“ইসলামী মনোবিজ্ঞান” বইটির প্রথম অংশের কিছু কথাঃ মনােবিজ্ঞানের প্রকৃতি ও কতিপয় মৌল ধারণা (Nature of Psychology and some basic concepts) মনােবিজ্ঞানের সংজ্ঞা মনােবিজ্ঞান’-কে ইংরেজীতে বলা হয় Psychology শব্দটি গ্রীক শব্দ, Psyche (মন বা আত্মা) এবং Logos (বিজ্ঞান) থেকে সৃষ্টি হয়েছে। আরবীতে মনােবিজ্ঞানকে বলা হয় - : (ইলমুন্নাফ্স) এখানে শব্দটি বিজ্ঞান অর্থে এবং শব্দটি মন বা আত্মা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। সুতরাং আক্ষরিক অর্থে মনােবিজ্ঞানকে মন বা আত্মা সম্বন্ধীয় বিজ্ঞান বলা যায়। পূর্বে মনােবিজ্ঞানের সংজ্ঞা এভাবেই বলা হত। আধুনিক মনােবিজ্ঞানীদের মতে মনােবিজ্ঞান হল আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়াসমূহের বিজ্ঞান সম্মত পর্যালােচনা। মনােবিজ্ঞানের আলােচ্য বিষয় আত্মা বা মন, চেতনা ও প্রাণীর আচরণ হল মনােবিজ্ঞানের আলােচ্য বিষয়। মনােবিজ্ঞানে প্রাণীর চিন্তা-চেতনা, আবেগ, অনুভূতি, বিশ্বাস ইত্যাদি মানসিক প্রক্রিয়া এবং তার ফলে কি আচরণ প্রকাশ পেয়ে থাকে, আবার কোন ধরনের আচার-আচরণে কি মানসিক প্রক্রিয়া ঘটে থাকে তা নিয়ে বিজ্ঞান সম্মত আলােচনা পর্যালােচনা করা হয়ে থাকে। ইসলামী মনােবিজ্ঞান মনােবিজ্ঞানের উদ্দেশ্য যে কোন বিজ্ঞানের উদ্দেশ্য হল বিভিন্ন বস্তু বা ঘটনা বিশ্লেষণ করে সাধারণ নিয়ম আবিষ্কার করা। তদ্রুপ মনােবিজ্ঞানের উদ্দেশ্য হল প্রাণীর আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়া সম্বন্ধে বিচার বিশ্লেষণ করে কতগুলি সাধারণ সর্ববাদী সম্মত নিয়ম আবিষ্কার করা এবং ঐসব নিয়মাবলী দ্বারা মানুষের আচরণকে ব্যাখ্যা করা এবং এ জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে মানুষের জীবনকে সমৃদ্ধিশালী করা। মনােবিজ্ঞানের উপকারিতা। মনােবিজ্ঞানের জ্ঞান থেকে মানুষ নিজের আবেগ অনুভূতি ও আচরণ সম্বন্ধে জানতে পারে এবং নিজের কোন্ আচরণ অন্যের মধ্যে কি মানসিক প্রক্রিয়া সৃষ্টি করবে সে সম্বন্ধে অবহিত হতে পারে। এর ফলে নিজের আবেগ অনুভূতিকে সঠিক ভাবে পরিচালিত করে মানসিক স্বাস্থ্য অক্ষুন্ন রাখতে পারে এবং অন্যের সঙ্গেও উপযুক্ত আচরণ করতে পারে। এভাবে মনােবিজ্ঞান ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষকে প্রজ্ঞার সাথে চলতে সাহায্য করে। মনােবিজ্ঞান দ্বারা আচরণকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে সাহায্য পাওয়া যায়। মনােবিজ্ঞানের ইতিহাস অতীতে মনােবিজ্ঞান’ নামে বিজ্ঞানের কোন স্বতন্ত্র শাখা ছিল না। প্রথমে মনােবিজ্ঞান দর্শনেরই অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রাচীন গ্রীক দার্শনিকগণই তখন মনােবিজ্ঞান বিষয়ক কিছু কিছু আলােচনা করতেন। সেই প্রাচীন যুগের। মনােবিজ্ঞানে যাদের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য, তারা হলেন এরিস্টটল (Aristotle/xb.)। ৩৮৪-৩২২ খৃঃ পূঃ) প্লেটো (Plato/১৮) ৪২৭-৩৪৭। খৃঃ পূঃ) হিপােক্রেটিস (Hipocrates) ও সক্রেটিস (6। 2. খৃঃ পূঃ ৪৭০-৩৯৯)। এরিস্টটল তার রচিত De Anima (আত্মা সম্বন্ধে) নামক পুস্তকে আত্মা সম্বন্ধে তৎকালীন প্রচলিত ধারণা সমূহকে সুসংবদ্ধ করেন। হিপােক্রেটিস খৃষ্টপূর্ব ৪০০ সালে সর্ব প্রথম মানুষের ব্যক্তিত্ব নিয়ে আলােচনা করেন। প্লেটো এবং সক্রেটিসের লেখায়ও মানুষের মন বা আত্মা সম্পর্কে আলােচনা পাওয়া যায়। পরবর্তীকালে ফরাসী দার্শনিক ডেকার্ড (১৫৬৯-১৬৫০) দার্শনিক লক্ (১৬৩২-১৭০৪) জীব বিজ্ঞানী ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) প্রমুখ অনেকে মনােবিজ্ঞান সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সংক্ষিপ্ত সূচীপত্র- প্রথম অধ্যায়ঃ মনােবিজ্ঞানের প্রকৃতি ও কতিপয় মৌল ধারণা (Nature of Psychology and some basic concepts) দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ শিক্ষা মনােবিজ্ঞান (Educational Psychology) তৃতীয় অধ্যায়ঃ দাওয়াত মনােবিজ্ঞান (Da'wat Psychology) চতুর্থ অধ্যায়ঃ ইবাদত মনােবিজ্ঞান (Worship Psychology) পঞ্চম অধ্যায়ঃ আচরণ মনােবিজ্ঞান (Behaviour Psychology) ষষ্ট অধ্যায়ঃ afata taarifaceta (Family Psychology) সপ্তম অধ্যায়ঃ foney notifeata (Child Psychology) অষ্টম অধ্যায়ঃ চিকিৎসা মনােবিজ্ঞান (Clinical Psychology) নবম অধ্যায়ঃ সমাজ মনােবিজ্ঞান (Social Psychology) দশম অধ্যায়ঃ চরিত্র মনােবিজ্ঞান (Character Psychology)