। আর যাতে তারা চিন্তা করে।” [সূরা ১৬; আন নাহল : ৪৪]
সুতরাং কুরআন ও হাদীস একটি অন্যটির পরিপূরক। সেজন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
্রأَلَا اِنِّيْ أُوْتِيْتُ الْكِتَابَ وَمِثْلَهُ مَعَهُগ্ধ
অর্থাৎ, “জেনে রাখো! আমাকে কিতাব এবং তার সঙ্গে অনুরূপ ‘হাদীস’ দেওয়া হয়েছে।” (সহীহ্, আবূ দাউদ : ৪৬০৪)
“বিষয়ভিত্তিক আয়াত-হাদীস সঞ্চয়ন” বইতে বিষয়ভিত্তিক আয়াত এবং বিশুদ্ধ হাদীস সংকলন করা হয়েছে। আলোচনাকে ছোট রাখার উদ্দেশ্যে চাহিদার আলোচনা গ্রন্থটিকে ছয়টি অধ্যায়ে বিভক্ত করা হয়েছে। তা হলো : (ক) ঈমানিয়্যাত, (খ) পবিত্রতা, (গ) ইসলামিয়্যাত, (ঘ) অর্জনীয় গুনাবলী, (ঙ) বর্জনীয় গুনাবলী এবং (চ) ইসলামী আন্দোলন-ইসলামী বিপ্লব। প্রথম পাঁচটি অধ্যায়ের প্রত্যেকটি আলোচনার সাথে বিষয়বস্তুর আলোকে সার কথা সংযুক্ত করেছি এবং কোনো কোনোটির শেষাংশে জ্ঞাতব্য জুড়ে দিয়েছি, যেনো সম্মানিত পাঠকবৃন্দ বিষয়ের মূলবক্তব্য হৃদয়াঙ্গম করতে পারেন।
গ্রন্থটি সংকলন করার ক্ষেত্রে যাঁরা উৎসাহ জুগিয়েছেন আমি তাদের সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে বিষয়-ভিত্তিক আয়াত সংকলনের ক্ষেত্রে সবুজপত্র পাবলিকেশন্স এর সম্মানিত সম্পাদক ও প্রকাশক মুহাম্মদ হেলাল উদ্দীন ভাইকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি, যিনি অত্র পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত মাসউদুর রহমান নূর কর্তৃক অনূদিত ‘আল কুরআনুল কারীম’ বাংলা অনুবাদ থেকে সরাসরি সম্পূর্ণ অংশটির অনুবাদ প্রস্তুত করে দিয়েছেন। এছাড়াও সম্মানিত আলিমগণ মূল্যবান পরামর্শ দিয়ে এ খিদমতকে গতিশীল করেছেন। মহান আল্লাহ তাঁদের সকলকে উত্তম বিনিময় দান করুন।