গ্রন্থপরিচিতিঃইসলামে-হালাল-হারামের-বিধান আল্লামা ইউসুফ আল-কারযাভী লিখিত আরবী গ্রন্থ ‘আল–হালাল ওয়াল হারাম ফিল ইসলাম’– এর বাংলা অনুবাদ ‘ইসলামের হালাল-হারামের বিধান।বস্তুত ইউসুফ আল-কারযাভী বর্তমান শতাব্দীর একজন শ্রেষ্ঠ ইসলামী ফিকাহ্বিদ- একথা শুধু আমার নয়, একালের বহু বিখ্যাত মনীষীই তা অকপটে স্বীকার করেছেন। তা যেমন তাঁর লিখিত সব কয়টি বড় বড় ও গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ অকাট্যভাবে প্রমাণ করে, তেমনি বাংলা ভাষায় প্রকাশিত ‘ইসলামের যাকাত বিধান’-বইটিও।
গ্রন্থকারের বর্তমান গ্রন্থখানিও যেমন ব্যাপক আলোচনাপূর্ণ তেমনি এর তুলনা দুনিয়ার আরবী, উর্দু ও অন্যান্য কোন ভাষায়ই খুঁজে পাওয়া যাবে না। গ্রন্থকার নিজেই বলেছেনঃ হালাল-হারাম বিষয়ে এ গ্রন্থখানি বিশ্ব ইসলামী সাহিত্যে সর্বোচ্চ সংযোজন। গ্রন্থকারের এ দাবি যে একশ’ ভাগ সত্য, তা এর পাঠক মাত্রই স্বীকার করবেন। আলোচ্য বিষয়ের বিভিন্ন অংশ ফিক্হ’র কিতাবসমূহে বিচ্ছিন্নভাবে পড়ে রয়েছে, কিন্তু তা প্রাচীন পদ্ধতিতে লেখা বলে আধুনিক কালের লোকদের পক্ষে তা থেকে বক্তব্য উদ্ধার করা কঠিন। একটি নির্দিষ্ট শিরোনামে পূর্ণ ব্যাপকতা, যৌক্তিক মানে ও আধুনিক গবেষণা ও বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ই এই প্রথমবার একত্রে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। ফলে গ্রন্থখানি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী বিষয়াদির ‘বিশ্বকোষ’ হওয়ার মর্যাদা অর্জন করেছে। এ কারণেই সারা দুনিয়ার মনীষীগণের কাছে বিশেষভাবে সমাদৃত হয়েছে। এর মূল আরবী গ্রন্থের বহু কয়টি সংস্করণ প্রকাশ এবং তুর্কী ও ইংরেজী ভাষায় এর অনুবাদ প্রকাশ ও তার বিপুল চাহিদা এ কথা নিঃসন্দেহে প্রমাণ করে।
গ্রন্থখানিতে আলোচিত বিষয়াবলীর গুরুত্ব অনস্বীকার্য। তওহীদ ও রিসালাত-এর সাথে সাথে হালাল-হারামের মাস্লাসমূহ সমানভাবে মৌলিক গুরুত্বের অধিকারী। হালাল-হারামের পার্থক্য ব্যতীত না ঈমান ও ইসলাম গ্রহণযোগ্য হতে পারে, না কোন ইবাদতই আল্লাহ্র কাছে একবিন্দু কবুল হতে পারে। আমি মনে করি, হালাল-হারাম এর পার্থক্য রক্ষা করে না চললে মানুষের মনুষ্যত্ব রক্ষা পেতে পারে না বরং মানুষের পশুর স্তরে নেমে যাওয়া অবধারিত। গ্রন্থকার পূর্ণ ব্যাপকতা সহকারে বিষয় সংশ্লিষ্ট সকল দিক ও সকল শাখা-প্রশাখা সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ আলোচনা উপস্থাপিত করেছেন সুস্পষ্ট ও অকাট্য দলিল-প্রমাণের ভিত্তিতে।
