সূচিপত্র মতবিরোধমুক্ত সোনালী যুগ : রাসূলুল্লাহর যুগ মনবিরোধের ইতিহাসের সূচনা যুগ : সাহাবায়ে কিরামের যুগ * শায়খাইনের কর্মনীতি * মতপার্থক্যের ভিত্তি সূচনা ও কারণ * প্রথম কারণ : রাসূলের হাদীস জানা না থাকার পার্থক্য * দ্বিতীয় কারণ : রাসূলের কাজের ধরণ নির্ণয়ের পার্থক্য * তৃতীয় কারণ : ধারণাগত বিশ্লেষণের পার্থক্য * চতুর্থ কারণ : ভুলে যাবার কারণে মতপার্থক্য * পঞ্চম কারণ : রাসূলুল্লাহর বক্তব্যের সঠিক উদ্দেশ্য আয়ত্ত না করার পার্থক্য * ষষ্ঠ কারণ : বিধানের কারণ নির্ণয়গত পার্থক্য * সপ্তম কারণ : সামঞ্জস্য বিধানগত পার্থক্য
মতবিরোধের ইতিহাসের দ্বিতীয় যুগ : তাবেয়ীগণের যুগ * তাবেয়ীগণের মতপার্থক্য * ফিকাহ্ সংকলনের সূচনা
মতবিরোধের ইতিহাসের তৃতীয় যুগ : তাবে’ তাবেয়ীগণের যুগ * উলামায়ে তাবে’তাবেয়ীন * তাবে’তাবেয়ী আলিমগণের চিন্তা ও কর্মপদ্ধতি
প্রসিদ্ধ ফিক্হী মাযহাবসমূহ * ক. ইমাম মালিক ও মালিকী মাযহাব * খ. ইমাম আবু হানিফা ও হানাফী মাযহাব * গ. ইমাম শাফেয়ী ও শাফয়ী মাযহাব
আহলে হাদীস * হাদীসের অনুসৃতি * হাদীস সংকলনের যুগ * হাদীস বিশারদগণের ফিকাহ্র প্রতি মনোযোগ * নতুন উসূলে ফিকাহ্ * উসূলগলোর উৎস * ফিকাহ্র এই পদ্ধতির সাফল্য * হাদীসের চুলচেরা বিশ্লেষণের যুগ * এক : আবু আবদুল্লাহ আল বুখারী * দু্ই : মুসলিম নিশাপুরী * তিন : আবু দাউদ সিজিস্তানী * চার : আবু ঈসা তিরমিযী
আহলুর রায় * ইজতিহাদী রায়ের প্রবণতা * তাখরীজের কারণ * তাখরীজ কি? * মাযহাবী মুজতাহিদ * কিছু মাযহাব প্রসারিত আর কিছু মাযহাব সংকুচিত হবার কারণ
সঠিকপন্থা ও সুষম নীতি * সঠিকপন্থা হলো মধ্যপন্থা * আহলে হাদীসের বাড়াবাড়ি * আহ্লুর রায়ের বাড়াবাড়ি
তাকলীদ * তাকলীদবিহীন যুগ * ব্যক্তিকেন্দ্রিক তাকলীদের সূচনা * তাকলীদের অপরিহার্যতা এবং এর সঠিক অর্থ * একটি অভিযোগ এবং তার জবাব * কখন নির্দিষ্ট ইমামের তাকলীদ করা ওয়াজিব
ইজতিহাদ * ইজতিহাদে মতলক * মুজতাহিদ মতলকের প্রকারভেদ * মুজতাহিদ মতলক মুসতাকিল এবং তার বৈশিষ্ট্য * মুজতাহিদ মতলক মুনতাসিব * মুজতাহিদ ফীল মাযাহাব * প্রাচীনরা উসূলে ফিকাহ্ সংকলন করেননি কেন * চার মাযহাবের ইজতিহাদের ইতিহাস
চতুর্থ হিজরী শতাব্দীর পর ফিক্হী মতপার্থক্যের গতিধারা * ফিতনার যুগ এলো * ফিক্হী বিবাদ * মুজতাহিদ ইমামদের মধ্যকার মতপার্থক্যের কারণ সম্পর্কে অজ্ঞতা * ফিক্হী মতামতের তাৎপর্য সম্পর্কে অজ্ঞতা * রায় এবং যাহেরিয়াতের তাৎপর্য সম্পর্কে অজ্ঞতা * অন্ধ অনুকরণের প্রাধান্য * শাস্ত্রীয় গবেষণার অপ্রয়োজনীয় হিড়িক
