‘ক্যানসার ও জিন’ বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ ষাট কোটি বছর আগে, পৃথিবীতে তখন ক্যামব্রিয়ান যুগ, আদি সমুদ্রের জলে ঘুরে বেড়াচ্ছে এককোষী এবং সরল ও জটিল বহুকোষী প্রাণী। এত বছর আগেকার সেই বহুকোষী প্রাণীগুলির জীবন কিন্তু রোগমুক্ত ছিল না। কী কী রোগে তারা ভুগত তা বিশদ জানা না-গেলেও কিছু সংক্রামক ব্যাধির প্রকোপ ছিল। কিন্তু যে-রোগের কথা নিশ্চিতভাবে জানা গেছে তার নাম ক্যানসার। আজকের মানুষের কাছে বিভীষিকা ক্যানসার রোগের অস্তিত্ব যে সেই ক্যামব্রিয়ান যুগেও ছিল, সেটাই আশ্চর্যের। প্রাচীনতম এই জটিল ব্যাধিতে যুগে যুগে মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের কাছে এ রোগ একসময় ছিল প্রহেলিকা। রোগটির মূল কারণ কী, কেন বা কী করে রোগটি শুরু হয় দেহে—সবই ছিল বিজ্ঞানীদের কাছে কুয়াশায় ঢাকা। সুখের কথা, ক্যানসার সম্পর্কে বহু অন্ধকার আজ কেটে গেছে। সাম্প্রতিককালের বৈজ্ঞানিক গবেষণায় একথা স্পষ্ট যে, ক্যানসার একটি জিনঘটিত রোগ। ফলে ক্যানসারের চিকিৎসায় এসেছে নতুন জোয়ার। আগামী দু-তিন দশকে শুধু রোগ দেখে নয়, ক্যানসারের চিকিৎসা হবে। রোগীর জিন-চিত্র দেখে। ওষুধ তৈরি হবে বিকল জিন বা বিকল প্রোটিনকে লক্ষ্য রেখে। ক্যানসার সম্পর্কে এযাবৎ গবেষণার যাবতীয় তথ্য, এই রোগের উৎস-চেহারা-চরিত্র, ক্যানসার কোষ, জিন ও ক্যানসার, রক্তবাহী ক্যানসার, শরীরের অন্যান্য অংশের ক্যানসার, ক্যানসার প্রতিরোধ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বাংলায় এই প্রথম এক পূর্ণাঙ্গ বই ‘ক্যানসার ও জিন’।
সূচি * আরম্ভের কথা – ১১ * মাত্র একটি কোষের জন্য – ১৪ * পরিবেশ কাঠগড়ায় – ২০ * জিন-রূপান্তর – ২৮ * জিন মিউটেশন ও ক্যানসার – ৩৮ * ভাইরাসের ভূমিকা – ৪১ * আলো দেখাল ভাইরাস – ৪৮ * প্রোটো-অনকোজিনের বিস্তৃতি – ৫৪ * অনকোজিনের সংখ্যা – ৫৯ * টিউমার সাপ্রেসর জিন – ৬৩ * অনকোপ্রোটিন ও কোষবৃদ্ধি – ৬৭ * কোষবৃদ্ধির আরও কিছু নিয়ন্ত্রক – ৭৪ * ক্যানসার কোষের মৃত্যু নেই – ৭৯ * কিছু ক্যানসার, কিছু জিন – ৮৩ * প্রতিকার ও প্রতিরোধ – ৯০ * শেষকথা – ১০১ * গ্রন্থপঞ্জি – ১০৪
তাঁর শিক্ষা লেডি ব্রেবাের্ন কলেজ, প্রেসিডেন্সি কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। শারীরবিদ্যায় এম.এস-সি। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ড. ডেভিড শেফারের তত্ত্বাবধানে কলেরার প্যাথােফিজিওলজি নিয়ে গবেষণা। কানাডার ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি-এইচ ডি। গবেষণার বিষয় ছিল প্রাণীর বিভিন্ন ধরনের লিউকিমিয়া ভাইরাস। পােস্ট ডক্টরেট কাজও ভাইরাস নিয়ে। পরবর্তীকালে টরেন্টোর মাউন্ট সাইনাই হাসপাতালের রিসার্চ বিভাগে মানুষের ক্যানসার, বিশেষ করে নানা ধরনের লিউকিমিয়া নিয়ে আরও গবেষণা করেছেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে গবেষণাপত্রগুলি প্রকাশিত হয়। কুড়ি বছর কানাডায় বসবাসের পর স্বদেশে ফিরে এসেছেন। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তাঁর বিজ্ঞান ও ভ্রমণবিষয়ক রচনা নিয়মিত প্রকাশিত হয়।