14

চোখের বালি

চোখের বালি (হার্ডকভার)

TK. 400 TK. 344 You Save TK. 56 (14%)
কমিয়ে দেখুন
tag_icon

বাংলাদেশে এই প্রথম "অনলাইন বাণিজ্য মেলা" ১ লক্ষাধিক পণ্যে ৭৫% পর্যন্ত ছাড়! সাথে BOGO, 100+ Bundle, ফ্রি শিপিং সহ আকর্ষনীয় সব অফার!

book-icon

Cash On Delivery

mponey-icon

7 Days Happy Return

Online Banijjo Mela 25 image

Frequently Bought Together

plus icon plus icon equal icon
Total Amount: TK. 626

Save TK. 109

Similar Category eBooks

বইটই

Product Specification & Summary

চোখের বালি (১৯০৩) উপন্যাস নৌকাডুবির পূর্ববর্তী হইলেও, রবীন্দ্রনাথ ইহাতে নৌকা—ডুবি অপেক্ষা অনেক দূর অগ্রসর হইয়াছেন। এখানে ঘটনাবিন্যাস ও চরিত্র—বিশ্লেষণে লেখক অনন্যপূর্ব গভীরতা ও কৌশল দেখাইয়াছেন। নৌকাডুবির সরল—সহজ, একটানা প্রবাহের সহিত তুলনায় এখানে পদে পদে সংঘাত ও গভীর ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্ট হইয়াছে। আকস্মিকতার স্থানে সুদৃঢ়, অচ্ছেদ্য কার্যকারণ—শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে।সমস্ত পরিবর্তনের স্রোত চরিত্রগত গভীর উৎস হইতেই প্রবাহিত হইয়াছে। মহেন্দ্র, বিনোদিনী, বিহারী ও আশা-এই চারিজনে মিলিয়া তাহাদের চারিদিকে যে প্রবল ঘূর্ণিবায়ুর সৃষ্টি করিয়াছে তাহার মধ্যে প্রত্যেকেরই চরিত্রগত বিশেষত্ব একটি বিশেষ রকমের গতিবেগ আনিয়া দিয়াছে। ইহাদের পরস্পরের মধ্যে সম্বন্ধটি অত্যন্ত বিচিত্র ও জটিল এবং সেই সমস্ত অবস্থার ব্যাপক পর্যালোচনা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার। মহেন্দ্র ও বিনোদিনী গূঢ় আকর্ষণ—বিকর্ষণ—লীলাই এই ঘূর্নিবায়ুর কেন্দ্রস্থ শক্তি; কিন্তু ইহার মধ্যে বিহারী ও আশাও তাহাদের সবল ও দুর্বল প্রতিক্রিয়ার দ্বারা নূতন জটিলতার সঞ্চার করিয়াছে। বিহারীর সবল, একনিষ্ঠ চিত্ত বিনোদিনীকে আকর্ষণ করিয়াছে; এবং তাহার অবজ্ঞাসূচক, কঠোর প্রত্যাখ্যান এই আকর্ষণকে অনিবার্য বেগ ও ব্যাকুলতামণ্ডিত করিয়া তুলিয়াছে। আবার বিহারীর মনের নিভৃততম কোণে আশার প্রতি যে গোপন অনুরাগের বীজ লুক্কায়িত ছিল তাহাই বিনোদিনীর ঈর্ষ্যাগ্নিতে নূতন ইন্ধন দিয়া তাহাকে আশা ও মহেন্দ্রের সর্বনাশ—সাধনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করিয়াছে। আশার সরল বিশ^াস ও স্বভাবসিদ্ধ শিথিলতা মহেন্দ্র—বিনোদিনীকে অবসর ও সুযোগ প্রদান করিয়া বিপদকে ঘনীভূত করিয়াছে; এবং বিহারীর প্রতি তাহার বিবেচনাহীন, প্রবল বিরাগ বিহারীকে কর্মক্ষেত্র হইতে অপসৃত করিয়া মহেন্দ্র—বিনোদিনীর প্রেমাভিনয়কে একেবারে বাধামুক্ত করিয়া দিয়াছে। আশার প্রতি বিহারীর প্রেম মহেন্দ্রের উপর তাহার নৈতিক প্রভাব ক্ষুণ্ণ করিয়াছে ও বিহারীর কল্যাণকামী মধ্যস্থতাকে প্রকাশ্যভাবে উপেক্ষা করিতে মহেন্দ্রকে উত্তেজিত করিয়াছে। এইরূপে এই চারিজনের ক্রিয়া—প্রতিক্রিয়াগুলি খুব সূক্ষ্ম ও জটিল শৃঙ্খলে গ্রথিত হইয়া একটি চমৎকার ঐক্য ও সমন্বয় লাভ করিয়াছে।

এমন কি রাজলক্ষ্মী ও অন্নপূর্ণাও এই গ্রন্থিসংকূলতার মধ্যে নূতন ফাঁস যোজনা করিতে সাহায্য করিয়াছে। রাজলক্ষ্মীর স্বার্থপরতা মহেন্দ্রের স্বার্থপরতার স্ত্রী—সংস্করণ মাত্র। মাতাপুত্র উভয়েই একছাঁচে ঢালা—মাতার পূত্রসর্বস্বতাই পুত্রের নির্লজ্জ, অসংযত ভোগলিপ্সার মূল উৎস। রাজলক্ষ্মী সম্বন্ধে বিনোদিনীর মন্তব্য তাহার চরিত্রের উপর অপ্রত্যাশিত, শিহরণকারী আলোকপাত করে। বধূর প্রতি ঈর্ষ্যান্বিত হইয়া মাতা বিনোদিনীর দ্বারা পুত্রকে প্রলুব্ধ করিতে চেষ্টা করিয়াছিলেন। দুর্গম—অভিমান—প্রবণ রাজলক্ষ্মীই তাঁহার গৃহঙ্গনে বিষবৃক্ষ রোপণ করিয়াছিলেন; এবং তাঁহার পুত্র সম্বন্ধে তীক্ষ্ম দৃষ্টি ও সদা—জাগ্রত সূক্ষ্ম অনুভূতি যে মহেন্দ্র বিনোদিনীর ক্রম—বর্ধমান অনুচিত ঘনিষ্ঠতা লক্ষ্য করে নাই।ইহা বিশ্বাস করা কঠিন। বধূর প্রভাব স্বহস্তে খর্ব করিয়া যখন তিনি সেই দুর্বল শৃঙ্খলের দ্বারা পুত্রের দুর্দমনীয় মনোবৃত্তিকে বাঁধিতে চেষ্টা করিয়াছেন, তখন সেই চেষ্টার মধ্যে একটা করুণ দিক আছে সন্দেহ নাই, কিন্তু মোটের উপর তাহা পাঠকের মনে সহানুভূতি অপেক্ষা তীব্র ব্যঙ্গের ভাবেরই উদ্রেক করে। অন্নপূর্ণার অবস্থাসংকটও এই জটিলতার সূত্র পাকাইতে সহায়তা করিয়াছে। অন্নপূর্ণা আশার মাসী বলিয়াই রাজলক্ষ্মীর অভিমান—জ¦ালা বেশির ভাগ তাঁহাকেই সহ্য করিতে হইয়াছে। অপক্ষপাত বিচার করিবার সাহস তাঁহার হয় নাই। মহেন্দ্রের লঘু অপরাধে আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করিয়া তিনি সংসার হইতে দূরে চলিয়া গিয়াছেন এবং তাঁহার কাশীবাসের দ্বারাই মহেন্দ্রের গুরু অপরাধের দ্বার প্রশস্ততর করিয়া দিয়াছেন।

