বইটির লেখকের কথা আয়ুর্বেদ বাংলার অতি প্রাচীন শাস্ত্র। বাংলার পণ্ডিতগণ বৃক্ষলতাদি এবং বিভিন্ন দ্রব্যের গুণাগুণ অনুধাবন করে সংমিশ্রণে বিভিন্ন রােগের জন্য বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতের ব্যবস্থা করেন। শুধু তাই নয় এক একটি ওষুধে আবার বিভিন্ন অনুপানসহ সেবন করতে হয়, যেমন—একই মকরধ্বজ মধু, তুলসী পাতার রস, পান পাতার রস, আদার রস প্রভৃতি অনুপান সহযােগে সেবন করানাে হয়। প্রকৃতিতে যেসব হাজার হাজার গাছগাছালি, লতা-পাতা, গুল্ম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে এদের গুণাগুণ আবিষ্কার করেছিলেন আয়ুর্বেদিক পণ্ডিতগণ। এসব লতা-পাতা চিনতে হবে, জানতে হবে, তাহলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে তা হাজার সমস্যার সমাধান করতে পারে। আগেরকার দিনে বাড়ির বয়স্ক পুরুষ বা মহিলারা ও সাধু-সন্ন্যাসী এবং বুজুর্গ ব্যক্তিগণ নানা লতা-পাতার গুণাগুণসহ অনেক কিছু জানতেন। তাই সে আমলে কথায় কথায় বাড়িতে ডাক্তার ডাকার প্রয়ােজন হতাে না। ছােট ছেলে-মেয়েদের বা অন্য কারও সর্দি-কাশি, জ্বর হয়েছে সামান্য তুলসী পাতার রস মধুদিয়ে মিশিয়ে খাওয়ালেই উপকার হতাে এবং প্রবল কাশির জন্য বাসক পাতার রস মধু দিয়ে পান করতাে। আজকাল সেসব বিষয়ে সাধারণ মানুষ প্রায় অজ্ঞ। তাই আমি প্রচুর পরিশ্রম করে বিভিন্ন লতাপাতার পরিচয়, ক্রিয়াদি চিন্তাভাবনা করে সন্নিবেশিত করতে প্রয়াসী হয়েছি। এটি যেমন সাধারণ মানুষের প্রতিদিনের কাজে লাগবে ও তাদের কাছে আদৃত হবে। বলে আমার বিশ্বাস। যাদের জন্য গ্রন্থটি রচিত হলাে, তাদের সবার প্রয়ােজন মেটাতে সক্ষম হলে গ্রন্থাকারের এবং আমার শ্রম সার্থক হবে।