বাংলা ভাষার পরিচর্যা লেখককে কিছু লিখতে হয় বলে লিখি। তাই শাদাব’ বাক্যালােচনটাই করি। লেখার সঙ্গে সােনার মহরের সম্পর্ক যতাে কমই থাক না কেনাে, পরশমণি হওয়ার ধারণা জন্মেই যায়। বস্তুত ভালাে লেখা পরশমণির সগােত্র বটে! যিনি লিখেন, তিনি যা হবার হন। যিনি পড়েন তারও সণত্বাপ্রাপ্তি ঘটে। গুণ থাকলে অবদানের কথা আসে। ভাণ্ডারে থাকতে যিনি না দেন তিনি কৃপণ। তবে সাহিত্যের দান গ্রহণ করানাে সহজ নয়। প্রকাশক প্রত্যাখ্যান করেন। চেনা লােক অবজ্ঞা দেখান। বন্ধুদের বই দিলে তারা না পড়ে আড়ালে হাসেন এবং এসব লেখা পড়ে সময় নষ্ট করতে চান না। একমাত্র লেখকের বাসারের মতাে মুদী-বন্ধু আর কাদির আঙ্কেলের মতাে ব্যাবসায়ী থাকলে বিনা পয়সার দান সাদরে গ্রহণ করেন পাতা ছিড়ে মশলা বেচবার জন্য। মায়ের কাছে কানা ছেলেও পদ্মালােচন। প্রকৃতির দেওয়া অন্ধ স্নেহ না থাকলে অপত্যরা অকালে মারা পড়তাে এবং সংসার হতাে জনবিরল। ঠিক তেমনি নিজের লেখা সর্বোকৃষ্ট মনে না করলে অমূল্য সময় ব্যয় করে কেউ লিখতাে না। আমি গাল-গল্প ঝারি না। লেখককে লিখতে হয় বলে লিখি, ওই লেখা বিকোলেইতাে দু’টা ভাত গিলি’ পাঠক আমার লেখা ‘খেলে’ প্রকাশক বেশি করে আমার লেখা ছাপবে। তখন আমার ইহকাল ও পরকালে কিছু ‘দানা-পানি’ জুটবে। লেখা ভালাে হলেই তাে পাঠক তা ‘খাবে’। অতএব, গাল-গল্প ঝেরে লাভ কী? ওই করেছি, সেই করেছি, তেন করেছি তাই লেখার কথাই বলি, আপনাদের জন্যই লিখেছি। ভালাে লাগলে পড়ন, ‘গিলুন। লেখালেখির শীর্ষচূড়ায় আরােহণ করুন। এই বইতে আধুনিকতার ছোঁয়া রয়েছেতাে! তাই একটু নতুন নতুন লাগবে।
১৯৮৯ সালের ১৯ আগস্ট নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার একটি অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। যে পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন সেখানে ইসলাম শিক্ষাকে বেশি একটা গুরুত্ব দেয়া হতো না। কিন্তু তাঁর নানা ছিলেন বিখ্যাত আলেম মৌলবি সুলতান। মা ছিলেন কোরআনের হাফেজ। মায়ের কাছেই কোরআন ও অন্যান্য প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। তারপর পিতার আদেশে স্কুলে সপ্তত শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। কিন্তু তাঁর প্রচণ্ড ঝোঁক ছিল ইসলাম শিক্ষার দিকে। স্বপ্ন ছিল বড় মাওলানা হওয়ার। একদিন পরিবারের কাউকে না জানিয়ে এলাকার এক আলেমের সঙ্গে মুন্সিগঞ্জ চলে আসেন। সেখানে কোলাপাড়ার এক কওমি মাদরাসায় পড়াশোনা শুরু করেন। মাওলানা পড়ার মাঝমাঝি সময়ে কোরআনের হেফজ শেষ করেন। তিনি একাধারে হিফজ, দাওরা (মাওলানা) ও ইফতা (মুফতি) পড়া শেষ করেছেন। আরবি ভাষা ও ইসলাম শিক্ষার পাশাপাশি তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ওপর পড়া ও গবেষণা শুরু করেন। ২০০৮ সালে সাংবাদিকতায় ‘রিপোর্টিং ও ফিচার লিখন প্রশিক্ষন’ ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন। ২০০৯ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ওপর সঙ্কলিত তাঁর প্রথম বই ‘কলমচর্চা’ প্রকাশিত হয়। তার একবছর পেেরই ২০১০ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর ঐতিহাসিক সঙ্কলন ‘কালের সেরা ভাষণ।’ বিখ্যাত এই প্রতিভান্বিত আলেম লেখক ও গবেষকের রচিত, অনূদিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলÑ ধর্মের জয়গান (২০০৯), দরসে তিরমিজি {৪-খণ্ড অনুবাদ ৪-খণ্ড মৌলিক, ৮-খণ্ডে সমাপ্ত} (২০১৩-২০১৮), আল কালামুল মাহমুদ ফি হল্লি সুনানে আবি দাউদ {৭-খণ্ডে সমাপ্ত} (২০১৭), শরহে ইবনে মাজাহ (২০১৮), তাকরিরে মুয়াত্তা মালিক (২০১৮), তাকরিরে মুয়াত্তা মুহাম্মাদ (২০১৮), শরহে মুসলিম {৭-খণ্ডে সমাপ্ত} (২০১৯), আত-তাশরিহুল হাবি শরহে ত্বহাবি (২০১৯)। এ ছাড়া ছোট-বড় তাঁর ৫০ টিরও অধিক বই বাজারে রয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ -এ ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ফ্রিল্যান্সার গবেষক হিসেবে নিয়োজিত থেকে বিভিন্ন গবেষণা প্রবন্ধ ও বিশ্বকোষ প্রজেক্টে কাজ করে যাচ্ছেন। গত একযুগ ধরে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বিভিন্ন কলাম ও প্রবন্ধ লিখে আসছেন। বর্তমানের দৈনিক যুগান্তরে রিপোর্টার পদে নিয়োজিত আছেন।