বাংলাদেশ-- সবুজ শ্যামল এক অপার সৌন্দর্যের দেশ, যেখানে নদীর স্রোতধারা, পাহাড়ের উচ্চতা, সমুদ্রের গর্জন, আর বনের রহস্যময়তা মিলে সৃষ্টি করেছে এক অপরূপ ভূখণ্ড। এই দেশটির প্রত্যেকটি প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং প্রকৃতির অপূর্ব সব নিদর্শন। এইসব স্থানগুলোর মধ্যেই লুকিয়ে আছে প্রতিটি বাঙালির শেকড়, যেখান থেকে আমরা আমাদের নিজস্বতা ও পরিচয় খুঁজে পাই।
মো. আলমগীর হোসেনের ভ্রমণকাহিনি ‘আমার দেখা বাংলাদেশ’ সেই চেনা দেশেরই এক নতুন পরিচয়। বইটির প্রতিটি পৃষ্ঠায় মেলে ধরা হয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অপরূপ সৌন্দর্য, ইতিহাস ও সংস্কৃতির নানা দিক। লেখকের অন্তর্দৃষ্টি এবং ভ্রমণের অভিজ্ঞতা পাঠককে নিয়ে যাবে সরাসরি গাজনার বিলের অবারিত জলরাশি থেকে শুরু করে কক্সবাজারের বিশাল সৈকত, পাহাড়পুরের প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন থেকে সুন্দরবনের রহস্যময় বনাঞ্চলে।
লেখকের শব্দচয়ন, পর্যবেক্ষণশক্তি, আর স্থানীয় জনমানুষের সাথে তাঁর আন্তরিক সংযোগ বইটিকে করেছে হৃদয়গ্রাহী। এই ভ্রমণকাহিনি পাঠককে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মাঝে ডুব দিতে সাহায্য করবে এবং নতুনভাবে দেশকে ভালোবাসতে শেখাবে।
যারা ভ্রমণপ্রেমী, যারা বাংলাদেশকে নতুনভাবে জানতে চান এবং যারা ইতিহাসের পথে পথে ঘুরে বেড়াতে চানÑ তাদের জন্য ‘আমার দেখা বাংলাদেশ’ একটি অপরিহার্য সংগ্রহ।
লেখক মো. আলমগীর হোসেন ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে ১লা জুন পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার বোনকোলা গ্রামে এক মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম হাসান আলী মোল্লা এবং মাতা মরহুমা আমেনা খাতুন। তিনি ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে বোনকোলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি (প্রথম বিভাগ) এবং ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে সাতবাড়িয়া কলেজ থেকে এইচএসসি (প্রথম বিভাগ) পাশ করেন। পরবর্তীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে বিএসএস (সম্মান) এবং ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে এমএসএস ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি বোনকোলা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে সিনিয়র প্রভাষক পদে কর্মরত আছেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং লেখালেখির সাথে জড়িত হয়ে পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় রাজশাহী দৈনিক বার্তা, (বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি), বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের প্রচার সম্পাদক), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদপত্র পাঠক ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি গাইড ‘প্রত্যাশা’সহ বেশ কিছু স্মরণিকার (প্রভাতি, অনুরণন, সাঁকো, স্যাটেলাইট, সেঞ্চুরি ইত্যাদি) সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। বিভিন্ন দর্শনীয় জায়গা ঘুরে বেড়ানো তাঁর প্রধান শখ। সুযোগ পেলেই সফরসঙ্গীদের নিয়ে ঘুরতে বেড়িয়ে পড়েন। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা এবং উপলব্ধিগুলো তিনি তাঁর প্রথম প্রকাশনা ‘আমার দেখা বাংলাদেশ’ ভ্রমণকাহিনিতে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।