ফ্ল্যাপে লিখা কিছু কথা আবহমান বাংলার লোকয়ত ধারার ঐতিহ্য আর জনজীবনের চালচিত্র যার সৃষ্টিকর্মে বাঙময় তিনি বাউল কবি, জনগনের চারণ শাহ আবদুল করিম। গ্রাম বাংলার প্রান্তরে প্রান্তরে তাঁর উদাত্ত কন্ঠের সুর মাধুর্য ছড়িয়ে আছে। লোকচক্ষুর আড়ালে যেখানে অন্ধকার জমেছে , সেই জনপদে এই বাউল কবি ঘুম জাগানিয়া গান গেয়ে ভেদ করেন স্তব্ধতা , শানিত করেন জনগনের সংগ্রামশীল চেতনাকে। গণজাগরনের এই গণশিল্পী এক্ষেত্রে পালন করেছেন পথিকৃৎ-এর ভূমিকা। এদেশের সংকটে -সংগ্রামে তাঁর গান ,তাঁর কবিতা তাই অনুপ্রেরণার উৎস। জন্মাবধি মাটির প্রতি তাঁর প্রাণের টান : তিনি মিশে আছেন গ্রামবাংলার জনতার ভীড়ে ,মেলায় উৎসবে । জনগণের এই চারণ কবি বিশ্বাস করেন একদিন এদেশের গরিব জনতা বিজয় ছিনিয়ে আনবেই;তখন উৎসবে -উৎসবে মুখরিত হবে বাংলার অবারিত প্রান্তর ।এই গন্থে শাহ আবদুল করিমের প্রকাশিত গান এবং সেই সঙ্গে তাঁর জীবন, দর্শন ও সংগীত সম্পর্কে বিভিন্ন লেখকের লেখা স্থান পেয়েছে। সব মিলিয়ে ‘শাহ আবদুল করিম সংবর্ধন-গ্রন্থ’ শাহ আবদুল করিমকে জানতে ও বাংলার বাউলচর্চার স্বরুপ বুঝতে সহায়ক হবে। ভূমিকা ‘কিশোর ছড়া কবিতার রুপ-অরুপ’ নামের গ্রন্থটি প্রতিশ্রুতিশীল তরুন গবেষক হাসান রাউফুনের শ্রমসাধ্য অনুসন্ধ্যানের পরিনত দলিল। বাংলাদেশের কবিতা নিয়ে গবেষণা -বিশ্রেষণ-সমালোচনা হলেও ছড়া বা কিশোর কবিতার ক্ষেত্রে তার ঘাটতি পরিলক্ষিত। আমাদের বিশাল শিশুসাহিত্য নিয়েই তেমন কোন গবেষণা হয়নি। শিশু সাহিত্যের অন্তর্গত ছড়া-বিশেষের বিষয়-প্রকরণ গবেষণা কম হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমাদের সাহিত্য নিয়ে যাঁরা বিভিন্ন সময়ে গবেষণা করেছেন, অন্তত বিশ্লেষণাত্নক নিবন্ধ রচনা করেছেন তাঁদের মধ্যে আতোয়ার রহমানের নামই সর্বাঙ্গে উল্লেখ করতে হয় । তিনি একাধিক গন্থে ও প্রবন্ধে ছড়াসাহিত্য সমালোচনা প্রকাশ করেছেন।এছাড়া হায়াৎ মামুদ,প্রনব চৌধুরী,লুৎফর রহমান রিটন, শাহাবুদ্দীন নাগরী , ফারুক নওয়াজ,সুজন বড়ুয়া,আমীরুল ইসলাম, ইলতুত আলীদ, আহমদ মাযহার,রাশেদ রউফ,সন্দীপন মল্লিক, তপন বাগচী,রণদীপপম বসু, জুলফিকার শাহাদৎ প্রমুখ লেখক ছড়া সাহিত্য নিয়ে নানা মুখী আলোচনা করেছেন। শিশু সাহিত্য নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে গবেষণা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড.মনিরা কায়েস এবং বাংলা একাডেমির ফেলোশিপপ্রাপ্ত সাইফুল ইসলাম। বর্তমানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশে ছড়া সাহিত্য নিয়ে এম.ফিল পর্যায়ে গবেষণা করেছেন উম্মে সালমা অনন্যা। এঁদের গবেষণাকর্ম গ্রন্থিত হলে বাংলাদেশের ছড়াসাহিত্যের উজ্জলতা সম্পর্কে ধারণা নেয়া যেত। ছড়া সাহিত্য নিয়ে গবেষণার এই সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছেন তরুর গবেষক হাসান রাউফুন। একজন ছড়াসাধক হিসাবে এই গবেষকের আন্তরিক সদিচ্ছা এবং অক্লান্ত পরিশ্রমকে আমরা স্বাগত জানাই।
সূচিপত্র * ছড়া কবিতার বাক্য গঠন * ছড়া কবিতার প্রাণ * ছড়া কবিতার শব্দ ব্যবহার ও বিপর্যয় * ছড়া কবিতার মিল গরমিল * ছড়া কবিতায় যতির ব্যবহার * প্রয়োজনীয় সংযোজন (শব্দ অভিধান) * সমলোচিত কবিগণ (৬৫০/৯০০/১৯৭০)
ফোকলোর-গবেষক, সংগ্রাহক। জন্ম: সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার সুখলাইন গ্রামে, ১২ সেপ্টেম্বর ১৯৮২। পিতা বারীন্দ্রকুমার দাশ, মা যমুনা বালা চৌধুরী। চার ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। প্রায় আড়াই দশক ধরে সিলেট শহরের বাসিন্দা। শিক্ষা: স্নাতক (সম্মান)। পেশা: সাংবাদিকতা। তবে প্রাকৃতজনদের আচার, কৃষ্টি, সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করে দেশ-বিদেশে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন। বাংলার ফোকলোর-গবেষণা যাঁদের হাত ধরে সমৃদ্ধ ও প্রাণবান হয়েছে, এঁদের মধ্যে সুমনকুমার দাশ অগ্রগণ্য। তিনি নীরবে-নিভৃতে বাংলার নিজস্ব দর্শনের ধারা বয়ে নিয়ে চলেছেন। তাঁর আগ্রহ ও চর্চার প্রধান বিষয় ফোকলোরের লোকজীবন, জনপদ, লোকসংগীত ও লোকশিল্পী। গ্রামাঞ্চল ঘুরে প্রাচীন ও বিলুপ্তপ্রায় গান সংগ্রহ করেন। তিনি ঐতিহ্যবাহী বিচিত্র সব গানের ধারার আসরে সরেজমিনে গিয়েছেন, মিশেছেন লোকশিল্পীদের সঙ্গে, দেখেছেন লোকজীবন। তাঁর ব্যক্তিগত সংগ্রহে নানা ধারা-উপধারার অন্তত ৭০ হাজার লোকগান, লোকনাট্য ও পাঁচালি রয়েছে। বেদে-বাইদ্যানির গান, ভিক্ষুক-সংগীত, ধামাইলগান, জারি-মার্সিয়া, পল্লিগীতি, মাজার-সংগীত, ঢপযাত্রা প্রভৃতি বিষয়ে ক্ষেত্রসমীক্ষার মাধ্যমে সমৃদ্ধ করেছেন লোকগবেষণার আঙিনাকে।