সময় ব্যবস্থাপনার সর্বশেষ বিষয় হলো ভারসাম্য রক্ষা করা। ধীরে ধীরে আপনি আপনার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে জিনিসগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন তা হলো ভারসাম্য বজায় রাখা এবং সংযমী হওয়া! এই বইতে বর্ণিত সকল পদ্ধতিসমূহ, ধারণাসমূহ এবং কৌশলগুলো অনুশীলনের মাধ্যমে আপনি সময় ব্যবস্থাপনায় একজন দক্ষ নিয়ন্ত্রণকর্তা হয়ে উঠতে পারেন। এতে। করে আপনি আপনার পরিবারের এবং আপনার ব্যক্তিগত জীবনের জন্য সময় কাটানোর অনেক বেশি সময় পাবেন।
প্রায়শই দেখা যায়, লোকজন সময় ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে থাকে যাতে করে তারা প্রতিদিনকার কাজগুলো থেকে অনেক বেশি শিক্ষা নিতে পারে। যাই হোক, একজন বিজ্ঞ ব্যক্তি বলেছিলেন, “জীবনের গতি বৃদ্ধি করার চেয়ে জীবনে আরও অনেক কিছু রয়েছে।” আর সেই বিজ্ঞ ব্যক্তিটি হলেন ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী। কিছু মানুষ ভাবে যে জীবনে দ্রুততার সাথে সব কাজ করতে পারাই হলো প্রকৃত সফলতা। কিন্তু এটা ছাড়াও যে সফতার অনেক রাস্তা রয়েছে তা সম্পর্কে তারা ভাবে না। বরং সব কাজে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে সেই কাজটার সৌন্দর্য ও মান দুইটাই নষ্ট হয়ে যায়। তাই সফলতার জন্য সব কাজে তাড়াহুড়ো না করে আপনার হৃদযয়ের কথা শুনুন, হৃদয় দিয়েসব কাজ করুন।
সময় ব্যবস্থাপনা শেখার এবং অনুশীলন করার প্রধান উদ্দেশ্য হলো আপনার জীবনের সামগ্রিক মানোন্নয়ন করা। আপনার জীবনে বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে সুখ ও সমৃদ্ধির পরিমাণ বৃদ্ধি করাই হলো সময় ব্যবস্থাপনার মূল লক্ষ্য।
ব্রায়ান ট্রেসি একজন কানাডিয়ান-আমেরিকান বক্তা এবং আত্মোন্নয়নমূলক রচনা লেখক। তিনি 'ব্রায়ান ট্রেসি ইন্টারন্যাশনাল' নামক সংস্থার চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী। এই সংস্থার মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণ ও বিকাশে সহযোগিতা এবং সার্বিক উন্নয়নে কাউন্সেলিং সেবা প্রদান করা। ব্রায়ান ট্রেসি নেতৃত্ব, ব্যক্তিত্ব, আত্মসম্মান, লক্ষ্য, কৌশল, সৃজনশীলতা এবং সাফল্য- মনোবিজ্ঞানের এই শাখাগুলোর তাৎপর্য অনুধাবনের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করার কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। জনপ্রিয় এই বক্তার জন্ম কানাডার প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ডে, তারিখটা ১৯৪৪ সালের ৫ জানুয়ারি। পড়াশোনা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টা থেকে। ১৯৮৪ সালে কানাডার ভ্যানকুভারে তিনি 'ব্রায়ান ট্রেসি ইন্টারন্যাশনাল' প্রতিষ্ঠা করেন। তার ৪০ বছরের বেশি কর্মজীবনে তিনি প্রায় ১,০০০ এরও বেশি প্রতিষ্ঠানকে কাউন্সেলিং সেবা দিয়েছেন, এবং প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ মানুষের সামনে বক্তব্য রেখেছেন। কানাডা, আমেরিকার বাইরেও প্রায় ৭০টি দেশে তার প্রচারিত আলোচনা অনুষ্ঠানের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। ব্রায়ান ট্রেসি এর বই এবং তার আলোচনার ভিডিও ও অডিও ক্লিপ সারা বিশ্বের কর্পোরেট ও ব্যক্তিপর্যায়ের উদ্যোক্তা তরুণদের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তিনি বিশ্বব্যাপী প্রচারিত ও বিক্রিত ' সাইকোলজি অব এচিভমেন্ট'সহ প্রায় ৫০০টিরও বেশি অডিও ও ভিডিও প্রোগ্রাম তৈরি ও প্রযোজনা করেছেন, যা ২৮টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ব্রায়ান ট্রেসি এর বই সমগ্র হলো 'দ্য ২১ সাকসেস সিক্রেটস অব সেল্ফ মেইড মিলিওনিয়ারস', 'টাইম ম্যানেজমেন্ট', 'ইট দ্যাট ফ্রগ!', 'চেঞ্জ ইয়োর থিংকিং চেঞ্জ ইয়োর লাইফ', 'লিডারশিপ', 'কিস দ্যাট ফ্রগ', 'নো এক্সকিউজ : দ্য পাওয়ার অব সেল্ফ ডিসিপ্লিন' ইত্যাদি। ট্রেসির লেখা বইগুলো তার অনুপ্রেরণা জোগানো বক্তব্যগুলোর মতই আকর্ষণীয় ও শিক্ষণীয়। কর্পোরেট ম্যানেজমেন্টের জগতে আত্মোন্নয়নমূলক পন্থা বাতলে তরুণদের কাছে ব্রায়ান ট্রেসি এর বই সমূহ বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।