সূচিপত্র * খ্যাতি ও রিয়ার নিন্দা * খ্যাতিপ্রীতির নিন্দা * জাহ্ এর অর্থ এবং উহার হাকীকত * জাহ পছন্দনীয় হওয়ার কারণ * মাল অপেক্ষা জাহ অধিক কাম্য হওয়ার কারণ * প্রথম কারণ * দ্বিতীয় কারণ * তৃতীয় কারণ * জাহ ও মালের মোহাব্বতে আধিক্যের উপকরণ * প্রথম কারণ : ভয় দূর করা * দ্বিতীয় কারণ * মওজুদাতের প্রকার ভেদ * বিদ্যাগত প্রাধান্যের বাসনা * প্রকৃত শ্রেষ্ঠত্ব ও কাল্পনিক শ্রেষ্ঠত্ব * এলেমের প্রকার ভেদ * জাহ্ প্রিয়তার মন্দ দিক ও ভাল দিক * প্রসঙ্গ : মানুষের আসন স্থাপন * প্রশংসায় আনন্দিত হওয়ার কারণ * বর্ণিত কারণ সমূহের চিকিৎসা * যশপ্রীতির চিকিৎসা * যশপ্রীতির এলমী চিকিৎসা * যশপ্রীতির আমলী চিকিৎসা * যশ-খ্যাতির মোহ দূর করিবার উপায় * প্রশংসাপ্রীতির চিকিৎসা * নিন্দাকে ঘৃণা করার চিকিৎসা * প্রশংসা ও নিন্দার ক্ষেত্রে মানুষের অবস্থার প্রকার ভেদ * রিয়া * রিয়ার নিন্দা * রিয়া সম্পর্কিত রেওয়ায়েত * রিয়া সম্পর্কে মহাজনদের উক্তি * রিয়ার হাকীকত * এমন সব বিষয় যাহাতে রিয়া বিদ্যমান * দেহ দ্বারা রিয়া * আকার-আকৃতি ও পোশাকের মাধ্যমে রিয়া * কথার মাধ্যমে রিয়া * আমলের মাধ্যমে রিয়া * সাথী-সঙ্গীদের সঙ্গে রিয়া * রিয়ার নিসিদ্ধতা ও বৈধতা * এবাদতের গুণ দ্বারা রিয়া করা * রিয়ার কারণে সৃষ্ট মনের আনন্দের প্রকার ভেদ * এমন গোপন ও প্রকাশ্য রিয়া যাহা আমলকে বাতিল করিয়া দেয় * অন্তর হইতে রিয়া দূর করার উপায় * রিয়ার চিকিৎসা দুইটি পদ্ধতি * প্রথম পদ্ধতি : রিয়ার মূল ও শিকড় উৎপাটন * রিয়ার বিশেষ চিকিৎসা * রিয়ার শিক্ষাগত চিকিৎসা * দ্বিতীয় পদ্ধতি : রিয়ার অনিষ্ট দমন করা * রিয়ার বিপদাপদ * রিয়ার অনিষ্ট দমন * ওয়াসওয়াসার কারণে শাস্তি দেওয়া হইবে না * রিয়া হইতে আত্মরক্ষাকারীদের স্তর * আলোচ্য স্তর সমূহের উদাহরণ * শয়তান হইতে আত্মরক্ষার চেষ্টা করা হইবে কি-না * পার্থিব উপকরণ তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী নহে * শয়তান হইতে সতর্ক হওয়ার পদ্ধতি * এবাদত প্রকাশ করা যেই ক্ষেত্রে জায়েজ * মূল এবাদত প্রকাশ করা * প্রকাশ্য আমলের শর্ত * রিয়া এক সর্বনাশা ব্যাধি * আমল করার পর তাহা প্রকাশ করা * গোনাহ গোপন করার বৈধতা এবং মানুষকে গোনাহ সম্পর্কে * অবহিত করার নিন্দা * রিয়ার ভয়ে এবাদত বর্জন করা * আমল দুই প্রকার * দেহের সহিত সংশ্লিষ্ট এবাদত * প্রথম অবস্থা * দ্বিতীয় অবস্থা * তৃতীয় অবস্থা * রিয়ার ভয়ে আমল বর্জনকারীর উদাহরণ * আমল ত্যাগ করা শয়তান হইতে রক্ষা পাওয়ার উপায় নহে * বুজুর্গানে দ্বীন কর্তৃক আমল বর্জনের ঘটনা * মানুষের সহিত সংশ্লিষ্ট এবাদত * শাসনক্ষমতা গ্রহণ করিতে বারণ এবং উহার প্রতি উৎসাহ প্রদান * পরস্পর বিরোধী নহে * বিচারক * ওয়াজ, ফতোয়া ও শিক্ষকতা * ওয়ায়েজের সংজ্ঞা * এখলাস ও সততার পরিচয় * অপরকে দেখিয়া আমলে উৎসাহিত হওয়া * বর্ণিত ওয়াসওয়াসাসমূহের চিকিৎসা * এবাদতের আগে-পরে ও এবাদতের সময় মানুষের কর্তব্য * নফল দ্বারা ফরজের ক্ষতিপূরণ
