‘লোকায়ত চট্টগ্রাম ও পার্বত্য জনপদ’-এর ১৫টি প্রবন্ধ দেশ ও দেশের সীমানা ছাড়ানো কিছু ভাব ও বস্তুজাগতিক বিষয়-আশয়কে ধারণ করেছে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটের ওপর নিজস্ব জিজ্ঞাসা ও কৌতূহলের পীড়নে। গদ্যগুলো সাধারণ মানুষের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থান থেকে বুঝতে চেষ্টা করেছে এদেশের সমাজ-সংস্কৃতি-রাজনীতি, ধর্ম ও উৎসবের তাৎপর্যকে। লেখকের মরমি মন পাহাড়ি আদিবাসী সমাজের গীতিকবিদের গানে প্রতিফলিত তাদের মনোলোক ও সামাজিক পরিসরকে তুলে ধরেছে বৃহত্তর সুধীসমাজের সামনে- যা একেবারেই নতুন একটি সংবেদনশীল এলাকাকে উন্মুক্ত করে দেয়।
এছাড়া একবিংশ শতকের নতুন কালপ্রবাহের বিবেচনায় বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কবি ও কবিতাভুবনের পর্যালোচনা, সমকালীন তরুণসমাজের মন ও মনন, নগরের পুকুর বা জলাশয়গুলোর বিলুপ্তিতে পরিবেশ-প্রতিবেশের ক্ষয়ক্ষতি, দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোকজ প্রণয়কাহিনি ‘মলকা বানু ও মনুমিয়া’ আখ্যানের ঐতিহাসিক সূত্রের সন্ধান, চীনের ভিন্নমতাবলম্বী লেখক গাও শিংজিয়ান-এর সাহিত্যসৃষ্টির পশ্চাতের শক্তিরূপে সেদেশের লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতির উপস্থিতিÑ এসব বিষয় অবলোকন করা হয়েছে।
একই সঙ্গে প্রখ্যাত ভাস্কর ‘অপরাজেয় বাংলা’র স্্রষ্টা সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ-এর সঙ্গে লেখকের একটি গুরুত্বপূর্ণ কথোপকথন, চট্টগ্রামের উপকূলীয় জেলে ও মাঝিমাল্লা বা মালুমদের সংগ্রামী ও মর্সিয়াবিধুর জীবনের কথকতা নিয়ে লেখকের পর্যবেক্ষণ তাঁর গভীর অন্তর্দৃষ্টির পরিচয় বহন করে।
Hafiz Rashid Khan- কবি ও প্রাবন্ধিক। জন্ম ১৯৬১ সালে চট্টগ্রামে। তিনি দীর্ঘদিন পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস করছেন। ১৯৯০ সাল থেকে পার্বত্য জীবন ও সংস্কৃতির ওপর সমুজ্জ্বল সুবাতাস নামে লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনা করে আসছেন চৌধুরী বাবুল বড়–য়ার সঙ্গে। পুষ্পকরথ তাঁর সম্পাদিত আরেকটি সাহিত্যের কাগজ। দুই সন্তানের জনক হাফিজ রশিদ খান চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ-এ কর্মরত আছেন। বাংলাদেশে বসবাসরত প্রাক জনগোষ্ঠীÑবিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী সংস্কৃতি ও জীবনধারার ওপর তার কয়েকটি কাব্য ও গবেষণামূলক গ্রন্থ রয়েছে। বাংলাদেশ ও পশ্চিম বাংলার তরুণ-প্রবীণ সাহিত্যকর্মীদের সম্পাদনায় প্রকাশিত অনেক ছোট কাগজের বুকে অসংখ্য কবিতা মুদ্রিত হয়েছে তাঁর।