অদৃশ্য এক বিমানের কথা ভুলতে পারছে না কিশোর। অদৃশ্য মানে একটা ভৌতিক বিমান। কল্পনায় বার বার ভেসে উঠছে বিমানটি। আজব সেই বিমানটি রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে কিশোরের।
গল্পনার মাঝে ভেসে আসছে ভৌতিক বিমানের চিত্র। একটা বইয়ের পাতায় মুখ গুজে বসে আছে কিশোর! ভুলেই গিয়েছিল ওর হাতে একটা বই।
পরিবারে সাথে এয়ারপোর্টে এসেছে সবাই। রাশেদ চাচা ও মেরী চাচী ওর সাথে আছে। কিন্তু কিশোরের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে ও কোন একটা বিষয়ে ভীষণ চিন্তিত। গল্পনার মাঝে ঘুরে বেড়ানো ভৌতিক বিমান ওর মাথা খেয়েছে।
কিশোর! এয়ারপোর্টে তোর কী অসুবিধা? কেমন যেন আনমনা মনে হচ্ছে। হেসে বলল চাচা রাশেদ চাচা।
সব এয়ারপোর্টে তো না, বললাম। শুধু রকি বীচ এয়ারপোর্ট।
--
জ্ঞান হারিয়ে ফেলার দশা আমার। হঠাৎই দরজার বাইরে চাচার কণ্ঠ শুনলাম।
কিশোর! কিশোর! নবটা ছেড়ে দে! চেঁচিয়ে বলল।
আমি তো ধরে রাখিনি, দুর্বল কণ্ঠে জবাব দিলাম।
দরজাটা খোলার জন্যে টানছি, কিন্তু খুলছে না! চাচা চেঁচাল।
আমার ঘরের দরজা বাইরে থেকে টানলে কিংবা ভিতর থেকে ঠেললে খোলে।
চোখ মেলোম, কপাল থেকে ঝরে পড়ল ঘাম। পেয়েছি! চাচা, দরজার কাছ থেকে সরে যাও! চেঁচালাম।
--
ঘটনার সূত্রপাত এক বিড়ালকে ঘিরে। লাল-কালো ডোরাকাটা এক বিড়াল। এই নিয়েই ওদের ব্যস্ততা কিন্তু কেন। সেটা না হয় পরে জানা যাবে। আগে দেখে নিই ওরা কী করছে। কাজে ব্যস্ত কিশোর পাশা আর মুসা আমান, এই সময় বড় বড় দুটো কাঠের গামলা নিয়ে তিন গোয়েন্দার ব্যক্তিগত ওয়ার্কশপে ঢুকলেন রাশেদ পাশা। ছেলেদের সামনে এনে মাটিতে রাখলেন ওগুলো। কোমরে হাত দিয়ে বললেন, কাজ নিয়ে এলাম। রঙ করতে হবে। লাল, নীল আর সাদা ডোরা।
ওই গামলায় রঙ? অবাক হলো মুসা।
এখন? হাতের স্ক্রু-ড্রাইভার নেড়ে বললো কিশোর।
তিন গোয়েন্দার জন্য একটা কি-জানি-যন্ত্র বানাচ্ছে কিশোর, ওয়ার্কবেঞ্চে রাখা ইলেকট্রনিক যন্ত্রগুলো দেখিয়ে বললো মুসা।
নতুন আবিষ্কার? আগ্রহী হলেন রাশেদ পাশা, ক্ষণিকের জন্যে ভুলে গেলেন গামলার কথা।
কি জানি? হাত নাড়লো মুসা। আমাকে কিছু বলে নাকি? আমি তো শুধু ওর ফাইফরমাশ খাটছি।
পরে করলে হয় না, চাচা? কিশোর জিজ্ঞেস করলো।
না, আজ রাতেই দরকার। ঠিক আছে, তোমরা না পারলে বোরিস আর রোভারকে গিয়ে বলি, মিটিমিটি হাসি রাশেদ পাশার চোখের তারায়। কিন্তু তাহলে গামলাগুলো ডেলিভারিও দেবে ওরাই।