গ্রামে উড়ে এসে জুড়ে বসা জাফরউল্লাহ আলীকদম যে মানুষটা অহংকারী বিচার-শালিস করে বেড়ায়। যার কাছে পুরুষের দাম একটা নারীর থেকে হাজারগুণ বেশি। লোকটার চারমেয়ে এক ছেলে স্ত্রীও স্বামীর কথায় ওঠেন আর বসেন। তো লোকটা ছোট মেয়ের বিয়ে দিতে উঠে পড়ে লেগেছে কিন্তু মেয়ে শারমিন বিয়েতে রাজী না। লোকটা বেদম মারধোর করে মেয়েকে বিয়েতে রাজী করায়। বিয়ের জন্য বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তিন মেয়ে কিন্তু আলীকদম কারো কথা শোনে না। বড় মেয়ে আফিয়াকে একটু ভয় পায় কিন্তু তাকে নিজের কসম দিয়ে থামিয়ে দেয়। আফিয়া সিদ্ধান্ত নেয় কখনো এই পরিবারের সাথে আর যোগাযোগ রাখবে না। অন্তঃসত্ত¡া আফিয়ার ছিলো এক মেয়ে মুকুল আর স্বামী শাফায়াতকে নিয়ে কষ্টের সংসার। একদিন এই ছোট্ট মুকুল হলো হয়রানির স্বীকার, এক নরপিশাচের থাবার কবলে কিন্তু সেইবার সে নিজেকে বাঁচিয়ে নিয়েছিলো। তারপর তাদের ঘর আলো করে এলো ছেলে স্রোত। সংসারের টানাপোড়েন তাই সবাই গ্রামে পাড়ি জমালো।
শাফায়াত কাজের তাড়নায় অন্য দেশে ছুটলো এদিকে আফিয়ার উপর অত্যাচার জ্বালাতন নির্যাতন শুরু হলো শ্বাশুড়ি ননদেও, বাচ্চা দু’টোকেও কেউ ভালোবাসে না। এবার শাফায়াত বাড়ি ফিরলো কিন্তু বাড়ি ফিরে পেলো মৃত ছেলের লাশ তাও নিজের পরিবারের হাতে। মানসিক ট্রমায় পড়ে গেলো আফিয়া, মুকুল এবং শাফায়াত। আবার নতুন করে শুরু করলো কোল আলো করে এলো আরেক ছেলে। মুকুলের খাঁটনি বাড়লো পাক্কা গৃহিণী হয়ে উঠলো বদলে যেতে লাগলো আফিয়া। ছেলেকে আগলে রাখলেও সকল শখ পূরণ করলেও মেয়েকে দুই চোখে দেখতে পারতো না। মুকুল বড় হতে লাগলো, ছোট্ট মুকুল কিশোরী বয়স, আবেগ ধরে রাখা বড়ই কষ্টের, প্রেমে পড়লো এক কিশোরের। কিশোর রবি বিশ্বাসের ঘরে করলো চুরি বন্ধু-বান্ধব নিয়ে করলো ধর্ষণ। ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দিলো সব। লজ্জায় ঘৃণায় যখন সে মরতে চায়, ঠিক সেই সময় বাঁচার শক্তি জোগায় এক অচীন শুভাকাক্সক্ষী। হয়রানি হতে হয় নিজের স্কুল শিক্ষকের কাছে, বাসে। এভাবেই চলছিলো কিন্তু একদিন তরুণ নামক এক ছেলে এসে মনের জায়গার দাবীদার হতে চাইলো ঠাঁই দেওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে গেলো। স্বামীর অমানবিক নির্যাতন কিন্তু সেখানে লুকিয়ে আছে ভালোবাসা ও শ্বাশুড়ি ননদ দেবরের ছিলো চক্ষুশূল। পড়তে চাইলো ও কিন্তু দিল না, স্বামী শান্তনু সাপোর্ট করলো পড়ায়। শশুড় মারা গেলো বাড়ি ফাঁকা সুযোগ বুঝে দেবর সাইফ লোভে ভাবীর শরীর চাইলো সেখান থেকে বাঁচালো স্বামী শান্তনু কিন্তু ভীষণ মার খেতে হলো মুকুলকে। সেদিনের পর সাইফকে পুলিশ ধরলো ধর্ষণের অভিযোগে। ননদ দিবা বিয়ের আগেই প্রেগন্যান্ট হলো শান্তনু ভীষণ খেঁপলো। অন্তঃসত্ত¡া মুকুলকে রাগের বসে পেটে দিলো লাথি নষ্ট হলো ভ্রুণ।
সুখের সংসার মৃত্যুপুরীতে তৈরী হলো। বছর কয়েকপর শান্তনু ছেড়ে দিলো মুকুলকে কোথায় হারিয়ে গেলো খোঁজ পাওয়া যায়নি, বীজ রেখে গিয়েছিলো মুকুলের গর্ভে। মুকুলকে আগলে রাখলো গ্রামের সকলে উদ্যোগ নিলো অসহায় নারীদের নিয়ে ঠাঁই দিলো নিজের বাড়ি নানা শিল্পের কার্যক্রম করে সবাই। তৈরী হলো অনাথ আশ্রম। ছেলে ঋদ্ধকে তৈরী করলো নিজের আদর্শে।