ফ্ল্যাপে লিখা কথা বাস্তবতার নিরীখে, সত্যি বলতে কি ব্যাপারটা শুরু হয়েছিল সোফি মলের এইমেনেমে আসার পরপরই। হয়তো এটাও সত্যি, যে কোনদিনই সবকিছু বদলে যেতে পারে। আসলে কয়েক ডজন ঘন্টার প্রতিক্রিয়াই চলে সারা জীবন। আর ঐ কয়েক ঘন্টায় যা ঘটে, যেমন অগ্নিদগ্ধ হতে পারে কোনো বাড়ি, তার বেঁচে যাওয়া জিনিসপত্র- ভাঙা ঘড়ি, সই করা একটা ছবি, আধাপোড়া আসবাবপত্র- ধ্বংসস্তূপ থেকে অবশ্যই খুঁটে-খুঁটে তোলা হয়, আর বেছে নেয়া হয়, সংরক্ষণ করা হয়, হিসাব করা হয়।
ছোট ছোট ঘটনা, সাধারণ জিনিস, বিনষ্ট হয় আর তারপর আবার গড়ে তোলা হয়। তখন অন্যরকম অর্থবহ হয়ে উঠে সব। হঠাৎ করেই ওসব জিনিস হয়ে যায় কোনো কাহিনীর আনকোরা উপজীব্য, শ্বেত শুভ্র অস্থি কাঠামো ... তার পরে এটা বলতেই হবে যে, সোফি মল এইমেনেমে আসার পরই সব ঘটেছিলো, এভাবেই দেখতে হবে ... ।
যুক্তিতর্ক উঠতে পারে এসব শুরু হয়েছিলো হাজার হাজার বছর আগে। মার্কসবাদীরা আসার অনেক আগে। ব্রিটিশরা মালাবারে পদার্পণের আগে, ডাচরা আসার আগে, ভাস্কো দা গামা আসার আগে, জ্যামোরিনরা কালিকট দখলের আগে, খৃষ্ট-ধর্ম নৌকায় চেপে কেরালায় আসার আগে, টি ব্যাগ থেকে চা ছড়িয়ে পড়ার মতো। আসলে এসব শুরু হয়েছিলো যখন ভালোবাসার নিয়মগুলো তৈরি হয়েছিলো, আর কেমন করে, কতটুকু? - এই প্রশ্নগুলো যখন উঠেছিল। যাই হোক বাস্তবতার বিচারে এক আশাহীন বাস্তব পৃথিবীতে ... ওটা ছিলো একটা আকাশীনীল দিন ডিসেম্বর উনসত্তরের (উনিশটা উহ্য)। একটা আকাশীনীল প্লেমাউথ, লেজের পাখনায় সূর্যরশ্মির ঝিলিক তুলে কচি ধানের ক্ষেত আর প্রাচীন রাবার বাগান পেরিয়ে ছুটে চলেছিলো কোচিনের দিকে ....
আবীর হাসান : একাধারে সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বিজ্ঞান লেখক, অনুবাদক ও কবি। জন্ম ১৫ জুন ১৯৫৯। লেখাপড়া ঢাকায় এবং ইতালিতে। চারুকলা নিয়ে পড়েছেন কিন্তু আঁকেন না। কৈশােরে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদেশী সাংবাদিকদের গাইড হিসাবে কাজ করতে গিয়ে সাংবাদিকতায় হাতে খড়ি। কবিতা ও সৃজনশীলতার প্রতি ঝোক ছােটবেলা থেকেই। পরিবারটাই ছিল সৃজনশীল। বাবা শিশু-সাহিত্যিক হাসান জান, পিতৃব্য পটুয়া কামরুল হাসান ও অধ্যাপক বদরুল হাসান। তাঁদের সান্নিধ্যে ও প্রযত্নে কেটেছে ছােটবেলা। প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। ১৯৬৫ সালে, রােকনুজ্জামান খান দাদাভাই সম্পাদিত কচি ও কাঁচায়। এখন দৈনিক জনকণ্ঠের সহকারী সম্পাদক। কলাম লেখেন বিজ্ঞান এবং সমাজরাজনীতি নিয়ে। বিজ্ঞান-কল্পকাহিনী আর গল্প-কবিতাও লেখেন। প্রকাশিত বই: এক পকেট বিস্ফোরক (কাব্যগ্রন্থ, ১৯৮৬) বােধিবৃক্ষে নিবোধ কাক (কাব্যগ্রন্থ, ১৯৮৮) সন্ত্রাসের সমাজতত্ত্ব (প্রবন্ধ, ১৯৯১), রাজবধূর প্রেম (১৯৯৬), ইরাকের সাদ্দাম যুগ (১৯৯৯), আর্নেস্তো চে গুয়েভারার মােটর সাইকেল ডায়েরী (অনুবাদ, ১৯৯৯), জয়বাংলার ছেলে (কিশাের উপন্যাস, ১৯৯৯), নবযুগের বিজ্ঞান (২০০০)। প্রযুক্তি মনস্ক সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখায় পেয়েছেন ১৯৯৯ সালের আইডিইবি স্বর্নপদক। চারদিকে এখন কম্পিউটারের ছড়াছড়ি। হরেক রকম কাজ করছে কম্পিউটার। লেখা, আঁকা, খেলা, চিঠি দেয়া-নেয়া সবই করা যাচ্ছে কম্পিউটার দিয়ে। কম্পিউটারকে এজন্য অনেকে মনে করছে ম্যাজিক বক্স'। আসলে কিন্তু তা নয়। কম্পিউটার হচ্ছে হিসাব করার যন্ত্র, হিসাব করতে করতেই সব কাজ করে যন্ত্রটা। কেমন করে? সে সব কথাই বলা হয়েছে এ বইতে। আর এখন তাে সবাই বলছে। কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ছাড়া ভবিষ্যত চলবেনা, তাই শিখতে হবে কম্পিউটার চালানাে আর ইন্টারনেটে কাজ করার কৌশল। সঙ্গে সঙ্গে এগুলাে কি, কেমন করে কাজ করে তা জেনে নেয়াও জরুরী। এই জানা-শােনার কথা নিয়েই এ বই। ছােট-বড় সবার জন্য।