ভূমিকা একটি দেশের আঞ্চলিক বা স্থানীয় ইতিহাস ব্যতীত জাতীয় ইতিহাস রচনা অসম্ভব।অতীতে বাংলাদেশের স্থানীয় ইতিহাস চর্চা তেমন একটা না হলেও বর্তমানে ইহা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং এর গুরুত্ব গবেষকদের পাশাশাশি সাধারণ মানুষও উপলদ্ধি করতে পেরেছে। বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা নোয়াখালী।যে জেলার আনাচে-কানাচে প্রকৃতি তার অবারিত রূপ ছড়িয়ে দিয়েছে অকৃপণ হাতে।আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগও এ জেলার ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে।তবুও স্বর্ণ প্রসবিণী নোয়াখালী যুগ-যুগান্তর ব্যাপী ধারন করেছে অনন্য সমৃদ্ধশালী ইতিহাস-ঐতিহ্য। নোয়াখালী আমার জন্মস্থান।উপরন্তু এ জেলার কতিপয় বিষয় আমাকে কৌতূহলী করে তোলে।সেই আলোকে কয়েকটি বিষয় বা প্রবন্ধ নিয়ে “নোয়াখালীর ইতিহাস-ঐতিহ্য” গ্রন্থটি রচিত হল। ইহাতে যথাসম্ভব ঐতিহাসিক গুরুত্বের ক্রমানুসারে বিষয়গুলো সন্নিবেশিত করা হয়েছে এবং বিষয় নির্বাচনে রয়েছে নতুনত্ব। তাই গবেষক এবং পাঠক সমাজ এগুলো হতে বিশেষ উপকৃত হবেন।উল্লেখিত বিষয় বা প্রবন্ধ সমূহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হেরিটেজ আর্কাইভস অব বাংলাদেশ হিস্ট্রি-এর স্থানীয় ইতিহাস, ঢাকার লহ্মীপুর বার্তা এবঙ লহ্মীপুরের বাংলা আওয়াজ পত্রিকার বিভিন্ন সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। আমার স্ত্রী লেখালেখি মোটেই পছন্দ করে না। তবুও তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমার লেখালেখি। সে আমাকে প্রায়ই বলে থাকে এসব হাবিয়ার মার কিচ্ছা-কাহিনী লেখা বাদ দাও কিভাবে জীবনে উন্নতি করবে তা নিয়ে ভাব কিংবা তোমাকে বিয়ে করা আমার মহাভুল হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি।আর এত সব বঞ্চনা সহ্য করেও আমার লেখালেখি জনিত নেশার ইহা এক বহিঃপ্রকাশ মাত্র। আরো নতুন নতুন বিষয় নিয়ে ভবিষ্যৎ-এ ধারা অব্যাহত রাখার বাসনা করছি।সর্বোপরি গ্রন্থটি কারো কাজে লাগলে আমার শ্রম সার্থক হবে।তবে ভুল-ত্রুটি শুধরে দিতে সবার প্রতি আমার সবিনয়ে অনুরোধ রইল। এ.কে. এম. গিয়াস উদ্দিন মাহ্মুদ সূচিপত্র *ভূমিকা *এক নজরে নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন তথ্য *নোয়াখালী ভূতাত্ত্বিক ইতিহাস *নোয়াখালীর ইতিহাসে শ্রী শ্রী বারাহী দেবীর অবস্থান *নোয়াখালী পুরাতন জেলা শহরের স্মৃতিচারণ *নোয়ালীর ঐতিহ্যবাহী পুকুর-দীঘি *নোয়াখালীর ঐতিহ্য : বজরা শাহী জামে মসজিদ *নোয়াখালীর পাবলিক লাইব্রেরি ইতিবৃত্ত *নোয়াখালী টাউল হলের কথা *নোয়াখালীর মন্দির ও স্থাপত্যকীর্তি *নোয়াখালীর ইতিহাস চর্চার ক্রমবিকাশ *নোয়াখালীর ফটোগ্রাফি চর্চার সেকাল-একাল *নোয়াখালীর পর্যটন শিল্প : সমস্যা ও উত্তরণ *মহাত্মা গান্ধীর নোয়াখালী শান্তি যাত্রা *নোয়াখালীর লোক বিশ্বাস *নোয়াখালীতে প্রচলিত কতিপয় পারিবারিক সম্পর্ক বিষযক শ্লোক *নোয়াখালীতে স্কাউটস আন্দোলনের ইতিবৃত্ত *নিঝুম দ্বীপের ইতিবৃত্ত *মুক্তিযুদ্ধে নোয়াখালীর বৌদ্ধ সম্প্রাদায়ের অবদান *৭ ডিসেম্বর নোয়াখালী মুক্ত দিবস *‘এসো বাংলাদেশ গড়ি’ রোড শো ও কার্ণিভাল : প্রেক্ষাট নোয়াখালী
এ.কে.এম গিয়াস উদ্দিন মাহমুদ নােয়াখালীর মাইজদী শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম আবু বকর ছিদ্দিক এবং মাতা সালেহা বেগম। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম.এস.এস এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে এম.এ ডিগ্রি অর্জন করেন। নােয়াখালী-বিষয়ক লেখালেখি এবং গবেষণা তার অন্যতম ব্রত। তিনি নােয়াখালীর অতীত ঐতিহ্যকে বিস্মৃতির অন্ধকার হতে আলাের জগতে আনার পাশাপাশি বর্তমানকেও দীর্ঘ অনুশীলন ও পরিশীলতার ভিত্তিতে ভবিষ্যতের জন্য লিপিবদ্ধ করতে চেষ্টা করছেন। তার উল্লেখযােগ্য গ্রন্থসমূহনােয়াখালীর শ্লোক (২০০৯), নােয়াখালীর বৌদ্ধ সম্প্রদায় (২০১০), নােয়াখালীর ওলি-দরবেশ। (২০১১), নােয়াখালীর ইতিহাস-ঐতিহ্য (২০১২), লক্ষ্মীপুরের জমিদারদের ইতিহাস (২০১২), নােয়াখালীর সংগীত সাধক সুভাষ সরকারের কীর্তি (২০১৩), নােয়াখালীর লােকজ জ্ঞানে প্রযুক্তি (২০১৩), নােয়াখালীর লােকসাহিত্য ও সংস্কৃতিতে ইতিহাসের উপাদান (২০১৪), মুক্তিযুদ্ধে নােয়াখালী (২০১৫), নােয়াখালীর অর্থনৈতিক ইতিহাস (২০১৫), নােয়াখালীর ইতিহাস চর্চার ক্রমবিকাশ (২০১৫), প্রাকৃতিক দুর্যোগ: প্রেক্ষাপট নােয়াখালী (২০১৭), নােয়াখালীর নারী মুক্তিযোেদ্ধা (২০১৮), নােয়াখালীর চারুশিল্পী মুক্তিযােদ্ধা মফিজুল হক (২০১৮)। স্ত্রী বিবি আমেনা এবং দু'কন্যা সালেহা সিদ্দিকী আরওয়া ও কামরুন সিদ্দিকী আরিবাহ-কে নিয়ে তার সংসার।