সুচীপত্র * অনুবাদকের কথা * গ্রন্থকারের ভূমিকা * প্রথম অধ্যায় * সংজ্ঞা * ১. সব জিনিসের ব্যাপারেই মৌল নীতি হচ্ছে- তা মুবাহ * ২. হালাল-হারাম ঘোষণা করার অধিকার একমাত্র আল্লাহ্র * ৩. হালালকে হারাম ও হারামকে হালালকরণ শির্ক পর্যায়ে অপরাধ * ৪. হারাম জিনিস ক্ষতিকর * ৫. হালাল যথেষ্ট, হারাম অপ্রয়োজনীয় * ৬. হারাম কাজের নিমিত্তও হারাম * ৭. হারাম কাজে কৌশল অবলম্বনও হারাম * ৮. নিয়ত ভাল হলেই হারাম হালাল হয় না * ৯. হারাম থেকে দূরে থাকার জন্যে সন্দেহপূর্ণ কাজ পরিহার * ১০. হারাম সকলেরই জন্যে * ১১. প্রয়োজন নিষিদ্ধকে বৈধ করে * দ্বিতীয় অধ্যায় * মুসলিমের ব্যক্তিগত জীবনে হালাল-হারাম * ব্রাহ্মণদের দৃষ্টিতে পশু যবাই করা ও খাওয়া * ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদের দৃষ্টিতে হারাম জন্তু * ইসলাম পূর্ব যুগের আরবদের অবস্থা * ইসলাম পবিত্র জিনিসগুলো মুবাহ করেছে * মৃত জন্তুর হারাম হওয়ার কারণসমূহ * প্রবাহিত রক্ত হারাম কেন * শূকরের গোশত * আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্যে উৎসর্গিত জন্তু * কয়েক প্রকারের মুর্দার * এসব মুর্দার হারাম করার কারণ * দেবতার উদ্দেশ্যে বলি দেয়া জন্তু * মাছ ও পঙ্গপাল সম্পর্কে স্বতন্ত্র বিধান * মৃত জন্তুর চামড়া, অস্থি ও পশম ব্যবহার * ঠেকার অবস্থায় স্বতন্ত্র হুকুম * চিকিৎসার প্রয়োজনে * সামষ্টিক পর্যায়ে প্রয়োজন পূরণের ব্যবস্থা থাকলে ব্যক্তি-প্রয়োজন অবশিষ্ট থাকে না * যবেহ করার শরীয়তসম্মত পন্থা * সামুদ্রিক জীব সবই হালাল * স্থলভাগের হারাম জীব-জন্তু * গৃহপালিত জন্তু হালাল হওয়ার জন্যে যবেহ করা শর্ত * শরীয়ত অনুযায়ী যবেহ করা শর্ত * যবেহ করার এ নিয়মের তাত্পর্য * যবেহ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণের তাত্পর্য * ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদের যবেহ করা জন্তু * ১. গির্জা ও মেলাতে হারের জন্যে যবেহ করা জন্তু * ২. বিদ্যুত্ স্পর্শে যবেহ করা বা টিনবদ্ধ গোশত খাওয়া * অগ্নি পূজক প্রভৃতির যবেহ করা জন্তু * দৃষ্টির অন্তরালবর্তী জিনিসের খোঁজ করা অনাবশ্যক * শিকার * শিকারী সম্পর্কিত কথা * শিকার প্রাণী সম্পর্কিত শর্ত * শিকার করার উপায় * শানিত অস্ত্র দ্বারা শিকার করা * কুকুর দ্বারা শিকার করা * তীর নিক্ষেপের পর শিকার মৃতাবস্থায় পাওয়া * মদ্য * সমস্ত মাদক দ্রব্যই হারাম * মাদক দ্রব্য মাত্রই হারাম- অল্প হোক কি বেশি * সুরার ব্যবসা * মুসলমান সুরা উপঢৌকন দিতে পারে না * সুরা পানের আসর পরিহার করা * সুরা রোগ- ঔষধ নয় * চেতানা নাশক দ্রব্যাদি * ক্ষতিকর জিনিস মাত্রই হারাম * পোশাক পরিচ্ছদ * পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য বিধায়ক দ্বীন * স্বর্ণ ও রেশমী কাপড় পুরুষদের জন্যে হারাম * রেশম ও স্বর্ণ ব্যবহার পুরুষদের জন্যে হারাম করার কারণ * মহিলাদের জন্যে তা হালাল কেন * মুসলিম মহিলার পোশাক * নারী ও পুরুষের মাঝে সাদৃশ্য সৃষ্টি * খ্যাতি ও অহংকারের পোশাক * মাত্রাতিরিক্ত সৌন্দর্যের জন্যে আল্লাহ্ সৃষ্টি বিকৃতকরণঃ * দেহে চিত্র অংকন, দাঁত শানিতকরণ ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যে অপারেশন করান * ভ্রূ সরুকরণ * চুলে জোড়া লাগান * খেজাব লাগন * দাড়ি বাড়ানো-লম্বাকরণ * ঘর-বসবাসের স্থান * বিলাসিতা ও পৌত্তলিকতার প্রকাশ * স্বর্ণ-রৌপ্যের পাত্র * ইসলামে প্রতিকৃতি হারাম * ছবি ও প্রতিকৃতি হারাম করার কারণ * মহাপুরুষদের স্মৃতিরক্ষার উপায় * শিশুদের খেলনায় দেষ নেই * অসম্পূর্ণ ও বিকৃত প্রতিকৃতি * বিদেহী ছবি-প্রতিকৃতি * ছবির প্রতি অমর্যাদাই তাকে জায়েয করে * ফটোগ্রাফীর ছবি * ছবির উদ্দেশ্য * ছবি-প্রতিকৃতি ও তার নির্মাতা সম্পর্কিত বিধানের সার-নির্যাস * বিনা প্রয়োজনে কুকুর পালা * শিকার ও পাহারাদারির জন্যে কুকুর রাখা * আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে কুকুর পালন * উপার্জন ও পেশা * কর্মক্ষম ব্যক্তির নিষ্কর্মা বসে থাকা হারাম * ভিক্ষাবৃত্তি জায়েয হয় কখন * শ্রম সম্মানজনক * কৃষিকার্য দ্বারা উপার্জন * হারাম কৃষিকার্য * শিল্প ইত্যাদি * নিষিদ্ধ কজ ও পেশা * বেশ্যাবৃত্তি * নৃত্য ও যৌন শিল্পকর্ম * ভস্কর্য, প্রতিকৃতি ও ক্রুশ নির্মাণ মিল্প * মাদক ও জ্ঞান-বুদ্ধির বিনষ্টকারী দ্রব্যাদি শিল্প * ব্যবসা করে উপার্জন করা * ব্যবসা সম্পর্কে গির্জার ভূমিকা * হারাম ব্যবসা * চাকরি * হারাম চাকরি * উপার্জন পর্যায়ে সাধারণ নিময় * তৃতীয় অধ্যায় * স্বাভাবিক কামনা চরিতার্থ করার ক্ষেত্রসীমা * যৌন স্পৃহা পর্যায়ে মানুষের ভূমিকা * জ্বেনার কাছেও যাবে না * ভিন মেয়েলোকের সাথে নিভৃতে সাক্ষাৎ হারাম * বিপরীত লিঙ্গের প্রতি লালসার দৃষ্টিতে তাকান * লজ্জাস্থানের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ হারাম * পুরুষ বা নারীর প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ * নারীর সৌন্দর্য প্রকাশ সমস্যা * নারীদের সতর * সাধারণ গোসলখানায় নারীর প্রবেশ * নারীদের উলঙ্গতা-উচ্ছৃঙ্খলতা হারাম * কোন্ অবস্থায় ‘তাবাররুজ’ হয় না * স্ত্রীর স্বামীর মেহমানদের খেদমত করা * প্রকৃতি বিরোধী কাজ কবীরা গুনাহ * হস্তমৈথুন * ইসলামে বৈরাগ্যবাদ নেই * প্রস্তাবিত কনেকে দেখা * বিয়ের পয়গাম দেয়ার