"মুহাম্মদ : মহানবীর (স:) জীবনী" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: ৬১০ খৃষ্টাব্দের দিকে রমযান মাসে হিজাজের মক্কা নগরীতে এক আরব বণিক এমন এক অভিজ্ঞতা লাভ করেন যা শেষ পর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাসের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে। ইনিই মুহাম্মদ ইবন আব্দাল্লাহ যার মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের আবির্ভাব। আরবে তখন চলছিল জাহিলিয়াহ্ বা অজ্ঞতার যুগ; বিভিন্ন গােত্র লিপ্ত ছিল পারস্পরিক হানাহানিতে। দুর্বল অসহায়েরা শােষিত হচ্ছিল আগ্রাসী পুঁজিবাদের অধীনে। এক ধরনের আধ্যাত্মিক অস্থিরতা কুরে-কুরে খাচ্ছিল সমগ্র আরব বিশ্বকে। এমনি এক পরিস্থিতিতে শান্তি ও সমন্বয়ের ধর্ম ইসলামের বাণী প্রচারের দায়িত্ব পান মুহাম্মদ (স:)। প্রায় একক প্রয়াসে ঐ অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে এনেছিলেন তিনি, প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এক নতুন আদর্শের। কিন্তু মােটেই সহজ ছিল না এ কাজ। তাঁকে মােকাবিলা করতে হয়েছে অসংখ্য বাধা বিপত্তির- ঘরে বাইরে। মুহাম্মদের (স:) সেই অসাধারণ জীবন কাহিনী তুলে ধরেছেন ক্যারেন আর্মস্ট্রং তার মুহাম্মদ : আ বায়ােগ্রাফি অব দ্য প্রফেট গ্রন্থে। মহানবীর (স:) আগমনের কারণ বিশ্লেষণ করেছেন তিনি, সেই সঙ্গে তুলে ধরেছেন বর্তমান বিশ্বে ইসলামের নামে গড়ে ওঠা বিভিন্ন মৌলবাদী গােষ্ঠীর কর্মকান্ডে ধর্মের মৌল বিষয়ের বিরােধিতার দিকটি; ব্যাখ্যা দিয়েছেন আধুনিক বিশ্বের প্রেক্ষাপটে ইসলামকে অনুসরণ করার গুরুত্ব। এই গ্রন্থে মহানবীর (স:) জীবনের প্রতিটি পর্যায় যুক্তির আলােকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যার ফলে এটি মুসলিম তাে বটেই, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর কাছেও প্রয়ােজনীয় বলে বিবেচিত হচ্ছে।
ক্যারেন আর্মস্ট্রং (জ. নভেম্বর ১৪, ১৯৪৪) একজন ইংরেজ লেখিকা; যিনি ইসলাম, ইহুদিবাদ, খ্রিস্ট ধর্ম এবং বৌদ্ধ ধর্ম নিয়ে লেখেন। আর্মস্ট্রং ইংল্যান্ডের ওয়ারসেস্টারশায়ারের উইল্ডমুরে একটি আইরিশ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬২ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত গির্জার সেবিকা তথা নান ছিলেন। বর্তমানে একজন একেশ্বরবাদী বুদ্ধিজীবী হিসেবে সুপরিচিত। তিনি একটি অভিনব তত্ত্বের অবতারণা করেছেন যাতে বলা হয়েছে মানব সভ্যতার বিকাশের আবশ্যকীয় ফলস্বরূপ ধর্মগুলোর সৃষ্টি হয়েছে।