Shah Oaliullah Muhaddise Dehalabhi (Rah.) কুতুবউদ্দিন আহমাদ ইবনু আবদুর রহিম। যিনি শাহ ওয়ালিউল্লাহ নামে পরিচিত (১৭০৩-১৭৬২ খ্রিষ্টাব্দ/১১১৪-১১৭৬ হিজির) ছিলেন। ভারতীয় উপমহােদেশর একজন ইসলামি পন্ডিত, সংস্কারক এবং আধুিনক ইসলামি চিন্তার একজন প্রতিষ্ঠাতা। সাম্প্রতিক পরিবর্তেনর আলােকে তিনি ইসলািম আদর্শেক বাস্তবায়ন করেত চেয়েছিলন। শাহ ওয়ালিউল্লাহ মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর চার বছর পূর্বে ১৭০৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার বংশতালিকা সাহাবি উমর ইবনুল খাত্তাব রা.-এর পরিবার পর্যন্ত পৌঁছায়। দিল্লিতে তার পিতা শাহ আবদুর রহিম কর্তৃক প্রতিষ্টিত মাদরাসায় তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও আধ্যাত্মিক দিকনির্দেশনা লাভ করেন। কুরআেনর পাশাপাশি তিনি আরবি ও ফারসি ব্যাকরণ, সাহিত্য এবং উচ্চস্তরের দর্শন,ধর্মতত্ত্ব, অধিবিদ্যা, অতীন্দ্রয়িতা ও আইনশাস্ত্রের ওপর পাঠ নেন। ১৫ বছর বয়েস তিনি এখান থেকে উত্তীর্ণ হন। একই বছর তার পিতা তাকে নকশবন্দিয়া তরিকায় পদার্পণ ঘটান। মাদরাসায়ে রহিমিয়াতে তিনি তার পিতার অধীনে শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৭১৮ সালের শেষের দিকে পিতার মৃত্যুর পর তিনি মাদ্রাসার প্রধান হন এবং বারো বছর যাবত্ শিক্ষার্থীেদর শিক্ষাদান করেন। এ সময় তিনি তার নিজস্ব পড়াশোনা চালিয়ে যান। শিক্ষক হিসেবে তার সম্মান বৃদ্ধি পায় এবং শিক্ষার্থীরা তার প্রতি আকৃষ্ট হয়। ১৭২৪ সালে তিনি হজ পালনের জন্য হেজাজ গমন করেন। তিনি সেখানে আট বছর অবস্থান করেন এবং আবু তাহের বিন ইবরাহিম কুর্দি মাদানির মতো পণ্ডিতদের কাছ থেকে হাদিস ও ফিকহ শিক্ষালাভ করেন। এ সময় তিনি মুসিলম বিশ্বের সকল প্রান্তের লােকের সংস্পর্শে আসেন এবং বিভিন্ন মুসিলম দেশের অবস্থা সম্পর্কে জানেত পারেন। এ সময় তিনি ৪৭ টি আধ্যাত্মিক বিষয় দেখতে পান, যা তার বিখ্যাত রচনা ‘ফুয়ুযুল হারামাইন’-এর বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়ায়। ১৭৩২ সালে তিনি দিল্লি ফের আসেন এবং ১৭৬২ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জীবনের বাকি সময় এখানে অতিবাহিত করেন ও লেখালেখি চালিয়ে যান। তার সবেচেয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, অধিবিদ্যাসহ সম্পূর্ণ ধর্মতাত্ত্বিক বিষেয়ও তিনি লিখেছেন। ইসলােমর প্রকৃত ও আদর্শরূপ বিষয়ে তার মত তিনি এসব লেখায় তুলে ধরেন। মারাঠা শাসন থেকে ভারতকে জয় করার জন্য তিনি আহমেদ শাহ দুররানির কাছে চিঠি লেখেন। তিনি আরবি থেকে ফারসিতে কুরআন অনুবাদ করেন, যাতে মুসলিমরা কুরআনের শিক্ষা বুঝতে পারে অবেশেষ ১৭৬২ খৃষ্টাব্দে তিনি মহান প্রতিপালেকর ডাকে সাড়া দিয়ে ইহজীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতে উচ্চ মর্যাদা দান করুন।