মানুষ হয়ে জন্মানোর একটা ফান্ডামেন্টাল যাতনা আছে। এই যাতনার অনেক রূপ। তবে উৎস একটাই। সেটা হলো মানুষের বুদ্ধিমত্তা। মানুষ তার মননে এমন এক ক্ষুধা নিয়ে অস্তিত্বে প্রবেশ করে যে, এখানে জীবনভর সমস্ত উপাদান গিলেও কখনোই সে ক্ষুধা মেটে না। কারণ, রিয়্যালিটির উদাসীন আচরণ আর দুর্বোধ্য রহস্যের মোড়ে মানুষকে প্রতিবারই এক চূড়ান্ত মূর্খতায় পর্যবসিত হতে হয়। এবং এখানে যাতনার উৎপত্তিটা হয় তখনই, যখন আমরা বুঝতে পারি যে, একই সময়ে আমরা মূর্খ এবং বুদ্ধিমান দুটোই। বুদ্ধিমত্তার প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো আত্মদর্শন অথবা নিজের অস্তিত্ব নিয়ে রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে লিপ্ত হওয়ার ক্ষমতা। আর এই কাজে— সবসময় সবাই না হলেও— মনুষ্যমন খুবই পারদর্শী। তবে এই কাজে কে কত গভীরে লিপ্ত হবে— কে কত গভীরে বিকল্পহীন যাতনায় ডুব দেবে সেটা ঠিক করার ফ্রি উইল কারও আছে কি না নিশ্চিতভাবে তা নির্ণয় করা সম্ভব নয়। এবং আত্মদর্শনের চর্চায় আমরা আমাদের সকল ভঙ্গুর অঙ্গগুলোকে একেবারে কেটে ফেলে দিতে পারব কি না সে নিশ্চয়তাও দেওয়া সম্ভব নয়। যেটা নিশ্চিত সেটা হলো মানুষের সামগ্রিক বুদ্ধিমত্তা— যদিও তার বণ্টনে কোন সমতা নেই— এর গভীর তাড়নায় নিজেকে দেখা, অন্যকে দেখা ও জগৎকে দেখার এক আনন্দমিশ্রিত যাতনায় কিংবা যাতনামিশ্রিত আনন্দে মানুষকে মেতে উঠতে হয় মনোদর্শন তথা নিউরোদর্শনে।