মসনবী শরীফের গল্প-১
বিশ্ব নন্দিত সাধক ও দার্শনিক কবি মওলানা জালাল উদ্দীন রুমি (র) এর অনবদ্য সাহিত্যকর্ম ‘মসনবী শরীফ’। ৬খন্ডে বিন্যস্ত ফারসি ভাষার এই আধ্যাত্মিক মহাকাব্যকে বাংলায় একেবারে সরল ও সহজ করে উপস্থাপন করেছেন, প্রখ্যাত লেখক ও ফারসি ভাষাবিদ ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী। তিনি কবিতার বর্ণনাকে ঝরঝরে বাংলা গদ্যে উচ্চতর সাহিত্যরসসহ পরিবেশন করেছেন। গদ্যের ফাঁকে ফাঁকে ফারসি বয়েত, উচ্চারণ ও শব্দার্থ পাঠক মনে ফারসির আধ্যাত্মিক আমেজ ও ব্যাঞ্জনা সৃষ্টি করে। মসনবী শরীফের গল্প ১ম খন্ডে রয়েছে ৬১ টি প্রবন্ধ। প্রবন্ধের গল্পগুলো মসনবী শরীফ থেকে চয়ন করা হয়েছে। এসব গল্পে মওলানা রূমী আধ্যাত্মিক শিক্ষা, দর্শন, যুক্তি, উপমা ও নৈতিক আবেদন আর আল্লাহর সাথে বান্দার ভালোবাসার বন্ধনের অতুলনীয় ঝংকার তুলেছেন। বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যা-৪৮০।
মসনবী শরীফের গল্প-২
মূল মসনবী শরীফ ২য় খণ্ড থেকে চয়নকৃত গল্পগুলো এই বইতে মোট ৪০টি প্রবন্ধে সাজানো হয়েছে। মসনবী প্রায় ৮শ বছর আগে রচিত ফারসি ভাষার আধ্যাত্মিক মহাকাব্য । তবে ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী যেভাবে প্রাঞ্জল বাংলায় গদ্য ও পদ্যের মিশেলে সাজিয়েছেন তা ইরানসহ সমগ্র দুনিয়ায় মসনবী চর্চায় এক ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা। বইগুলোর বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে গদ্যে গল্পের ধারাভাষ্য, মাঝে ফারসি বয়েত, উচ্চারণ ও কবিতার আদলে তরজমা,সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা এবং কুরআন হাদিসের শিক্ষার সাথে সাদৃশ্য ও মিল।
মসনবী শরীফের গল্প-৩
মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি রহমাতুল্লাহি আলাইহি, ইসলামের ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী সুফি কবি এবং দার্শনিক। তাঁর লেখা মসনবী শরীফ বিশ্বজুড়ে পরিচিত এবং মানব জীবনের প্রতি গভীর অন্তর্দৃষ্টি ও আত্মিক জ্ঞান দ্বারা সমৃদ্ধ। এই মহাগ্রন্থ থেকে বাছাইকৃত গল্প নিয়ে বিশিষ্ট লেখক ও দার্শনিক ড. মাওলানা মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী একটি চমৎকার অনুবাদগ্রন্থ সিরিজ প্রণয়ন করেছেন।
বইটিতে রুমির অনুপ্রেরণামূলক পংক্তিগুলো বাংলা ভাষায় অত্যন্ত সহজ ও হৃদয়গ্রাহীভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা মূল ভাব ও গূঢ় বার্তা বজায় রেখে লেখা হয়েছে। প্রতিটি গল্প শুধু একটি দার্শনিক দিক নয় বরং জীবনঘনিষ্ঠ শিক্ষা ও আত্মার জাগরণে সহায়ক। এটি এমন একটি গ্রন্থ যা পাঠককে জীবনের গভীরতম প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।
এই বইটি বিশেষভাবে উপকারী হবে সেইসব পাঠকদের জন্য, যারা মসনবী শরীফের জটিল বিষয়গুলো সহজ ভাষায় বোঝার আগ্রহী এবং রুমির ভাবধারা থেকে নিজ জীবনকে আলোকিত করতে চান।
মসনবী শরীফ ৩য় খণ্ডের প্রবন্ধ সংখ্যা ৫৬। গল্পগুলোতে আধ্যাত্মিক সাধনা, শিক্ষা, দর্শন ও আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সম্পর্কের রহস্য জ্ঞানের গূঢ়তত্ত্ব ব্যক্ত করা হয়েছে।
মসনবী শরীফের গল্প-৪
