ভূমিকা
দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তায় এবং একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠনে বীমার বহুমূখী ভূমিকা রয়েছে। বীমা খাতের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে বিপণন ব্যবস্থা বহুমুখীকরণের লক্ষ্যে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে কর্পোরেট এজেন্টে হিসেবে ব্যাংকের মাধ্যমে বীমা পণ্য বিপণনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ব্যাংকের মাধ্যমে বীমা বিক্রয়ের এক অভিনব পদ্ধতির নাম ব্যাংকাসুরেন্স। যার মাধ্যমে ব্যাংক ও বীমাকারীর যৌথ প্রচষ্টায় গ্রাহকগণ দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য বীমা সেবা গ্রহণ করতে পারবে। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি, স্পেন, নেদারল্যান্ডসের মতো দেশের ব্যাংকগুলো নিজস্ব পণ্যের পাশাপাশি বীমাপণ্যও বিক্রি করে এবং বাংলাদেশেও এর বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।
১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি বীমা প্রশিক্ষণ ইন্সস্টিটিউট ‘বাংলাদেশ ইনসিওরেন্স একাডেমি’ ১৩ আগষ্ট, ২০১৪ সালে ব্যাংকাসুরেন্স বিষয়ক একটি সেমিনারের আয়োজন করে। সেখানে বীমা শিল্প সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞব্যক্তিগণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যাংকাসুরেন্স কার্যক্রমের বিষয়ে আলোকপাত করেন। জানার তীব্র আকাঙ্ক্ষা পূরণে আমার নিজস্ব অর্থায়ন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে উক্তি সেমিনারে অংশগ্রহণ করি। এরপর, এ বিষয়ে জানার প্রচেষ্টাকে অব্যাহত রেখে অপেক্ষা করতে থাকি কখন বাংলাদেশে ব্যাংকাসুরেন্স চালু হবে। দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকাসুরেন্স প্রজ্ঞাপন জারি পর “ব্যাংকাসুরেন্স গাইডলাইন্স (ব্যাংকের জন্য প্রযোজ্য)” প্রকাশ করে। একই সময়ে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) কর্তৃক “কর্পোরেট এজেন্ট (ব্যাংকাসুরেন্স) নির্দেশিকা, ২০২৩” প্রকাশিত হয়।
এই বইটি এমনভাবে লেখা হয়েছে যে, ব্যাংক ও ইন্স্যুরেন্সে সম্পৃক্ত কর্মী-কর্মকর্তাগণ উপকৃত হবার পাশাপাশি যারা ব্যাংকাসুরেন্সে ক্যারিয়ার গড়তে চান তাদের বিশেষ সহায়ক হবে। এছাড়াও বইতে বিশেষ কিছু বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে, যাতে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ব্যাংক ও বীমা কর্মকর্তা উভয়ে নিজ নিজ অবস্থানে পেশাগত সাফল্য দেখাতে পারে।
বাংলা ভাষায় প্রথম ব্যাংকাসুরেন্স বিষষক “বাংলাদেশে ব্যাংকাসুরেন্স” বইটি লেখতে গিয়ে অসংখ্য দেশ-বিদেশের পত্রিকা, জার্নাল ও গবেষণা পত্রের সহযোগিতা নিয়েছি। এছাড়াও বীমা শিল্পে বহু বিজ্ঞজনদের পরামর্শ, সাক্ষাৎকার ও একান্ত আলোচনা হতে অর্জিত জ্ঞানের সারমর্ম সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করেছি। আমি সেই সকল গুণীজনদের প্রতি ঋণ ও কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি।
পরিশেষে, অনিচ্ছাকৃত ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে গঠনমূলক পরামর্শ প্রদানের আহ্বান করছি, যাতে পরবর্তী প্রকাশনায় বইটি আরও সমৃদ্ধ করতে পারি। সকলের দোয়া, সহযোগিতা ও ভালোবাসা প্রত্যাশায়...
“বাংলাদেশে ব্যাংকাসুরেন্স” বইয়ের সূচীপত্র:
১। ব্যাংক
২। বীমা
৩। জীবন বীমা
৪। সাধারণ বীমা
৫। ব্যাংকাসুরেন্স কী?
৬। ব্যাংকাসুরেন্সের ইতিহাস
৭। বহিঃ বিশ্বে ব্যাংকাসুরেন্স
৮। বীমা শিল্পের টেকসই উন্নয়নে ব্যাংকাসুরেন্স
৯। ব্যাংকাসুরেন্স নীতিমালার উদ্দেশ্য
১০। ব্যাংকের জন্য ব্যাংকাসুরেন্স সুবিধা
১১। ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য ব্যাংকাসুরেন্স সুবিধা
১২। বীমা প্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যাংকাসুরেন্স সুবিধা
১৩। বীমা বিক্রয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার প্রতিবন্ধকতা
১৪। বীমা পেশাজীবীদের জন্য ব্যাংকাসুরেন্স কী সমস্যা নাকি সম্ভাবনা ?
১৫। বীমা শিল্পের সীমাহীন সম্ভাবনা
১৬। ব্যাংকাসুরেন্সের সুবিধা
১৭। ব্যাংকাসুরেন্সের চ্যালেঞ্জ
১৮। বাংলাদেশে ব্যাংকাসুরেন্সের সম্ভাবনা
১৯। ব্যাংকাসুরেন্স প্রবর্তনে বিআরপিডি সার্কুলার লেটার নং-৭৪
২০। ব্যাংকাসুরেন্স প্রবর্তনে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন
২১। কর্পোরেট এজেন্টের যোগ্যতা
২২। ব্যাংকাসুরেন্স ব্যবসায় ব্যাংকের যোগ্যতার মানদন্ড
২৩। ব্যাংকাসুরেন্স চুক্তি, সংশোধন, নবায়ন এবং বাতিল
২৪। ব্যাংকাসুরেন্স কার্যক্রম পরিচালনার জন্য লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও বাতিল
২৫। ব্যাংকাসুরেন্সে ব্যাংকের জন্য আচরণবিধি
২৬। চিফ ব্যাংকান্সুরেন্স অফিসারের যোগ্যতা
২৭। চিফ ব্যাংকাসুরেন্স অফিসারের আচরণবিধি
২৮। ব্যাংকাসুরেন্স ম্যানেজার/অফিসারের যোগ্যতা
২৯। ব্যাংকাসুরেন্স ম্যানেজার/অফিসারের আচরণবিধি
৩০। কারা ব্যাংকাসুরেন্সের গ্রাহক হতে পারবে
৩১। ব্যাংকাসুরেন্সের আওতাভুক্ত বীমা পণ্য
৩২। ব্যাংকাসুরেন্সের বীমা পরিকল্প প্রণয়নে নির্দেশনা
৩৩। প্রতিষ্ঠানে গ্রুপ বীমা করা থাকলে লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রয়োজন আছে কী?
৩৪। ব্যাংকাসুরেন্সে বীমা বিক্রয় পদ্ধতি
৩৫। কর্পোরেট এজেন্ট যেসকল গ্রাহকের নিকট বীমা বিক্রয় করতে পারবে না
৩৬। ব্যাংকাসুরেন্সে ভোক্তার সুরক্ষা
৩৭। কখন জীবন বীমা পলিসি শুরু থেকেই বাতিল বলে গণ্য হয়
৩৮। কর্পোরেট এজেন্ট (ব্যাংকাসুরেন্স) এর কমিশন
৩৯। বীমা বিপণন ইশতেহার ও বিক্রয় সামগ্রী
৪০। ব্যাংকাসুরেন্স অবলিখন প্রক্রিয়া
৪১। ব্যাংকাসুরেন্স চুক্তির বিষয়বস্তু
৪২। বীমাকারী ও কর্পোরেট এজেন্টের মধ্যে ব্যাংকাসুরেন্স চুক্তি
৪৩। বীমা দাবি প্রক্রিয়াকরণ
৪৪। লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি কখন গ্রাহকের মৃত্যু দাবি প্রত্যাখ্যান করতে পারে
৪৫। লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি কখন বীমা পলিসির টাকা বাজেয়াপ্ত করতে পারে
৪৬। বীমা দাবি নির্দিষ্ট সময়ে পরিশোধ না করলে শতকরা কত পারসেন্ট সুদসহ দাবি পরিশোধ করবে?
