কলকাতা—এক মায়াময়, প্রাণময় শহর । এ-বই আমাদের সেই প্রিয়া শহর টিকে নিয়ে। তবে কোনও ধারাবাহিক ইতিহাস নয়, বরং যেন কোনও জাদুকরের কলমে লেখা আজকের অথবা গতকালের কিংবা অতীতের কলকাতা-কাহিনী। তাই এ-বইয়ের দৃষ্টিভঙ্গি একান্তভাবেই ব্যক্তিগত, এবং সম্ভবত সবসময় ইতিহাসসম্মতও নয়। তবু কলকাতা সম্পর্কে এই ‘এলোমেলো উপাখ্যানমালায় গাঁথা হয়েছে কলকাতার ইতিবৃত্ত। ইতিহাসের নানা অধ্যায়, এমনকী পাদটীকা থেকে তুলে আনা হয়েছে, চেনা-অচেনা, দেশি-বিদেশি জীবন্ত মানুষের মিছিল, স্বপ্নের মতো ঘটনার পর ঘটনা। কলকাতার নাম কেন কলকাতা—এই দিয়ে যে-অনুসন্ধানের শুরু, তার অন্তিমে এসেছে ইদানীংকার কলকাতার সাতসতেরো। মোট পঁচাত্তরটি প্রবন্ধে যে-স্বাদু কাহিনী শুনিয়েছেন শ্রীপান্থ, তা একমাত্র তাঁর মতো অনুসন্ধিৎসু লেখকের পক্ষেই সম্ভব। তথ্যের সঙ্গে আপস না করে অথচ তথ্য ও তত্ত্বের সুমিশ্রণে, শ্রীপান্থ এই বইয়ে এমন কিছু সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যা একইসঙ্গে চমকপ্রদ ও নতুন। কলকাতার ইতিহাসচর্চায় লেখকের ভূমিকা কেন অগ্রপথিকের, তা এই গ্রন্থে আরও একবার প্রতিষ্ঠিত হল। কলকাতা-প্রেমীদের কাছে ‘কলকাতা’ এক বিরাট প্রাপ্তি। এই বইয়ের রচনামাধুর্য ও ভাষা সাহিত্যগুণে ভরপুর। আর এর সঙ্গে আছে পাতায় পাতায় ছবি। পুরনো দিনের ছবি অবলম্বনে একালের বিশিষ্ট শিল্পী কৃষ্ণেন্দু চাকীর আঁকা আশ্চর্য সুন্দর অঙ্কন ও অলঙ্করণ।