মানবতাবাদের বৈশ্বিক চাহিদার সাড়া পূরণে American Humanist Association ১৯৩৩ সালে Humanist Manifesto প্রকাশ করে যাতে স্বাক্ষর করেন নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী, দার্শনিক, কবি, লেখকসহ অনেকে। এটি ২০০৩ সালে মানবতাবাদের ৬টি মূলনীতি বিবৃত করে। অন্যদিকে, ১৯৫২ সালে আমস্টারডামে Humanist International প্রতিষ্ঠিত হয় যা ২০২২ সালে আধুনিক মানবতাবাদের ৪টি মূলনীতি বিবৃত করে।
কেবল কয়েকটি মূলনীতি দিয়ে বিশ্বজগত ও মানুষের জীবনকে বিজ্ঞান ও মানবতার নিরিখে ব্যাখ্যা এবং অনুধাবন সম্ভব নয় বিধায় মানবধর্মের একটি পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ’ রচনা ও প্রকাশের প্রয়াস তাই দীর্ঘ দিনের।
শুধু সাধারণ মানুষই নন, অনেক শিক্ষিতজন এবং পণ্ডিত ব্যক্তি বিজ্ঞানকে কিছু আবিষ্কার-উদ্ভাবন বা প্রযুক্তিপণ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ ভাবেন- যা যৌক্তিক নয়। দুই দশকে রচিত বিজ্ঞানভিত্তিক এবং মানবতাকেন্দ্রিক পূর্ণাঙ্গ মানবধর্মগ্রন্থ’ ‘উৎপত্তি’-তে তাই বিশ্বজগত, প্রথম জীব, মানুষ, ভাষা- এসবের উৎপত্তির বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বইটিতে আরও রয়েছে মানুষের সার্বিক জীবন পরিচালনার বিজ্ঞানভিত্তিক এবং মানবিক নিয়ম-নীতি, যেমন- পরিণয়, বিচ্ছেদ, উত্তরাধিকারসহ অন্যান্য জীবনঘনিষ্ঠ বিষয়।
বিজ্ঞানভিত্তিক এবং মানবতাকেন্দ্রিক মানবধর্মগ্রন্থ’ ‘উৎপত্তি’-তে বিজ্ঞান ও মানবতার দর্শনকে ‘মৌলিক নীতি’, ‘আদর্শ’, ‘মানবতাবোধ’ এবং ‘যৌক্তিক বিশ্বাস’- এই চার স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত করে পাঁচ পর্যায়ের ‘বৈজ্ঞানিক-মানবতাবাদী পদ্ধতি’-র মাধ্যমে মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জীবনের সমস্যা সমাধানে প্রয়োগ করা হয়েছে।
বইটির ইংরেজি ভাষায় প্রকাশের জন্য অনুবাদের কাজ চলমান রয়েছে।
Title
বিজ্ঞানভিত্তিক এবং মানবতাকেন্দ্রিক মানবধর্মগ্রন্থ’ ‘উৎপত্তি’
ড. অপূর্ব অনির্বাণ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। প্রিয় বিষয় হলো বংশগতিবিজ্ঞান (Genetics) এবং বিবর্তনবিজ্ঞান (Evolution)। উচ্চতর গবেষণা (PhD) করেন বংশগতিবিজ্ঞান, জিনবিজ্ঞান (Genomics) এবং বিবর্তনবিজ্ঞান নিয়ে কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি, অস্ট্রেলিয়া থেকে। বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রায় দেড় দশকের শিক্ষকতা শেষে লেখক বর্তমানে অস্ট্রেলিয়াবাসী। লেখকের মূল প্রেরণা তাঁর পিতা (সুনামগঞ্জে যিনি ‘মানিক স্যার’ নামে খ্যাত) যিনি বিজ্ঞানভিত্তিক এবং শোষণমুক্ত সমাজের লক্ষ্যে গণমুখী শিক্ষাদান এবং গণরাজনীতি করেছেন বিংশ শতাব্দীর আশি এবং নব্বইয়ের দশকে। পিতা ছিলেন নাগরিক অধিকার আন্দোলন আর কৃষক-শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আদায়ের অকুতোভয় সফল নেতা। পিতার গণমুখী জীবন ছিল এমপি, মন্ত্রী হবার লোভমুক্ত এক নির্মোহ জীবনের প্রেরণা। লেখক বিজ্ঞানভিত্তিক এবং মানবতাকেন্দ্রিক মানবধর্মগ্রন্থ ‘উৎপত্তি’ প্রকাশের পূর্বে কাব্যগ্রন্থ, সায়েন্স ফিকশন এবং উপন্যাস মিলিয়ে মোট দশটি গ্রন্থ’ প্রকাশ করেন। কদাচিৎ জাতীয় পত্রিকায় শিক্ষা, রাজনীতি এবং অন্যান্য বিষয়ে উপসম্পাদকীয়/কলাম লেখেন।