লীলা মজুমদারের কলমে যে-কোনও | লেখাতেই ঝলসে ওঠে দুরন্ত কৌতুকের চকিত বিদ্যুৎ। এর উপর, তিনি যদি লেখেন রম্যরচনা, তাহলে সেই রচনার স্বাদ যে কতদূর রসালো এবং কী দারুণ মজাদার হয়ে উঠতে পারে, তার সঠিক পরিমাপ বোধহয় কল্পনাতেও কুলোবার নয়। অন্তত ‘খেরোর খাতা' পড়বার পর সে-কথাই মনে হবে। কল্পনাকেও তছনছ করে দেবে রম্যরচনার এই অনবদ্য সংকলনটি। বই তো নয়, যেন নিটোল এক আড্ডা। সে আড্ডার মধ্যমণি লীলা মজুমদার। তিনি বলে যাচ্ছেন, আমরা শুনে যাচ্ছি। খাওয়া-ভোলানো, নাওয়া-ভোলানো, ঘড়ির কাঁটা-ভোলানো তাঁর বর্ণনাভঙ্গি। তেমনই বিচিত্ৰ সব বিষয়। ভূত, ডাক্তার, মেয়ে-চাকুরে, খাওয়া-দাওয়া, পাড়াপড়শি, ছেলে মানুষ করা, ভালবাসা, ম্যাজিক, দজ্জাল মেয়ে, কুকুর, সাপ, চোর, ধাপ্পাবাজ, নেশাখোর—কোন বিষয়ে তিনি বলেননি! কখনও শুনিয়েছেন শান্তিনিকেতনের স্মৃতি, কখনও তাঁর উপজীব্য বোলপুরের ট্রেন কিংবা কিছু স্মৃতিজীবিত মানুষ। কখনও আবার তাঁর বিষয়— লেখকদের খোশগল্প। তাঁর নিজস্ব খোশগল্পের ভাণ্ডারটিও অবাক-করা। প্রতিটি লেখার মধ্যেই দুর্দান্ত সব খোশগল্পকে দিয়েছেন জুড়ে। রম্যরচনার ক্ষেত্রে এক চিরকালীন সংযোজন—‘খেরোর খাতা'।