৪৭। কর্পোরেট এজেন্টের (ব্যাংকাসুরেন্স) পালনীয় বিষয়াবলী
৪৮। বীমা গ্রাহক বীমা দাবি না পেলে কোথায় অভিযোগ করবেন?
৪৯। বীমা গ্রাহক কী কী বিষয়ের অভিযোগ দায়ের করতে পারেন?
৫০। বীমা গ্রাহকের হয়রানি কমাতে প্রয়োজন ইন্সুরটেক
৫১। ব্যাংকাসুরেন্স দাবি সংক্রান্ত অভিযাগ নিস্পত্তি
৫২। কেন্দ্রীয় ব্যাংক
৫৩। রাষ্ট্রয়াত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক
৫৪। বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক
৫৫। বেসরকারি বাণিজ্যিক ইসলামী ব্যাংক
৫৬। বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক
৫৭। বিশেষায়িত ব্যাংক
৫৮। অ-তালিকাভুক্ত ব্যাংক
৫৯। রাষ্ট্রয়াত্ত লাইফ ইন্স্যুরেন্স
৬০। বিদেশি লাইফ ইন্স্যুরেন্স
৬১। দেশি ও বিদেশি যৌথ মালিকানাধীন লাইফ ইন্স্যুরেন্স
৬২। লাইফ ইন্স্যুরেন্স
৬৩। ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স
৬৪। রাষ্ট্রয়াত্ত নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স
৬৫। নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স
৬৬। ইসলামী নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স
৬৭। ব্যাংকাসুরেন্সের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বীমা আইন, ২০১০ এর ধারাসমূহ:
(১) বীমা আইন, ২০১০ এর ১৬ ধারা
লাইফ ইন্স্যুরেন্স এর জন্য প্রিমিয়াম হারের যথার্থতা
(২) বীমা আইন, ২০১০ এর ১৭ ধারা
নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স এর জন্য প্রিমিয়াম হার নির্ধারণ
(৩) বীমা আইন, ২০১০ এর ২৭ ধারা
হিসাব স্থিতিপত্র
(৪) বীমা আইন ২০১০ এর ৫৭ ধারা
বীমা পলিসি গ্রাহক কর্তৃক মনোনয়ন
(৫) বীমা আইন, ২০১০ এর ৫৮ ধারা
ব্যবসা সংগ্রহের উদ্দেশ্যে কমিশন কিংবা অন্য কোন প্রকার পারিশ্রমিক পরিশোধে বিধিনিষেধ
(৬) বীমা আইন, ২০১০ এর ৫৯ ধারা
কমিশন ব্যয়ের সীমা
(৭) বীমা আইন ২০১০ এর ৬৮ ধারা
দুই বৎসর উত্তর পলিসি অসত্য তথ্য প্রদানের কারণে প্রশ্নসাপেক্ষ না করা
(৮) বীমা আইন, ২০১০ এর ৭২ ধারা
বিলম্বে দাবী পরিশোধের সুদ
(৯) বীমা আইন ২০১০ এর ৮৮ ধারা
প্রত্যর্পণ মূল্য অর্জন
(১০) বীমা আইন ২০১০ এর ৯২ ধারা
বাজেয়াপ্তকরণ
(১১) বীমা আইন, ২০১০ এর ১২৪ ধারা
বীমা এজেন্ট নিয়োগ
৬৮। ব্যাংকাসুরেন্সের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ব্যাংক-কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ধারাসমূহ
(১) ব্যাংক-কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ৭ ধারা
ব্যাংক-কোম্পানীর কার্যাবলী
(২) ব্যাংক-কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ২৬ ধারা
ঋণ ও অগ্রিম প্রদানের উপর বাধা-নিষেধ
(৩) ব্যাংক-কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারা
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ দানের ক্ষমতা
৬৯। ব্যাংকাসুরেন্সের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর ধারাসমূহ
(১) তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর ২ ধারা
সংজ্ঞা
৭০। বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ৯৯ ধারা
বাধ্যতামূলক গ্রুপ বীমা চালুকরণ
৭১। বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ এর ৯৮ বিধি
৭২| তথ্যসূত্র