বিষয়: সবর ও শােকর.............১ প্রথম পরিচ্ছেদ / সবর.............২ সবরের হাকীকত .............৬ সবরের বিভিন্ন নাম.............১৫ শক্তি ও দুর্বলতার দৃষ্টিতে সবরের প্রকারভেদ.............১৬ সর্বাবস্থায় সবরের আবশ্যকতা .............২০ সবর হাসিল করার উপায়.............৩৪ দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ / শােকর .............৪৪ শােকরের সংজ্ঞা.............৪৮ ‘আল্লাহর শােকর’-এর তাৎপর্য.............৫৫ আল্লাহ পাকের পছন্দ-অপছন্দের পরিচয়.............৫৮ নেয়মতের হাকীকত ও শ্রেণীভেদ .............৬৭ পার্থিব সম্পদের নেয়মত.............৬৯ নেয়ামতের মূল্যমান.............৭১ হিতকর ও অহিতকর বস্তু.............৭১ প্রকৃত নেয়মত.............৭৩ পারলৌকিক সৌভাগ্য.............৭৬ পারলৌকিক সৌভাগ্য অর্জনের পার্থিব উপকরণ.............৭৭ (১) নফসের সহিত সংশ্লিষ্ট চারি প্রকার বিষয় .............৭৭ (২) দেহের সহিত সংশ্লিষ্ট চারি প্রকার বিষয়.............৭৮ (৩) এমন বিষয় যাহা দেহের বহির্বিভাগে অবস্থান করিয়া দেহের হিতসাধন করে.............৮০ (৪) এমন বিষয় যাহা উপরে বর্ণিত বিষয়সমূহকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করে.............৮১ প্রথম শ্রেণীর হেদায়েত প্রাপ্তি.............৮২ দ্বিতীয় শ্রেণীর হেদায়েত প্রাপ্তি.............৮৩ তৃতীয় শ্রেণীর হেদায়েত প্রাপ্তি.............৮৩ রুশদ বা সদিচ্ছা.............৮৪ তাশদীদ বা সৎকর্ম সম্পাদনের চেষ্টা.............৮৫ তাঈদ বা সাহায্য.............৮৫ শােকর আদায়ে অবহেলা.............৮৬ মানবদেহে আল্লাহর নেয়মত.............৮৮ শােকর আদায়ে অভ্যস্থ হওয়ার উপায়.............৯১ একই বিষয়ে সবর ও শােকরের সহাবস্থান.............৯৩ পার্থিব বিপদে শােকর ও পারলৌকিক ছাওয়াবের প্রত্যাশা.............৯৭ পার্থিব বিপদের ছাওয়াব সম্পর্কে হাদীস ও মহাপুরুষগণের বাণী.............১০৩ মুসীবত কামনা করা.............১১০ প্রসঙ্গ : সবর ও শােকর তুলনামূলক আলােচনা.............১১৩
বিখ্যাত মুসলিম দার্শনিক হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহ., সংক্ষেপে ইমাম গাজ্জালী ছিলেন একজন সুফিসাধক ও মুসলিম বিশ্বের অন্যতম শিক্ষাবিদ, যিনি তাঁর দর্শন ও চিন্তাধারা বিশ্ব মুসলিমদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে ইসলামের ইতিহাসে এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন। তাঁর পারিবারিক ব্যবসা সুতা সংক্রান্ত হওয়ায়, সেখান থেকে তার নাম গাজ্জালী হয়েছে বলে ধারণা করা হয়, যেহেতু 'গাজ্জাল' শব্দের অর্থ সুতা। ১০৫৮ খ্রিস্টাব্দে (হিজরি ৪৫০ সাল) ইমাম গাজ্জালী ইরানের খোরাসান প্রদেশের অন্তর্গত তুস নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন এবং এই তুস নগরীতেই তার শৈশবকাল ও শিক্ষাজীবন অতিবাহিত হয়। তিনি ইসলামের স্বর্ণযুগে জন্ম নেন, যে যুগে শিক্ষা, বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ে মুসলমানরা অনেক এগিয়ে গিয়েছিলো। একইসাথে বিস্তার লাভ করেছিলো পাশ্চাত্য ও গ্রিক দর্শনেরও। ইমাম গাজ্জালী এসকল বিষয়েই দীক্ষা লাভ করেন এবং বিশেষ করে ঐ যুগের বিখ্যাত ধর্মতত্ত্ববিদ আলেম ইমামুল হারামাইন আল জুয়াইনির কাছ থেকে ধর্মের বিভিন্ন বিষয়ে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। মুসলিম দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, ফিকহশাস্ত্র ইত্যাদি বিষয়ে তিনি ছিলেন অত্যন্ত পারদর্শী । জ্ঞান-বিজ্ঞানের তীর্থস্থান বাগদাদের সেরা বিদ্যাপীঠ নিযামিয়া মাদ্রাসায় তিনি অধ্যাপনা করেন। তিনি তৎকালীন বাদশাহর দরবারেও আসন লাভ করেন। তবে সুফিবাদ ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানের বিষয়ে তীব্র আকর্ষণ থাকায় তিনি জ্ঞান আহরণের জন্য দেশ-বিদেশ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন ও নানা বিষয় সম্পর্কে অগাধ জ্ঞান অর্জন করেন। ইমাম গাজ্জালী রহ. বই রচনার মাধ্যমে তাঁর অর্জিত এসকল জ্ঞান মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছেন। হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহ. এর বই সমূহ-তে তিনি আলোচনা করেছেন সুফিবাদ, ইসলামি দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব ইত্যাদি বিষয় নিয়ে, এবং তাঁর রচিত বইয়ের সংখ্যা চার শতাধিক। হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহ. এর বই সমগ্র এর মধ্যে 'আসমাউল হুসনা', 'মিশকাতুল আনোয়ার', 'ফাতাওয়া', 'মিআর আল ইলম', 'হাকিকাতুর রুহু', 'দাকায়েকুল আখবার' ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ১১১১ খ্রিস্টাব্দে (৫০৫ হিজরি) তিনি নিজ জন্মভূমি তুস নগরীতে মৃত্যবরণ করেন। ইসলামের ইতিহাসে তিনি চিরস্মরণীয় একজন মনীষী।