প্রথমবার যখন পাহাড় দেখতে গেলাম তখন খুব জেদ চাপলো মনে মনে। যে করেই হোক, আকাশের ওই কাছে একবার যেতে হবে। সাহস সঞ্চার করে পাহাড়ে যখন উঠলাম তখন রীতিমতো ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত। হঠাৎ অল্প নীল হওয়া আকাশ টা মেঘে ছেয়ে গেল। একখন্ড মেঘ উড়ে উড়ে যাচ্ছে। কী সুন্দর সেই দৃশ্য! এতো সুন্দর আকাশ এর আগে জীবনে দেখিনি। মনে মনে ভেবে রাখলাম এই দিন টা আমি কক্ষনো ভুলব না। এই দিন টাকে সেলিব্রেট করব আকাশ দেখার দিন হিসেবে।
আশ্চর্য ব্যাপার হলো ঘটা করে আকাশ দেখার দিন আমার জীবনে এলো না। মেডিক্যাল ক্যাম্পে একবার কক্সবাজার গেলাম। যেখানে থাকতাম সেখানের ঘরটা ছিলো দক্ষিণমুখী। দখিণের জানালা থেকে আকাশ টা'কে খুব কাছে মনে হয়। মনে হয় আরেকটু উপরে উঠলেই ছুঁয়ে দেয়া যাবে। রোজ সকালে ঘুম ঘুম চোখে আকাশ দেখি। কী যে ভালো লাগে! একদিন জানালা খুলে দেখি আকাশে একখন্ড মেঘ। উড়ে উড়ে যাচ্ছে। আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলাম। হঠাৎ যেন ভেজা মেঘ আমাকে এসে ছুঁয়ে দিয়ে গেল। প্রথমে ভাবলাম ভ্রম। পরে দেখি না আমার চোখের পাতা, ভ্রু, ভেজা। খানিক বাদে আবারও শরীরে কুয়াশার মতো কিছু ছুয়ে গেল। তখন শীতকাল ছিলো না। আমি অনুভব করলাম যে সত্যিই মেঘ ছুয়ে গেছে। অদ্ভুত ভালোলাগায় চোখে পানি এসে গেল। এরপর থেকে রোজ সকালে মেঘের অপেক্ষায় থাকি। তুমি হলে আমার সেই মেঘ। সব দ্বিধা দ্বন্দ কাটিয়ে একটা সত্যি কথা বলছি। আমি তোমাকে সেদিনের সেই ভেজা মেঘের মতো ভালোবাসি।
সাবিকুন নাহার নিপা পড়াশোনা করেছেন ব্যবস্থাপনা বিভাগে। লেখালেখির শুরু নীল সাদার জগতে। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা চারটি। উপকথা থেকে পূর্বে প্রকাশিত বইগুলো হলো শ্রাবণের মেঘ বৃষ্টি আর বাড়ির নাম বৃষ্টিলেখা। আর অন্যধারা থেকে প্রকাশিত উপন্যাস একদিন প্রতিদিন।