হাউ টু ট্রাভেল লাইক এ রাইটার? অথবা হাউ টু রাইট লাইক এ ট্রাভেলার?
ফ্ল্যাপের এই লেখাটি ভবিষ্যতের লিটারারি ক্রিটিকদের জন্য, তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে। ধন্যবাদ এই কারণে যে আপনারা লেখাগুলোর গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পেরেছেন। আপনাদের এই উপলব্ধি এত সেলিব্রেট করার মতো কেন? কারণ আমার মনে হয়, প্রয়োজন ছাড়া বই বেশি মানুষ পড়ে না। কেবল জানে যে অমুক বইগুলো গুরুত্বপূর্ণ, সেলফে রাখা উচিত কিংবা পড়েছি বলে ভান করলে সমাজে মূল্য পাওয়া যায়। এই ভ্যালুগুলোকে (রি)ডিফাইন করেন ক্রিটিকেরা, মিডিয়া আউটলেটগুলোর সাথে কোলাবরেট করে। এর রিপ্রোডাকশন হতে থাকে বারবার, তবে রিয়েল ভ্যালু না থাকলে এই প্রসেস বেশি দূর আগায় না। হিমালয় পাই ইতোমধ্যেই রঙপ্যাথির মাধ্যমে বাংলা ফিকশনের জগতে সিগনিফিকেন্ট অরিজিনাল কন্ট্রিবিউশনটি করে ফেলেছেন। ফিকশনাল/ক্রিয়েটিভ নন-ফিকশন জনরায় বা এসব ক্যাটেগরি ভেঙে ফেলে যেই ধারায় তিনি ক্রমাগত লিখে চলেছেন, আপনারা হয়তো বইগুলো ধারাবাহিকভাবে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে জানিয়েছেন, কীভাবে তিনি পরিণত হচ্ছেন, হয়েছেন। এটাও হয়তো বলেছেন যে এই ডিপার্টমেন্ট টু ডিপার্চার-এ তিনি অ্যাচিভ করেছেন এক এক্সিলেন্স, this is peak of his true writer self! অনেকেই হয়তো আপনারা খেয়াল করেছেন, এই লেখকের কোনো বইতেই স্পেসের বর্ণনা তেমন থাকে না, অর্থাৎ চরিত্রদের দুনিয়াটা দেখতে কেমন আমরা জানতে পারি না। আমরা কেবল জানতে পারি তাদের ভিতরের কথাগুলো, দ্বন্দ্ব আর পলিটিক্স। চিন্তা বড় হয়ে ওঠে চরিত্রের চেয়ে, চরিত্র ম্লান করে স্থান-কালকে। সেই লেখক হঠাৎ স্পেস বা প্লেস মেকিংয়ে আগ্রহী হলেন কেন? এ কোন ভারতভ্রমণ? আদৌ কি এই ভারতকে জিওলোকেট করা যায়? চ্যাপ্টারের নামগুলো কীসের মেটাফর? আপনারা নিশ্চয়ই সেসবের উত্তর খুঁজেছেন। আবার হয়তো এই প্রশ্নও করেছেন, এই ইন্টারনালিটি অ্যানালিসিসে ভারত বা অন্য যে দেশই হোক, ভ্রমণ জরুরি হতো কিনা? অথবা অন্য কোনো দেশে গেলে পর্যবেক্ষণগুলো কেমন হতো?
সবচেয়ে দারুণ হবে, কোনো ক্রিটিক যদি মতামত দিয়ে বসেন, আসলে লেখক ভারতে যানইনি। পুরোটাই কল্পনা, লিখতে লিখতে এসব আবিষ্কার করেছেন।
একজন লেখক, যার লেখালিখি তীব্র ডায়ালেক্টিকাল, কেবল ভাবনার পর ভাবনা, ভাবনার পিঠে চাবুক মারা, পাঠক বিকল্প চিন্তা করার আগেই তিনি সেটি হাজির করেন, অনেকটা পিংপং খেলার মতো— মাঝে মাঝে অসহায় ফিল হয়, মনে হয় যেন লেখক নিজেই একই সাথে নীটশে এবং নীটশের সেই ঘোড়া। আশ্চর্য, এই লেখায় সেই গ্রিফ অনুপস্থিত, এর ‘ডিপার্চার’ ঘটেছে, এক ধরনের মুক্তি এসেছে। এটা এক পিভোটাল মোমেন্ট। আনন্দময় ঘটনা। অনেকাংশে সেটি সম্ভব হয়েছে বাস্তব ও কল্পনার বেশি বয়সের সেই নারী চরিত্রগুলোর বিনির্মাণে, মানবিক সম্পর্কগুলোকে লেখক উন্মোচন করেছেন অদ্ভুত স্কিলফুলি এই বইতে। আজীবন লেখকের জীবন যাপন করা মানুষটি নিজেকে খুলে দিয়েছেন নিজের লেখার মধ্য দিয়ে, নিজেকে গ্রেট রাইটারদের কাতারে তুলে ধরেছেন, পেছনের হোমওয়ার্কও দেখিয়ে দিয়েছেন; অথচ আপনাদের আগের জেনারেশনের ক্রিটিকেরা সেগুলো ধরতে পারেননি, আপনারা পেরেছেন। ধন্যবাদ আপনাদের প্রাপ্য।