"উপনিষদ -১ম খণ্ড" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ শাশ্বত মানবাত্মার গভীরতম মন্ত্রবাণী উপনিষদ। চিরন্তন সত্য-উপলব্ধির মহিমময় এবং ঐশ্বর্যময় প্রকাশ ঘটেছে উপনিষদের পরম্পরায়। এই মহান সৃষ্টির আলােকে মানুষ তার অন্তরের দীপশিখাটি জ্বালিয়ে নিয়েছে মনন ও সাধনার উষালগ্ন থেকে ভারতের অধ্যাত্মচিন্তার ইতিহাসে বেদান্তের স্থান সুউচ্চে। উপনিষদ সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দ সশ্রদ্ধ মন্তব্য করেছেন বিভিন্ন প্রসঙ্গে তাঁর ভাষায়, ‘উপনিষদগুলির মুখ্য উদ্দেশ্য...আমাদের সম্মুখে ভূমার ভাব ও চিত্র উপস্থিত করা। অন্যত্র বলছেন, প্রাচীন উপনিষদগুলি অতি উচ্চস্তরের কবিত্বে পূর্ণ।...কবিত্বের মধ্য দিয়া উচ্চতম সত্যসকল জগৎকে দিবার জন্য বিধাতা যেন উপনিষদের ঋষিগণকে সাধারণ মানব হইতে বহু ঊর্ধ্বে। কবিরূপে সৃষ্টি করিয়াছিলেন। উপনিষদের প্রকাশসৌন্দর্য সম্পর্কেও স্বামীজী উচ্ছ্বসিত : ...উপনিষদের ভাব ভাষা—সবকিছুরই ভিতর কোন জটিলতা নাই, উহার প্রত্যেকটি কথাই তরবারি-ফলকের মতাে, হাতুড়ির ঘায়ের মতাে সাক্ষাৎভাবে হৃদয়ে আঘাত করে। বিবেকানন্দের কাছে বেদান্ত একই সঙ্গে ‘ধ্যান ও সংগ্রামের বাণীপ্রতিমা। একে তিনি ঘরে ঘরে পৌছে দিতে চেয়েছিলেন। স্বামী লােকেশ্বরানন্দ ঈশ, কেন, কঠ, প্রশ্ন, মুণ্ডক, মাণ্ডুক্য, তৈত্তিরীয় এবং শ্বেতাশ্বতর—এই আটটি উপনিষদের অনুপুঙ্খ আলােচনায় স্বামীজীর চিন্তাকে যেমন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন, তেমনই শ্রীরামকৃষ্ণের জীবন ও বাণী থেকে চয়ন করেছেন ঔপনিষদিক ব্যঞ্জনা। এই দুই মহাভাবের আশ্রয়ে এবং শঙ্করাচার্যকে অনুসরণ করে সহজ ব্যাখ্যায় ‘উপনিষদ প্রথম ভাগ’ রচিত।