সূচিপত্র * আমাদের ১১৩ নম্বর শরৎগুপ্ত রোড * নরলোবকে বানর * ঢাকার বুকে * প্রভাতি ভ্রমণ নাস্তি * মজারু কবিতার ফাঁদে * ঝংকার-এর দিনমান * বৃত্তাবদ্ধ যিশু : যুগেশচন্দ্র * ঝংকার : পলকে খাক হয়ে গেল * সেকালের ঢাকার বিনোদন * ফুল কাঁসা চকবাজারের ফুল্ল কথা * ফুলবাড়িয়ার জসীমউদ্দীন * চকবাজারের ইফতারির মেলা * সবুজ আলোর দেশ : রমনা * রমণীয় রমনা * ঢাকার বিখ্যাত জন্মাষ্টমীর উপাখ্যান * দুধ ও আফিম সমাচার * কান্দুপট্রির আলো আঁধার পেরিয়ে * ঝংকার ও আগমনীর বন্ধন * চকবাজার-আছে সবখানেতেই * ডিসেম্বরের আমরা তিনজন * কোনো এক আহসানউল্লাহ্র কথা * সিদ্দিকবাজার থেকে নবাবপুর * ‘আমি কি ভুলিতে পারি’ * পূর্ণিমা রাতের নির্ঝরিণী-গান * না-ফুরোনো কথা * ভিক্টোরিয়া পার্ক বনাম আন্টাঘরের ময়দান * সংযোজন
কেমন ছিল আজকের এই দুঃসহ ঢাকা নগর? মীজানুর রহমান তাঁর স্মৃতি ঘেঁটে তুলে এনেছেন সেই ছবি। বিশেষত, পুরান ঢাকা আর তার বাসিন্দাদের কথা বিবৃত করেছেন ঝরঝরে ভাষায়। ঢাকা কীভাবে ধীরে ধীরে তাঁর চোখের সামনে বদলে যাচ্ছে, তার চমৎকার বিবরণ দিয়েছেন। যে অঞ্চলের কথাই বলেছেন, সে অঞ্চলের ইতিহাস, ঐতিহ্য, নামকরণ আর বর্তমানের নানা প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন। স্বাদু গদ্য আর অসামান্য রসবোধের গুণে ঢাকা পুরাণ হয়ে উঠেছে এক অনন্য গ্রন্থ।
মীজানুর রহমানের জন্ম ১৩৩৭ বঙ্গাব্দের ৬ ফালগুন (১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ১৯ ফেব্রুয়ারি) বুধবার, বেলা চারটায়, এই উপমহাদেশের শিক্ষাদীক্ষায় ও বরেণ্য গুণীজনসমৃদ্ধ অভ্যগ্র জনপদ বিক্রমপুরের চতুষ্পাঠী তথা টোল-অধ্যুষিত ইছামতী-তীরস্থ নিভৃত বামুনপল্লী টোল-বাসাইলের এক উদার ধর্মশীল সুফি ভাবাপন্ন জ্ঞানপিপাসু পীরালী পীর পরিবারে। এঁদের যৌথ পদবি খন্দকার ও মুনশি, অর্থাৎ মূলত কর্মকর্তা ও শিক্ষকতাই এঁদের পথচলার কড়ি। সরকারি পদ থেকে অবসরপ্রাপ্ত একদা বড়লাট লর্ড কার্জনের (১৮৫৯-১৯২৫) স্বল্পকালীন খাশ মুনশি ওঁর দাদু খন্দকার ফজলুল করিমের (১৮৬১-১৯৪১) তাবে রয়েছে অবসরোত্তর ২১ বছরের শিক্ষকতার রেকর্ড। কিন্তু মীজানুর রহমানের কোনো রেকর্ড নেই এক ওই ১৪ বছর বয়সে সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়া ছাড়া। মীজানুর রহমান জীবদ্দশায় নিজের লেখা তিনটি বই প্রকাশ করেছেন। কমলালয়া কলকাতা ও কৃষ্ণ ষোলোই সম্পর্কে তাঁর পাঠকদের ধারণা আছে। অন্য বইটির নাম রক্তপিছল কাশ্মীর, এটিই তাঁর প্রথম প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ, ঢাকার দিদার পাবলিশিং হাউজ থেকে প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৬৬ সালে। তিনি বিভিন্ন সময়ে ঢাকার বিভিন্ন পত্রিকায় অনেক বিষয়ে অনেক নিবন্ধ-প্রবন্ধ লিখেছেন। ঢাকা বিষয়ক লেখাগুলো একত্র করে ঢাকা পুরাণ নামে একটি বই প্রকাশ করা হয়েছে তাঁর মৃত্যুর পরে। বইটির ভূমিকা লিখেছেন তাঁর আর্ট স্কুলের অন্যতম সহপাঠী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী। সেই ভূমিকাটি এই গ্রন্থে সংযুক্ত আছে। তাঁর রচনাসমগ্রের এই প্রথম খণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হলো তিনটি বই: কমলালয়া কলকাতা, কৃষ্ণ ষোলই ও ঢাকা পুরাণ।