"ভূমি জরিপ পদ্ধতি ও টেকনিক্যাল রুলস" বইয়ের ভূমিকার অংশ থেকে নেয়া: একজন মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সকল কর্মকাণ্ডের নিরন্তর সঙ্গী ভূমি। এ মূল্যবান ভূমির মালিকানা নিষ্কন্টক ও নিঝঞ্জাটভাবে উপভােগ করা মানুষের একটি ন্যায্য প্রত্যাশা। কিন্তু ভূমির রেকর্ড সংক্রান্ত কিছু জটিলতা এ বিষয়টিকে সাধারণ মানুষের কাছে করে রেখেছে দুর্বোধ্য। সঠিক রেকর্ড প্রস্তুতের জন্য জরিপ কাজে দক্ষ লােক পাওয়া দুষ্কর এবং রেকর্ড প্রস্তুতিও একটি সুদীর্ঘ কালের কর্মকান্ড হিসেবে বিবেচিত হয়, যার ফলে এর কার্যকারিতা ক্ষুন্ন হয়। এ বিষয়টিতে জ্ঞানার্জনের একটি অন্যতম প্রতিবন্ধক হল ভূমি জরিপ পদ্ধতি বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনাসহ বাজারে প্রামাণ্য পুস্তকের অভাব। অথচ সুষ্ঠু ভূমি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতের অন্যতম উপায় হল ভূমি জরিপ পদ্ধতি তথা ভূমির খতিয়ান ও নকসা প্রণয়নের কার্যক্রম সম্পর্কে সৃষ্ট ধারণা অর্জন। জরিপ কর্মী, জরিপ বিভাগীয় কর্মকর্তা, ভূমি ব্যবস্থাপনায় জড়িত কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং ভূমি সম্পর্কে ধারণা অর্জনে ইচ্ছুক সাধারণ জনগণ সকলের জন্যই এ কথা সমভাবে প্রযােজ্য। উপরােক্ত বিষয়টি বিবেচনা করে লেখকদ্বয়ের রচিত ‘ভূমি জরিপ পদ্ধতি ও টেকনিক্যাল রুল' শীর্ষক পুস্তকের পাণ্ডুলিপি আমি আগ্রহ সহকারে পড়েছি। আমি অনুভব করেছি, লেখকদ্বয় মাঠকর্মে ভূমি ব্যবস্থাপনা ও জরিপ সংক্রান্ত দায়িত্বে নিয়ােজিত থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য কঠোর অধ্যয়নের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞানের শ্রমসাধ্য প্রতিফলন ঘটিয়েছেন পুস্তকটি রচনায়। পুস্তকটিতে অন্তর্ভুক্ত ভূমি রেকর্ড প্রণয়ন সংক্রান্ত আপাতঃ জটিল বিষয়াদির প্রাঞ্জল ও সহজবােধ্য উপস্থাপনা পুস্তকটিকে পাঠক সমাদৃত করবে এবং সময়ের চাহিদা মেটাতে কাংখিত ভূমিকা রাখবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। আমি এ প্রশংসনীয় উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই।
অমৃত বাড়ৈ ১৯৫৯ সালে গােপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া থানার নারিকেল বাড়ি গ্রামে জনুগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮১ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে গণিত শাস্ত্রে প্রথম শ্রেণীতে স্নাতক ডিগ্রি লাভ। করেন। ১৯৮২ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে গণিত শাস্ত্রে প্রথম শ্রেণীতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পান। ১৯৮৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি বি এ এফ শাহীন কলেজ, কুর্মিটোলা -এর গণিত বিষয়ের প্রভাষক পদে নিয়ােগ পান। সেখানে প্রায় এক বছর শিক্ষকতা করার পর ১৯৮৬ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে যােগদান করেন। ১৯৯৪ সালে চাকরিরত অবস্থায় তিনি নেদারল্যান্ডস সরকারের বৃত্তি নিয়ে নেদারল্যান্ডের আটিসি নামের শিক্ষায়তন থেকে পােস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন ফটোগ্রামেট্রি এ অংশ গ্রহণ করে সনদপত্র পান। এছাড়াও তিনি আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ অনেক দেশ ভ্রমণ করেছেন। দাপ্তরিক কাজ করতে গিয়েই তিনি লেখালেখিতে জড়িয়ে পড়েন। চাকরিতে টিকে থাকতে তিনি অনেক সংগ্রাম করেছেন। তাঁর কাজের ধারা গতিশীল। এর আগেও লেখকের কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়েছে। আশা করা যায় লেখকের এ বইয়ের লেখার মাত্রা ভিন্ন পর্যায়ের। এ বই প্রকাশের পর পাঠকরা আরাে বেশি করে বঙ্গবন্ধুকে জানতে আগ্রহী। হবেন । দেশের ইতিহাস জানবার আগ্রহ বাড়বে অনেকের। একটা কঠিন কাহিনী এত সহজভাবে উপস্থাপন করার এ কঠিন কাজটি করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি নরসিংদী জেলার জেলা প্রশাসক হিসেবে কর্মরত আছেন।