মহেন্দ্র ও বিনোদিনীর পরস্পর আকর্ষণ—বিকর্ষণ—লীলাই মনস্তত্ত্ব—বিশ্লেষণের দিক হইতে উপন্যাসের মধ্যে সর্বাপেক্ষা প্রয়োজনীয় অংশ। আশার প্রতি সর্বগ্রাসী, আত্মবিস্মৃতিকর প্রেমে মহেন্দ্র সর্বপ্রথম বিনোদিনীর অস্তিত্বকেই আমল দেয় নাইÑতাহার সহিত সহজ ভদ্রতার সম্ভাষণটুকু করিতেও বিরত ছিল। আশাকে মহেন্দ্রের বিচ্ছেদ—অসহিষ্ণু প্রণয়ের নিকট কতকটা দুষ্প্রাপ্য করিয়াই প্রথম বিনোদিনী বিরক্তিকরভাবে তাহার মনোযোগ আকর্ষণ করিল। তারপর আশার নির্বন্ধাতিশয্যে ও চতুরা বিনোদিনীর স্বেচ্ছাকৃত অন্ধতায় মহেন্দ্র—বিনোদিনীর প্রথম পরিচয়ের আরম্ভ হইল। ইহার পর বিনোদিনীর কঠোর আত্মশাসনের নিকট মহেন্দ্রের ঔদাসীন্ত কতকটা ক্ষুণ্ণ হইয়া আসিল। সে প্রেমের নহে, কতকটা আত্মাভিমানের বশবর্তী হইয়াই বিনোদিনীর সহিত সম্বন্ধ ঘনিষ্ঠতর করিতে উদ্যোগী হইয়া উঠিল। দেখিতে দেখিতে বিনোদিনী তরুণ দম্পতির প্রিয় সখী হইয়া উঠিল, তাহার হাস্যরস—পরিহাস, মনোরঞ্জন শক্তি ও সেবাকুশলতার দ্বারা উহাদের প্রণয়ের অবসাদ ঘুচাইয়া উহাকে নবীন সঞ্জীবনরসে ভরপুর করিয়া ভুলিতে লাগিল। এখন পর্যন্ত মহেন্দ্রের মনে বিনোদিনীর প্রতি কোনরূপ অনুচিত আকর্ষণের সঞ্চার হয় নাইÑসে এখনও তাহাকে আশার পশ্চাদ্্বর্তিনী করিয়াই দেখিয়াছে। কিন্তু এই সময় বিহারীর তীক্ষè সংশয়পূর্ণ দৃষ্টি একটু গোলযোগের সূত্রপাত করিল, সকলের বিশেষতঃ মহেন্দ্রের মনে একটা অপার্থিব কদর্য সম্ভাবনার কথা জাগাইয়া দিয়া তাহার আত্মপ্রসাদের স্বচ্ছ প্রবাহ কতকটা পঙ্কিল করিয়া তুলিল। বিনোদিনীর কয়েক ফেঁাটা অশ্রম্নর কৌশলময় অভিনয়ের দ্বারাই এই সন্দেহের প্রথম কলঙ্কস্পর্শ ধুইয়া মুছিয়া গিয়াছে।

ইহার পর মহেন্দ্রের সচেষ্টতার পালাÑতাহার ঔদাসীন্ত বিনোদিনীর সচেষ্ট অনুসরণে রূপান্তরিত হইয়াছে। দমদমে চড়—ইভাতির আয়োজন এই নব পরিবর্তনের প্রতীক। এই দিনটি মহেন্দ্র, বিনোদিনী ও বিহারীর জীবনেতিহাসে একটি স্মরণীয় দিবস। এই দিনের ঘটনাবলীর ফলে বিহারীর মূল্য বিনোদিনীর চক্ষে শতগুণ বাড়িয়া গিয়াছে। বাল্যস্মৃতির দূরদিগন্তের মায়াময়, শীতল প্রলেপে তাহার ঈর্ষ্যা—কলুষিত, খর—জ্বালাতপ্ত প্রণয়—বিকার কাটিয়া গিয়া প্রেমের স্বভাবস্নিগ্ধ প্রসন্নতা ফুটিয়া উঠিয়াছে এবং এই নবজাগ্রত প্রেমের স্থির, অনুদ্ভ্রান্ত আলোকে সে বিহারীকেই নিজ জীবনের পরম আশ্রয়স্থল বলিয়া চিনিয়াছে।