হারাম পন্থা * কুমারী কন্যার অনুমতি, তার ওপর জোর না করা * মুহাররম মেয়েলোক * এ সব মেয়ে বিয়ে করা হারাম হওয়ার কারণ * দুগ্ধ সেবনের কারণে বিয়ে হারাম হওয়া * বৈবাহিক সম্পর্কের দরুন বিয়ে হারাম * দুই বোনককে এক সঙ্গে স্ত্রী বানান * পরস্ত্রী * মুশরিক নারী * আহলি কিতাব নারী * অমুসলিম পুরুষের সাথে মুসলিম নারীর বিয়ে * ব্যভিচারে অভ্যস্ত নারী * সাময়িক বিয়ে * একসঙ্গে একাধিক স্ত্রী গ্রহণ * একসঙ্গে একাধিক স্ত্রী গ্রহণের শর্ত- সুবিচার * একাধিক স্ত্রী গ্রহণের অনুমতির যৌক্তিকতা * স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্পর্ক * স্বামী-স্ত্রীর সংবেদনশীল সম্পর্ক * গুহ্যদ্বার পরিহার * স্বামী-স্ত্রীর গোপন তত্ত্ব সংরক্ষণ * পরিবার পরিকল্পনা * কোন্ অবস্থায় পরিবার পরিবার পরিকল্পনা জায়েয * গর্ভপাত ঘটানো * স্বামী-স্ত্রীর সামাজিক অধিকার * স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক ধৈর্য ধারণ * স্বামী-স্ত্রীর বিরোধ দেখা দিলে * কেবল এরূপ অবস্থায়ই তালাক দেয়া যেতে পারে * ইসলামের পূর্বে তালাক প্রথা * ইয়াহূদী ধর্মে তালাক * খ্রিস্ট ধর্মে তালাক * তালাকের ব্যাপারে খ্রিস্ট ধর্মের ভিন্নমত * তালাকের ব্যাপারে খ্রিস্ট ধর্মের অনুসৃত নীতির পরিণাম * তালাক পর্যায়ে খ্রিস্ট ধর্মের স্বতন্ত্র ভূমিকা * খ্রিস্ট ধর্মের শিক্ষা সাময়িক * তালাকের ব্যাপারে ইসলামের নিয়ন্ত্রণ * হায়েয অবস্থায় তালাক দেয়া হারাম * তালাকের কসম খাওয়া হারাম * তালাকপ্রাপ্তা স্বামীর ঘরে ইদ্দত পালন করবে * এক তালাকের পর আর এক তালাক * তালাক প্রাপ্তকে ইচ্ছামত বিয়ে করতে বাধা দেবে না * স্বামীর প্রতি ঘৃণা সম্পন্না স্ত্রীর অধিকার * স্ত্রীকে জ্বালাতন করা হারাম * স্ত্রী পরিত্যাগের ‘কসম খাওয়া’ হারাম * পিতামাতা ও সন্তানদের সম্পর্ক * বংশ সংরক্ষণ * নিজ সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করা জায়েয নয় * পালক পুত্র গ্রহণ হারাম * পালক-পুত্র ব্যবস্থার বাস্তবভাবে রহিতকরণ * কৃত্রিম উপায় গর্ভ সৃষ্টি * প্রকৃত পিতা ছাড়া অন্য কাউকে পিতা বলা * সন্তান হত্যা করো না * সন্তানদের মধ্যে সমতা রক্ষা * মীরাস বন্টনে আল্লাহর আইন পালন * পিতামাতার সাথে সম্পর্ক ছিন্নকরণ * পিতামাতাকে গালাগাল দেয়ার কারণ ঘটানোও কবীরা গুণাহ * পিতামাতার অনুমতি ছাড়া জিহাদে যাওয়া * মুশরিক পিতামাতার সাথে ব্যবহার * চতুর্থ অধ্যায় * আকীদা-বিশ্বাস ও ধর্মীয় অন্ধ অনুসরণ * আল্লাহর সুন্নাতের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা * কুসংস্কার ও