দরজায় টোকাটা এবার দ্বিগুণ হলো, সাড়াহীন তবুও দরজার ওপাশ। বিরক্ত হলেন না তিনি, নাম ধরে হাঁক দেয় সজোরে, 'লুৎফুর, এই লুৎফর। লুৎফুর...', কপাটের ওপারে অবশেষে কর্ণপাত হয়, 'জি স্যার জি স্যার উঠতাছি।' সটান দুয়ার ভেদ করে বেরিয়ে আসে হাবিলদার লুৎফুর রহমান। উদোম বুক, পরনে কুঁচকানো লুঙ্গি। চোখজুড়ে এক জাহান ঘুম।
'আজান পড়েছে সেই কবে, আল্লাহ-খোদা নাই বুঝি? মুজিব কোথায় ওকে ডেকে তোলো। আজ একসাথে জামাতে নামাজ পড়ব।' এতক্ষণে পূর্ণ চোখে তাকায় লুৎফুর তেজস্বী কণ্ঠের দিকে। প্রভাতের এই মৃদু আলোয়ও প্রস্ফুটিত কপালে মৃদু ঘামের রেখা। তার বুঝতে বাকি রইল না, জগিং করে ফিরেছেন মাত্র। সদ্য কামানো চোয়াল। সরু গোঁফ। বুদ্ধিদীপ্ত জ্যোতি-উজ্জ্বল চোখজোড়া চেয়ে আছে তার দিকে। পরনের ট্রাউজার আর গেঞ্জিটা যেন বয়স অর্ধেকের কোটায় নিয়ে এসেছে। অথচ তিনি বাংলাদেশের 'চিফ অব আর্মি স্টাফ', একই সাথে উপ-সামরিক আইন প্রশাসক মেজর জিয়াউর রহমান। প্রথম দর্শনে যে কেউ পঁচিশ বছরের যুবা ঠাউরে ভুল করবে।