অনেক কিছুর 'প্রথম' নিয়ে কিছু ভ্রান্ত জনশ্রুতি রয়েছে। মিথ্যা বা অপ্রকৃত প্রথমটি সম্পর্কে লোকমুখে ছড়াতে ছড়াতে এমন একটা অবস্থা হয়েছে যে, প্রকৃত 'প্রথম' অর্থাৎ কোন কিছুর প্রকৃত উৎপত্তিস্থল সম্পর্কে সবাই বেমালুম হয়ে গেছে। যেমন- অ্যাবাকাসের উদ্ভব্ব চীনে, রেডিও'র আবিষ্কারক মার্কনী, ইহুদিরা প্রথম একেশ্বরবাদী, প্রথম ছাপাকল তৈরি করেন গুটেনবার্গ, বৈদ্যুতিক বাতির উদ্ভাবক টমাস আলভা এডিসন, প্রথম আমেরিকা আবিষ্কার করেছেন কলম্বাস ইত্যাদি। এরকম অনেক কিছুর 'প্রথম' সম্পর্কে আমরা ভুল জানি। এমনটা হওয়ার অবশ্য কিছু কারণ আছে। অনেক জিনিস বা বিষয় বহু আগে আবিষ্কৃত, উদ্ভাবিত বা প্রবর্তিত হয়েছিলো কিন্তু এটি এত ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়নি কিংবা তখন এটি এতটা গুরুত্ব পায়নি বা কিছুদিন পর গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে। কিন্তু পরবর্তীতে একই ব্যাপার পুনরায় উদ্ভাবিত বা প্রবর্তিত হওয়ায় লোকজন পরবর্তীটিকেই প্রথম হিসেবে জানে। বর্তমানে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও ঐতিহাসিক দলিল-দস্তাবেজ বিশ্লেষণ করে প্রকৃত প্রথমটি সম্পর্কে জানা গেছে। অনেকে কোন যথাযথতার তোয়াক্কা না করেই কোন কিছুর 'প্রথম' দাবি করে বসে। অনেক সময় তা কোন প্রকার কান্ডজ্ঞান না খাটিয়েই। বেশিরভাগ ইউরোপীয়ান তো মানতেই চায়না যে, পিথাগোরীয় তত্ত্ব বলতে যা বুঝি তা পিথাগোরাসের আগে কেউ আবিষ্কার করেছে। গুটেনবার্গের আগে কেউ ছাপাকল তৈরি করেছে। নিউটনের আগে কেউ মহাকর্ষ তত্ত্ব নিয়ে ভেবেছিলো। প্রকৃতপক্ষে, গুটেনবার্গের বহু আগে চীনে ছাপাখানা তৈরি হয়েছিলো। পিথাগোরাসের বহু আগে চীনে অনুরূপ তত্ত্বের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করা হয়েছিলো। নিউটনের আগে বহু চীনা জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মহাকর্ষ তত্ত্ব দিয়েছিলো।