মানব সভ্যতার ইতিহাসের এ এক ভয়াবহ অধ্যায়। কোভিড-১৯ নামক এক ভয়াবহ রোগে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় পুরো পৃথিবী। মানুষ আক্রান্ত হয়, মারা যায় হাজারে হাজারে। অসহায় হয়ে পড়ে পুরো বিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞান আর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।
লেখক পেশায় একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। মহামারির পুরো সময়টা তিনি একটা বিভাগীয় কোভিড ডেটিকেটেড হাসপাতালে দায়িত্বরত ছিলেন। রোগ, রোগী, রোগীর স্বজন, পরিবর্তিত সমাজ, বিষণ্ন পরিবেশ সবই দেখেছেন খুব কাছ থেকে। দেখেছেন ব্যবস্থাপনা, সমসাময়িক মানুষ, মানুষের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা, তাদের বাঁচামরা।
এ দুঃসময়ে লেখকের মনে-মস্তিস্কে জমা হয় অনেক গল্প। জীবন-মৃত্যুর গল্প, সুখ-দুঃখের গল্প, ভাইরাসের সাথে লড়াইয়ের সেসব জয়-পরাজয়ের গল্পগুলো সবই সাদামাটা। কিন্তু ভয়াবহ একটা সময়ের প্রেক্ষাপটে এ সাদামাটা গল্পগুলোই পাঠকের মনে ধরা দেয় ভিন্ন ব্যঞ্জনায়। সে সময়ের রাষ্ট্রীয় বিধিনিষেধ, সামাজিক কুসংস্কার, দেশের অর্থনীতি, মানুষের দুর্গতি-অবমৃষ্যকারীতা, পারিবারিক সম্পর্কের টানাপোড়েন ইত্যাদি বিষয় ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে সুনিপুণভাবে তোলে ধরা হয়েছে লেখার পরতে পরতে।
লেখকের ভাষ্যমতে ‘পৃথিবী নামক এই গ্রহে স্বাভাবিক জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন এক দুঃসময়ের সেইসব গল্পগুলো অনাগত ভবিষ্যতেও মানুষের স্মৃতিতে অমলিন থাকুক- এই সংকল্পেই আমার এই লেখালেখি। এতে কতটুকু সাহিত্য হয়েছে বা সাহিত্য রয়েছে, আমার জানা নেই।’
কিন্তু এ বই পাঠে পাঠক মাত্রই এ সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন যে, দুঃসময়ের গল্পগুলো স্মৃতিতে অমলিন রাখতে লেখক সফল হয়েছেন তো বটেই, সাহিত্য বিচারেও তিনি যথেষ্ট মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন।