"নাইট ফল" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: একটি সম্পুর্ন ভিন্ন গ্রহের বাসিন্দা, যারা এমন একটি গ্রহে থাকেন যেখানে বেশ অনেকগুলো ছোটবড় সুর্য্য রয়েছে, যার ফলাফল হিসেবে গ্রহটিতে কখনই পুরো অন্ধকার হয় না। গ্রহের বাসিন্দাদের কোন ধারনাই নেই সম্পুর্ন অন্ধকার জিনিসটা আসলে কি। এরকম সময়ে ফান রাইড হিসেবে এক থিম পার্ক ব্যবস্থা করে টানেল অব মিস্ট্রি। একটি সম্পুর্ন অন্ধকার টানেলের মাঝ দিয়ে আপনাকে পার হতে হবে বেশ লম্বা একটা সময়। চমতকার আইডিয়া! এটা নিয়ে মানুষের যে পরিমান আগ্রহ দেখা গেল, তাতে যে কোন বিজনেসম্যান তৃপ্তিতে ঢেকুর তুলবেন, কারণ তার টাকা উঠে আসবে ফর শিওর। কিন্তু প্রতি রাইডেই কিছু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকে মানসিকভাবে, কেউ কেউ পাগল হয়ে যায়, কেউ মরেই যায়। কিসের কারনে? অন্ধকারের ভয়ে! অন্যদিকে মহাকাশ পর্যবেক্ষন মানমন্দিরে চলছে আর এক নাটক। মানমন্দিরের এক গবেষক আবিস্কার করেছেন তাদের মহাকাশ ত্বত্তে রয়েছে এক বিশাল অস্বাভাবিকতা। এই অস্বাভাবিকতা এতটাই বিশাল ব্যপ্তির, পুরো দুনিয়াকে নাড়া দিতে পারে মুহুর্তেই। আরর্কিওলজিস্টরা অন্যদিকে আবিস্কার করেছেন আর এক অস্বাভাবিকতার। পর পর সাতটা ধ্বংসপ্রাপ্ত নগর। একটার উপরে আর একটা। প্রত্যেকটার ধ্বংস হবার সময় ঠিক দুই হাজার বছর পর পর। ধর্মীয় ফারাটিকদের দল ঘোষনা দিচ্ছে, দুনিয়ার ধ্বংস অনিবার্য, উপায় কেবল একটাই, ধর্মের শরন নাও। এই বিশাল পটভুমিকায়, বিভিন্ন ঘটনার মিশ্রনে এটা একটা নি:সন্দেহে অসাধারন সায়েন্স ফিকশন উপন্যাস। ইসতিয়াক মাহমুদ
বিংশ শতকের অন্যতম সেরা লেখক আইজ্যাক আসিমভ সাহিত্যজগতের এক উজ্জ্বল নাম। তিনি ১৯২০ সালের ২ জানুয়ারি সোভিয়েত রাশিয়ার পেত্রোভিচি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে পরিবারের সাথে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে ব্রুকলিনে শুরু করেন নতুন জীবন। ছোটবেলায়ই তাঁর বাবা তাকে লাগিয়ে দেন নিজেদের ক্যান্ডিশপে দোকানদারির কাজে। ছোট্ট আসিমভ পাঁচ বছর বয়সেই নিজে নিজে পড়তে শিখে যান। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি হাই স্কুল শেষ করেন এবং কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন। এখান থেকেই তিনি ১৯৩৯ সালে ব্যাচেলর অব সায়েন্স এবং পরবর্তীতে এমএ ও পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫৫ সালে বোস্টন ইউনিভার্সিটিতে তিনি বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তীতে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি হলেও তিনি লেখালেখিতে মনোনিবেশ করতে নিয়মিত শিক্ষকতা করেননি। ১৯৫০ সালে বের হয় তাঁর প্রথম বই ‘পেবলস ইন দ্য স্কাই’, যা জয় করে নেয় সাধারণ পাঠকের মন। এরপর একের পর এক লেখা বের হতেই থাকে তাঁর। তাঁর সৃষ্ট সাহিত্যকর্মের মূল আধেয় হলো সায়েন্স ফিকশন, পপুলার সায়েন্স, রহস্য ইত্যাদি। সৃজনশীল মেধাসম্পন্ন এই লেখক ৫০০টিরও বেশি বই রচনা ও সম্পাদনা করেছেন। জনপ্রিয় লেখক আইজ্যাক আসিমভ এর বই সমূহ হলো, ‘আই,রোবট (১৯৫০)’, ‘ফাউন্ডেশন (১৯৪২)’, ‘দ্য এন্ড অব ইটারনিটি (১৯৫৫)’, ‘দ্য কেভস অব স্টিল (১৯৫৩)’, ফ্যান্টাস্টিক ভয়েজ (১৯৬৬)’ ইত্যাদি। তাঁর রচিত উপন্যাসই শুধু নয়, তুমুল জনপ্রিয় তাঁর ছোটগল্পগুলোও। আসিমভ এর রচনাগুলো থেকে নির্মিত হয়েছে বেশ কয়েকটি বড় বাজেটের চলচ্চিত্র, যার মাঝে আছে ‘আই,রোবট (২০০৪)’, ‘বাইসেন্টেনিয়াল ম্যান (১৯৯৯)’ ইত্যাদি। বিশ্বজোড়া প্রকাশিত আইজ্যাক আসিমভ এর বই সমগ্র জয় করে নিয়েছে সায়েন্স ফিকশন পাঠকদের মন। তাঁর বই থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বিশ্বের নামিদামী পরিচালক তৈরি করেছেন চলচ্চিত্র, বানিয়েছেন সিরিজ। ১৯৮৭ সালে ‘সায়েন্স ফিকশন রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা’ তাকে ‘গ্র্যান্ড মাস্টার অব সায়েন্স ফিকশন’ সম্মানে ভূষিত করে। তাঁর লেখা ‘ফাউন্ডেশন (ট্রিলজি)’ ১৯৬৬ সালে এনে দেয় ‘হুগো এওয়ার্ড’, ‘দ্য গডস দেমসেল্ভস’ এনে দেয় একইসাথে ‘হুগো’ ও ‘নেবুলা’ অ্যাওয়ার্ড। কল্পবিজ্ঞানের এই মহা কারিগর ১৯৯২ সালের ৬ এপ্রিল ব্রুকলিনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।