বিখ্যাত মুসলিম দার্শনিক হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহ., সংক্ষেপে ইমাম গাজ্জালী ছিলেন একজন সুফিসাধক ও মুসলিম বিশ্বের অন্যতম শিক্ষাবিদ, যিনি তাঁর দর্শন ও চিন্তাধারা বিশ্ব মুসলিমদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে ইসলামের ইতিহাসে এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন। তাঁর পারিবারিক ব্যবসা সুতা সংক্রান্ত হওয়ায়, সেখান থেকে তার নাম গাজ্জালী হয়েছে বলে ধারণা করা হয়, যেহেতু 'গাজ্জাল' শব্দের অর্থ সুতা। ১০৫৮ খ্রিস্টাব্দে (হিজরি ৪৫০ সাল) ইমাম গাজ্জালী ইরানের খোরাসান প্রদেশের অন্তর্গত তুস নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন এবং এই তুস নগরীতেই তার শৈশবকাল ও শিক্ষাজীবন অতিবাহিত হয়। তিনি ইসলামের স্বর্ণযুগে জন্ম নেন, যে যুগে শিক্ষা, বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ে মুসলমানরা অনেক এগিয়ে গিয়েছিলো। একইসাথে বিস্তার লাভ করেছিলো পাশ্চাত্য ও গ্রিক দর্শনেরও। ইমাম গাজ্জালী এসকল বিষয়েই দীক্ষা লাভ করেন এবং বিশেষ করে ঐ যুগের বিখ্যাত ধর্মতত্ত্ববিদ আলেম ইমামুল হারামাইন আল জুয়াইনির কাছ থেকে ধর্মের বিভিন্ন বিষয়ে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। মুসলিম দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, ফিকহশাস্ত্র ইত্যাদি বিষয়ে তিনি ছিলেন অত্যন্ত পারদর্শী । জ্ঞান-বিজ্ঞানের তীর্থস্থান বাগদাদের সেরা বিদ্যাপীঠ নিযামিয়া মাদ্রাসায় তিনি অধ্যাপনা করেন। তিনি তৎকালীন বাদশাহর দরবারেও আসন লাভ করেন। তবে সুফিবাদ ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানের বিষয়ে তীব্র আকর্ষণ থাকায় তিনি জ্ঞান আহরণের জন্য দেশ-বিদেশ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন ও নানা বিষয় সম্পর্কে অগাধ জ্ঞান অর্জন করেন। ইমাম গাজ্জালী রহ. বই রচনার মাধ্যমে তাঁর অর্জিত এসকল জ্ঞান মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছেন। হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহ. এর বই সমূহ-তে তিনি আলোচনা করেছেন সুফিবাদ, ইসলামি দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব ইত্যাদি বিষয় নিয়ে, এবং তাঁর রচিত বইয়ের সংখ্যা চার শতাধিক। হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহ. এর বই সমগ্র এর মধ্যে 'আসমাউল হুসনা', 'মিশকাতুল আনোয়ার', 'ফাতাওয়া', 'মিআর আল ইলম', 'হাকিকাতুর রুহু', 'দাকায়েকুল আখবার' ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ১১১১ খ্রিস্টাব্দে (৫০৫ হিজরি) তিনি নিজ জন্মভূমি তুস নগরীতে মৃত্যবরণ করেন। ইসলামের ইতিহাসে তিনি চিরস্মরণীয় একজন মনীষী।