ভূমিকা বাংলা ভাষার কবিরা কি খুব বেশি পরিমাণে প্রেমের কবিতা লেখেছেন? মনে হয় না। বাঙালির জীবনে দুঃখ দারিদ্র্য আর অপ্রাপ্তির ঘটনাই বেশি। তারা দরাজ হন্তে কিছু পাবার বদলে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন বেশি। সেই হারানোর ঘটনা বাঙালি কবি গীতিকারদেরও ছুঁয়ে গেছে অধিক পরিমাণে। ফলে তাদের লেখায় যত অপ্রাপ্তির হাহাকারের কথা আছে ততবেশি কিন্তু প্রাপ্তির কথা নেই। তাদের জীবনে আনন্দটা ছিল সাময়িক আর দুঃখ বেদনাটা ছিল চিরস্থায়ী। তাইতো তাদের চর্চায় আন্দোলন সংগ্রাম আর কষ্টের কথাটা এত হৃদয়গ্রাহী যে তার তুলনায় প্রেমের কথাটা নিতান্তই চটুল। বাংলাভাষা ও সাহিত্যের পুরোপুরি চর্চা যতদিন থেকে শুরু ততদিন থেকেই বাঙালি ছিল পরাধীন। ফলে পরাধীনতার নাগপাশ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য বাঙালি তরুণরা বিপ্লবী হয়েছেন, ঠিক সে পরিমাণে বাঙালি কবিরা বিদ্রোহের কবিতা লেখেছেন। প্রেম-প্রাপ্তির ঘটনা ঘটলেও সেটা তাদের জীবনে খুব বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করেনি। প্রেম চর্চার জন্য সমৃদ্ধি থাকা লাগে, হাতে বিপুল সময় থাকা লাগে। রাজদুহিতার প্রেমের কথা শুনে যত ভাল লাগে ঘর গৃহস্থালির আইপৌড়ে গল্প মোটেই সেরকম ভাল লাগে না। অথচ আমাদের এখানে রাজা মহারাজা আর জমিদারদের প্রতি মানুষের বিরাগের অন্ত ছিল না। ফলে বাঙালি কবিরা তাদের নিয়েও কোর রকম প্রেম-গীতকা রচনা করেনি। ফলে প্রেমগাথার দিক থেকে আমরা দরিদ্রই রয়ে গেছি। কবিতার বাজার মন্দা তবুও আলেয়া বুক ডিপো স্বত্ত্বাধিকারী জনাব কাওছার আহমেদ প্রেমের কবিতা সংকলন প্রকাশে একটি সাহসী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তার এই সাহসিক কর্মের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। কামাল ফয়েজী