এইবার মহেন্দ্র নিজ হৃদয়—তন্ত্রীতে সত্যকার টান অনুভব করিয়াছে, কিন্তু ইহাও ঠিক প্রণয় নহে, বিহারীর সহিত প্রতিদ্বন্দ্বিতা। বিহারীর নিকট পরাজয়ের ধিক্কারই তাহার সমস্ত শক্তিকে বিনোদিনীর হৃদয় জয় করিবার চেষ্টায় উদ্বুদ্ধ করিয়াছেÑবিনোদিনীকে ভালবাসিয়া নহে, তাহার উপর নিজ দখলী—স্বত্ব সাব্যস্ত করার জন্য। আশার প্রণয়—মোহ ছিন্ন হইলে পর তাহার ত্রুটি—অপূর্ণতার দিকে মহেন্দ্র প্রথম সজাগ হইয়াছে ও বিরক্তি—মিশ্রিত ভর্ৎসনা মুগ্ধপ্রেমের একসুরা কপোত—কুজনের মধ্যে একটি তীব্র বৈচিত্র্য আনিয়া দিয়াছে। শেষে মহেন্দ্র পলায়নে আত্মরক্ষার পথ অবলম্বন করিয়াছে। এই ক্ষণস্থায়ী বিচ্ছেদের মধ্যে আশার বেনামী বিনোদিনীর তিনখানি সুধা—হলাহল—মিশ্র প্রেমনিবেদন—লিপি মহেন্দ্রের অন্তর্ধন্দ্ব—বিক্ষুব্ধ হৃদয়ের মধ্যে বিষদিগ্ধ বাণের মতই বিঁধিয়াছে। মহেন্দ্র এক অজ্ঞাত—শঙ্কা—উদ্বেলিত হৃদয় লইয়া বিনোদিনীর সহিত বোঝাপড়া করিবার জন্য ঘরে ফিরিয়াছে। এইবার মহেন্দ্র একনিষ্ঠ প্রেমের মর্যাদা ও কর্তব্যবুদ্ধি ভুলিয়া বিনোদিনীর নিকট প্রথম প্রেম—নিবেদন করিয়াছে। কিন্তু এ ভ্রান্তি মুহূর্তের দুর্বলতা মাত্র। প্রণয়—ভিক্ষার পরমুহূর্তেই তাহার সমস্ত অন্তঃকরণ এই দুর্বলতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হইয়া উঠিয়াছেÑতাহার ব্যাকুল—নিবেদনাত্মক কথা কয়টি প্রত্যাহার করিবার জন্য সে প্রাণপণ চেষ্টা করিয়াছে ও বিহারীর নিকট তাহার আসন্ন পদস্খলনের সম্বন্ধে আবেগময় স্বীকারোক্তির দ্বারা নিজ অনুতাপের গভীরতা প্রমাণ করিয়াছে। বিহারীও আশার কল্যাণের জন্য বিনোদিনীর নিকট উচ্ছ্বসিত অনুনয়ের দ্বারা তাহার সুপ্ত মহত্বের ক্ষণিক উদ্বোধন করিয়াছে। বিনোদিনীর অশ্রম্ন—গাঢ় আলিঙ্গন ও মহেন্দ্রের অস্বাভাবিক বেগে উৎসারিত সোহাগ—নির্ঝর যুগপৎ আশার উপর বর্ষিত হইয়া তাহাকে উভয়ের মধ্যে এক নিগূঢ় ঐক্য—রহস্যের অস্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়াছে এবং এই সম্মিলিত শক্তির, এই স্নেহাতি—শয্যের ছদ্মবেশধারী বিরুদ্ধতার ক্ষীণ আভাস তাহার হৃদয়—মনে এক অজ্ঞাত ভয়ের শিহরণ জাগাইয়া তুলিয়াছে।


Title চোখের বালি
Author
Publisher
ISBN 978-984-97991-5-3
Edition 1st Published, January 2024
Number of Pages 240
Country বাংলাদেশ
Language বাংলা

Sponsored Products Related To This Item

Reviews and Ratings

sort icon

Product Q/A

Have a question regarding the product? Ask Us

Show more Question(s)

Customers Also Bought

loading

Similar Category Best Selling Books

prize book-reading point
Superstore
Up To 65% Off

Recently Viewed

cash

Cash on delivery

Pay cash at your doorstep

service

Delivery

All over Bangladesh

return

Happy return

7 days return facility

0 Item(s)

Subtotal:

Customers Also Bought

Are you sure to remove this from bookshelf?

Write a Review

চোখের বালি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৳ 344 ৳400.0

Please rate this product