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রুমী চর্চা শীর্ষক প্রবন্ধ দিয়ে শুরু হয়েছে ৪র্থ খণ্ড। বিশ্ববিখ্যাত সাধক কবি ও দার্শনিক মওলানা রূমী রহ. এর মূল মসনবী ৪র্থ খন্ড থেকে চয়ন করা হয়েছে এই বইয়ের গল্পগুলো। মূল ৪৫ টি প্রবন্ধের মধ্যে একটির নাম ‘আতরপট্টিতে বেহুশ মুচির কাহিনী’। মনোজ্ঞ এই গল্পের বাঁকে বাঁকে মওলানা জালাল উদ্দীন রূমী রহ বিশ্ব মানবতার জন্য যে শিক্ষা দর্শন ও ভালোবাসার সবক দিয়েছেন তা অতুলনীয়। এ বইয়ের রচয়িতা ফারসি ভাষা ও সাহিত্যের প্রসিদ্ধ গবেষক ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী।তিনি দীর্ঘ তিন যুগ ধরে মসনবী চর্চার অভিজ্ঞতাকে ছন্দময় বাংলা গদ্যে ব্যক্ত করেছেন গল্পের বাকে বাঁকে। বইয়ের পৃষ্ঠা সংখ্যা -২৫৬।
মসনবী শরীফের গল্প-৫
আমাদের দেশে তাসাউফ চর্চা ও পীরালির নামে একদিকে ভণ্ডরা এমন সব কসরত চালাচ্ছে, যা দ্বারা ইসলামের আধ্যাত্মিক শিক্ষা ও সুদীর্ঘ ইতিহাসে বুজুর্গানে দীনের সাধনা সম্পর্কে জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। এই সুযোগে ইসলামের আধ্যাত্মিক ভাবধারা থেকে বঞ্চিত বিরুদ্ধবাদী তথাকথিত স্কলাররা তাসাউফ ও আধ্যাত্মিক সাধনা সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। ফলে শিক্ষিত মহল, বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম ইসলামের প্রাণশক্তি আধ্যাত্মিক ভাবরস ও আল্লাহ ও রাসূলের ভালোবাসার বাতাবরণ হতে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে।
উভয় প্রান্তিকতার মাঝখানে মওলানা রূমী রহ মসনবীতে একদিকে ভন্ড পীরদের মুখোশ উন্মোচন করেছেন, অন্যদিকে নানা গল্পের ছলে মানুষকে আল্লাহর সান্নিধ্যে নিয়ে যাওয়ার আসর সাজিয়েছেন। প্রখ্যাত লেখক, গবেষক ও ফারসি বিশেষজ্ঞ ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী বিষয়গুলোকে তার ছন্দময় লিখনীর সাহায্যে বাংলা সাহিত্যকে উপহার দিয়েছেন। এ বইয়ে প্রবন্ধ সংখ্যা -৪২ এবং পৃষ্ঠা সংখ্যা -২৭১। শুরুতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের মরহুম প্রফেসর আবদুন নূর এর ইংরেজিতে লেখা ভুমিকা বইটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। আল্লাহ পাক তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করুন।
মসনবী শরীফের গল্প-৬
মওলানা মুহাম্মদ জালাল উদ্দিন রূমী (র) মসনবী রচনার শেষ খণ্ডে এসে যেন তার প্রতিভা উজাড় করে দিয়েছেন। মসনবী শরীফের গল্প ৬ষ্ঠ খণ্ডে সংকলিত ৪০টি প্রবন্ধের প্রত্যেকটি যেন চিন্তা, দর্শন, সাহিত্য ও উর্ধ্বলোক পরিভ্রমণের একেকটি বেলাভূমি। এখানে দাঁড়িয়ে আপনি জীবন মৃত্যুর রহস্যের সন্ধান পাবেন; আত্মজিজ্ঞাসা ও আত্মপরিচয়ে বলিয়ান হয়ে মহান আল্লাহর পরিচয় ও তত্ত্বজ্ঞানে সমৃদ্ধ হওয়ার সুযোগ পাবেন।
প্রাচীন ফারসি সাহিত্যের প্রায় সব মৌলিক গ্রন্থ বাংলায় অনূদিত হয়েছে; কিন্তু মসনবী শরীফের পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ ও ব্যাখ্যা এ পর্যন্ত বাংলায় হয়েছে বলে জানা যায় নি। এর কারণ হয়ত এটাই যে, মসনবীর আধ্যাত্মিক সাগরে ডুব দেয়া সহজ ছিল না। ঢাকার বাজারে আধুনিক সাম্প্রতিক সময়ের অনুবাদগুলোও পূর্ণাঙ্গ নয়, বরং মওলানা আশরাফ আলী সাহেবের কলীদে মসনবীর খণ্ডিত অনুবাদ। প্রখ্যাত লেখক,গবেষক ও ফারসি ভাষাবিদ ডঃ মওলানা মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী বাংলায় মসনবী চর্চার এই অচলায়তন ভেঙে দিয়েছেন। তার অনূদিত ও ব্যাখ্যাত মসনবী শরীফ ১ম খণ্ডসহ এ সংক্রান্ত কয়েকটি বই ইসলামিক ফাউন্ডেশন ইতোমধ্যে প্রকাশ করেছে। বক্ষমান মসনবী শরীফের গল্প সিরিজ মসনবীকে সহজবোধ্য ও সুখপাঠ্য করে দিয়েছে। বইটি প্রকাশ করতে পেরে আমরা সত্যিই আনন্দিত।