ভিত্তিহীন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে লড়াই * গণকদারকে বিশ্বাস করা কুফর * পাশার দ্বারা ভাগ্য জানতে চাওয়া * যাদুবিদ্যা * তাবীজ ব্যবহার * খারাপ লক্ষণ গ্রহণ * জাহিলী অন্ধ অনুসরণের বিরুদ্ধে জিহাদ * বিদ্বেষমূলক ভাবধারা ইসলামের বিপরীত * বংশ ও বর্ণের কোন গৌরব নেই * মৃতের জন্যে বিলাপ * পারস্পরিক কার্যাদি * হারাম জিনিস বিক্রয় করা হারাম * ধোঁকাপূর্ণ বিক্রয় হারাম * দ্রব্যমূল্য লয়ে খেলা করা * পণ্য মজুদকারী অভিশপ্ত * বাজারের স্বাধীনতায় কৃত্রিম হস্তক্ষেপ * দালালী জায়েয * মুনাফাখোরি ও ধোঁকাবাজি হারাম * যে ধোঁকাবাজি করল সে আমাদের নয় * বারবার কিরা-কসম করা * মাপে-ওজনে কম করা * চোরা মাল ক্রয় * সুদ হারাম * সুদ হারামকরণের যৌক্তিকতা * সুদদাতা ও সুদী দলিলের লেখক * ঋণ লওয়া থেকে নবী পানা চাইতেন * বেশি মুল্যে বাকী ক্রয় * আগে মূল্য দেয়া ও পরে পণ্য গ্রহণ * শ্রম ও মূলধনের পারস্পরিক সহযোগিতা * বীমা কোম্পানী * বীমা কোম্পানী কি পারস্পরিক সাহায্য সংস্থা * পরিবর্তন ও সংশোধনী * ইসলামে বীমা পদ্ধতি * কৃষি জমিতে ফসল উৎপাদন * জমি কাজে লাগাবার নানা উপায় * দ্বিতীয় পন্থা * ভাগে জমি চাষ * ভুল নীতিতে পারস্পরিক চাষাবাদ * নগদ টাকায় জমি লাগানো * নগদ মূল্যে জমি লাগানো নিষিদ্ধ হওয়ার যৌক্তিকতা * পশুপালনে শরীকানা * ক্রীড়া ও আনন্দ * প্রতি মুহূর্তে একই অবস্থা থাকে না * রাসূল তো মানুষ ছিলেন * মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে * জায়েয ধরনের খেলা * দৌড় প্রতিযোগিতা * কুস্তি করা * তীর নিক্ষেপ * বল্লম চালানো * ঘোড় সাওয়ারী * শিকার করা * পাশা খেলা * দাবা খেলা * গান ও বাদ্যযন্ত্র * জুয়া-সুরা-সঙ্গী * লটারীও এক প্রকার জুয়া * সিনেমা দেখা * সামাজিক সম্পর্ক * মুসলমান ভাইর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে না * পারস্পরিক সন্ধি সমঝোতাকরণ * অন্যদের বিদ্রুপ করা ঠিক নয় * দুর্নাম করা, দোষী করা * খারাপ উপাধিতে ডাকা * খারাপ ধারণা * দোষ খুঁজে বেড়ান * গীবত * গীবতের অনুমতি-সীমা * চোগলখোরী * মান-সম্মান সংরক্ষণ * রক্তের মর্যাদা * হন্তা ও নিহত উভয়েই জাহান্নামী * চুক্তি সম্পন্ন ও যিম্মী ব্যক্তির রক্ত মর্যাদা * রক্তের মর্যাদা কখন থাকে না * আত্মহত্যা * ধন-মালের মর্যাদা * ঘুষ হারাম * শাসক – প্রশাসকদের জন্যে উপটৌকন * জুলুম বন্ধের জন্যে ঘুষ দেয়া * নিজেদের ধন-মাল অপব্যয় করা * অমুসলিমের সাথে সম্পর্ক * আহলি কিতাবের প্রতি বিশেষ সুবিধা দান * যিম্মি * অমুসলিমদের সাথে সম্পর্কের রূপ * অমুসলমানের কাছে সাহায্য চাওয়া * ইসলাম একটা সাধারণ রহমত * উপসংহার
