তালালদের অদ্ভুত ট্রেনটি ছুটছে। গত তেপান্ন বছর ধরে কেবলই ছুটছে। ট্রেনের একটা নামও আছে। বি-১৯৭১।
বি-১৯৭১ এর যাত্রীরা ভুলোমনা। সবকিছু ভুলে বসে থাকে। সওয়ারীদের মত ট্রেনও বিস্মৃতিপরায়ণ। দিক ভুলে যায়। যেখানে সেখানে হারিয়ে যায়। যেদিকে যাওয়ার কথা, সেদিকে না গিয়ে পথ ভুলে চলে যায় অন্য কোথাও। অন্য কোনো জায়গায়। তখন ট্রেনের চালকরা নেমে গন্তব্য ঠিক করে নেন। তাদের গন্তব্য? দখিনের এক জায়গা। যাকে সবাই স্বর্গরাজ্য বলে ডাকে। যেখানে বাহারী রংয়ের মাছ সাঁতরে বেড়ায়। যেখানে অনন্ত সুখ, অনাবিল আনন্দ। পৃথিবী জুড়ে যে আকস্মিক মড়ক নেমে এসেছে, যার জন্য একদল মানুষ বাধ্য হয়ে ট্রেনের যাত্রী হয়েছে, তার ছোঁয়া এখনো স্বর্গরাজ্যে লাগেনি। স্বর্গরাজ্য এখনো মড়ক-মুক্ত।
কিন্তু অর্ধ শতক হয়ে গেলেও স্বর্গরাজ্যে আর পৌছানো যাচ্ছে না। ট্রেনের প্রশাসন বদল হয়। ট্রেনের হর্তাকর্তা বদল হয়। বদল হয় ট্রেনের দিক। উত্তর থেকে দক্ষিণ। পূর্ব থেকে পশ্চিম। কিন্তু স্বর্গরাজ্য তবু রয়ে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবু ট্রেন বারবার হারিয়ে যায়...
তবে কি ইচ্ছে করেই ট্রেন হারিয়ে যাচ্ছে? বারবার দিক বদল করেও কেন গন্তব্যে পৌছানো যাচ্ছে না? সমস্যা তবে কোথায়?
জাহিদ হোসেনের জন্ম সিলেটে, বেড়ে উঠা ঢাকায়। পড়াশোনা করেছেন নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। পেশায় ব্যাংকার হলেও বইপড়ার প্রতি অসম্ভব ঝেঁাক থেকেই লেখালেখিতে আগ্রহ। শুরু অনুবাদ দিয়ে। পরপর দু’টি অনুবাদ প্রকাশিত হয় তার। অ্যাম্বার রুম ও ম্যাক্সিমাম রাইডঃ দ্য অ্যাঞ্জেল এক্সপেরিমেন্ট। তারপর তিনি প্রবেশ করেন মৌলিক লেখালেখির জগতে। মৌলিক থ্রিলার হিসেবে তার প্রথম প্রয়াস ঈশ্বরের মুখোশ যা ২০১৫ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছিল। তারপর একে একে বের হয় ফিনিক্স, কাদ্যুসেয়াস, একজোড়া চোখ খেঁাজে আরেকজোড়া চোখকে, দুধ চা খেয়ে তোকে গুলি করে দেব, গিলগামেশ, ক্সনঋর্ত ও ইথাকা। শুধু উপন্যাস নয়, সম্প্রতি পরশুরামের কঠোর কুঠার নামে একটি গল্পগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তার। তার প্রকাশিত বই ওপার বাংলাতেও ব্যাপক সমাদৃত ও প্রশংসিত। কলকাতার অভিযান পাবলিশার্স ও বুকিকার্ট থেকে ইতিমধ্যে তার কয়েকটি বইয়ের ভারতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়ে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।