ফ্ল্যাপে লিখা কথা কোন অঞ্চল বা এলাকার ইতিহাস লিপিবদ্ধ করা কঠিন কাজ, বিশেষ করে রংপুরের মত বিশাল ঐতিহ্যবাহী জেলার। প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে আজ পর্যন্ত এ জেলার ইতিহাস লিপিবদ্ধ করতে হলে এক দুই খন্ডে তা সমাপ্ত করা সম্ভব নয় । এত বিরাট কাজকে সামনে রেখে রংপুর জেলার মাত্র ২৬১ বছরাধিক কালের (১৬৮৭-১৯৪৭) ঘটনাবলীকে উপস্থপান করে এ গ্রন্থের অবতারণা। সুলতানী আমলে রংপুরে (তৎকালীন কোচরাজ্যের অংশ) মুসলিম অভিযান ততবেশি পরিষ্কার নয়। রংপুরে মুসলিম অভিযান শূরু হয় মোগল আমলে ১৯৬৭ সাল থেকে যা বিরতীহীনভাবে চলে ১৭১১ পর্যন্ত। তখন রংপুর অঞ্চল কোচরাজ্যের অংশ হিসেবে কাছওয়ারা (Kutchwara) নামে অভিহিত ছিল এবং উল্লেখ্য যে আসাম ,ময়মনসিংহ কতিপয় এলাকাসহ বর্তমান জলপাগুড়ি জেলা ছিল রংপুর সীমানভুক্ত।অত্র গ্রন্থের ১২টি অধ্যায়ের রংপুর অঞ্চলের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ,শিক্ষা, সাহিত্য -সাংস্কৃতিক,কৃষক,প্রজা বিদ্রোহ ,রাজস্ব প্রশাসন এবং ১৯০৫ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত সন্ত্রাসবাদ -বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন , রাজবংশীদের ক্ষত্রিয় আন্দোলন ,বামপন্থী কমিউনিস্ট-কৃষক আন্দোলনে এবং পরিশেষে কংগ্রেসে ও মুসলিম লীগ দলের রাজনৈতিক কার্যক্রমের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া গ্রন্থে সন্নিবেশিত হয়েছে রংপুর অঞ্চলের মানচিত্র প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ২০১১ সালের শেষ পর্যন্ত যখন রংপুর বর্তমান বাংলাদেশের ৭ টি বিভাগে কনিষ্ঠতম বিভাগ হিসেবে। আরও রঙিন ছবি যার মাধ্যমে রংপুরের ইতিহাস ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হয়েছে।
সূচিপত্র * লেখকের কথা * অধ্যায় বিবরণী * মানচিত্র * বৃহত্তর রংপুর জেলার ছবি * প্রথম অধ্যায়: রংপুরের রাজনৈতিক বির্বতন : প্রাচীন থেকে আধুনিক * দ্বিতীয় অধ্যায়: প্রাচীন থানার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ( ১৭৯৩- ১৯৪৭) * তৃতীয় অধ্যায়: মোগল -ইংরেজ শাসনামলে রংপুর শহর ( ১৬৮৭-১৯৪৭) * চতুর্থ অধ্যায়: রংপুর অঞ্চলের জমিদার (১৬০৬-১৯৫০) * পঞ্চম অধ্যায়: রংপুরের প্রজা বিদ্রোহে বসুনিয়াদের ভূমিকা (১৭৮০-১৭৮৬) * ষষ্ঠ অধ্যায়: রংপুরের শিক্ষা বিবর্তন (১৭৬৫-১৯৪৭) * সপ্তম অধ্যায়: রংপুরের সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা জমিদারদের অবদান( ১৮৪৭-১৯৫০) * অষ্টম অধ্যায়: জমিদারী রাজস্ব প্রশাসন(১৭৬৫-১৯৫০) * নবম অধ্যায়: সন্ত্রাসবাদ আন্দোলন ও বঙ্গভঙ্গ (১৯০৫-১৯৩০) * দশম অধ্যায়: রংপুরের রাজবংশীদের ক্ষত্রিয় আন্দোলন (১৮৭২-১৯৪৭) * একাদশ অধ্যায়: রংপুরের বামপন্থী- কংগ্রেস যৌথ আঁতাত (১৯৩০-১৯৪৭) * দ্বাদশ অধ্যায়: মুসলমান সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক অভ্যুদয় (১৯০৫-১৯৪৭) * পরিশিষ্ট * প্রন্থপঞ্জি
প্রফেসর ড. মুহম্মদ মনিরুজ্জামান-এর জন্ম। দিনাজপুর শহরের উত্তর বালুবাড়ীতে ১৯৪৫ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে এমএ পাস করেন। কারমাইকেল কলেজ-এ সহযােগী অধ্যাপক পদে থাকাকালীন তিনি ১৯৯৬ সালে ইনিস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল "Zamindars of Bengal: Case Study of Selected Rangpur Zamindars-1793-1950. সুদীর্ঘ ৩৫ বছর চাকরির সাথে সাথে দিনাজপুররংপুর আঞ্চলিক ইতিহাসের উপর তার বহু গ্রন্থ ও প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বাংলাদেশ এশিয়াটিক সােসাইটি এবং বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতি (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)-এর আজীবন সদস্য। তিনি লালমনিরহাট রােটারী ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট (১৯৮৫-৮৭)। বাংলাদেশ। সােশ্যাল ডেভেলপমেন্ট একাডেমী সংস্থার তিনি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৭১ সালে লালমনিরহাট কলেজে। অধ্যাপনাকালীন মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ। করেন। কোচবিহারে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। প্রবাসী মুজিবনগর সরকারের ৬নং জোনাল প্রশাসক (উত্তর জোন, কোচবিহার) জনাব ফয়েজউদ্দিন আহমেদের অধীনে গণহত্যা। কমিশনের তথ্য সংগ্রহে নিয়ােগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রংপুরের প্রাচীন। ইতিহাস প্রথম খণ্ড (১৯৮৮), কারমাইকেল কলেজ জানাল (সম্পাদনা) ২০০০, দিনাজপুররংপুর জেলার শিক্ষা বিবর্তন (১৭৬৫-১৯২১), ২০০৬, দিনাজপুর জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা। (সম্পাদনা), বাংলাদেশ এশিয়াটিক সােসাইটি প্রজেক্ট, ঢাকা, রংপুর জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা (সম্পাদনা), বাংলাদেশ এশিয়াটিক সােসাইটি প্রজেক্ট, ঢাকা, চার শতাব্দীর লালমনিরহাট (২০০৮) অন্যতম।