শায়খ প্রফেসর ড. ইউসুফ আবদুল্লাহ আল কারযাভি (১৯২৬-) মিশরীয় বংশোদ্ভূত একজন প্রভাবশালী আধুনিক ইসলামি তাত্ত্বিক ও আইনজ্ঞ। তিনি মুসলিম ধর্মতত্ত্বিকদের অভিজাত সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলার্সে (International Union of Muslim scholars)-এর সাবেক চেয়ারম্যান। জন্ম ১৯২৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। মিসরের উত্তর নীলনদের তীরবর্তী সাফাত তোরাব গ্রামে। দুই বছর বয়সে বাবা ইন্তিকাল করলে চাচা তার লালন-পালন করেন। দশ বছর বয়সে তিনি সম্পূর্ণ কোরআন হিফজ করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা করেন আল-আজহার কারিকুলামে। প্রাচীন ইসলামী বিদ্যাপীঠ আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উসুলুদ দ্বীন অনুষদ থেকে অনার্স, আরবি ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। মিসরের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘Institute of Imams’ এর পরিদর্শক হিসেবে কর্মজীবনে পদার্পণ করেন। কিছুদিন তিনি আওকাফ মন্ত্রণালয়ের ‘Board of Religious Affairs’ এ কর্মরত ছিলেন। ১৯৭৭ সালে তিনি কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শরীয়াহ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের প্রতিষ্ঠাকালীন ডীন নিযুক্ত হন। ১৯৯০ পর্যন্ত তিনি এখানে কর্মরত থাকেন এবং একই বছর তাঁর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘সীরাত ও সুন্নাহ গবেষণা কেন্দ্র’। ১৯৯০-৯১ সালে আলজেরিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের Scientific Council এর চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করেন। ১৯৯২ সালে কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সীরাত ও সুন্নাহ গবেষণা কেন্দ্রের ডিরেক্টর হিসেবে পুনরায় কাতার ফিরে আসেন। তিনি জর্ডানের রয়্যাল অ্যাকাডেমি ফর ইসলামিক কালচারাল অ্যান্ড রিচার্জ (Royal academy for Islamic culture and research), ইসলামি সম্মেলন সংস্থা (OIC), রাবেতা আল-আলম আল-ইসলামি এবং ইসলামিক স্টাডিজ সেন্টার, অক্সফোর্ড এর সম্মানিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৪১১ হিজরিতে ইসলামী অর্থনীতিতে অবদান রাখায় ব্যাংক ফয়সল পুরষ্কার লাভ করেন। ইসলামি শিক্ষায় অবদানের জন্য ১৪১৩ হিজরিতে মুসলিম বিশ্বের নোবেল খ্যাত কিং ফয়সাল অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন । ১৯৯৭ সালে ব্রুনাই সরকার তাকে ‘হাসান বাকলি’ পুরষ্কারে ভূষিত করে।