‘৩০০১: দ্য ফাইনাল ওডিসি’ বইয়ের ভূমিকা: ৩০০১ সালের পৃথিবী। বদলে গেছে নীতিবোধ, সমাজ, বিজ্ঞানতো বদলাবেই, সেই সাথে মানুষ। বসুন্ধরাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বিপন্নপ্রায় জীবদের জন্য। মানুষের ওজন কমলে কাজ বাড়বে, সহজ হবে সবকিছু, আবার উপরে চলে গেলে মহাকাশ ভ্রমণও হয়ে পড়বে অনেক সহজ। তাই বদলে গেছে চিরকালের আবাসস্থল। এদিকে ফিরে আসে অনেক পুরনো দিনের এক অতিথি, ২০০১ সালের চোখে সে দেখে ৩০০১ সালের মানবজাতিকে। একই সাথে সমগ্র মানবজাতি আরেক সঙ্কটের মুখে। দূরে দূরে অনেক সৌরজগত ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ... কেন? পুরো স্পেস ওডিসি জুড়ে যেসব প্রশ্নের মিমাংসা হয়নি, সেসবের একটা যবনিকা নামাতে চেয়েছেন আর্থার সি ক্লার্ক এ বইতে। যেন শুধু স্পেস মিশনের নন, মহাকালেরও ধারাভাষ্যকার তিনি।
লেখকের কথা ২০১০ : ওডিসি টু যেমন ২০০১ : আ স্পেস ওডিসি'র সরাসরি সিকুয়্যাল নয়। তেমনি ২০৬১ : ওডিসি থ্রি ও দ্বিতীয়টার সরাসরি ঝাণ্ডাবাহী নয়। বরং এই সবগুলোকে একই থিমের উপর বিস্তৃতি ধরা যায়, আর সেই অর্থে, সময়কে মাপকাঠি ধরে সিকুয়্যাল বলা যায়। কিংবা, সরলতার জন্য একই নাম ও চরিত্রঘটনা থাকা সত্ত্বেও যেন একই ঘটনা নয়, বরং সমান্তরাল চলতে থাকা বিভিন্ন ইউনিভার্সে একই ধারার ঘটনা। মানুষের চাঁদে পা রাখার বছর পাঁচেক আগে, ১৯৬৪ সালে যখন স্ট্যানলি কুবরিক প্রস্তাব রাখলেন, ‘সত্যিকার ভাল সায়েন্স ফিকশন মুভি' বানাবেন, তখন ব্যাপারটা এত সহজ ছিল না। কিন্তু তারপর, এ ধারণায় আগের দুটি বই বিজ্ঞানে সরাসরি অনেক প্রভাব ফেলল, ফলে বলা চলে সেগুলো সার্থক সায়েন্স ফিকশন। ২০১০ লিখতে উৎসাহী হই ১৯৭৯ সালের সফল ভয়েজার অভিযানের পর। কিন্তু বৃহস্পতিয় অঞ্চলে ভয়েজারের অভিযানের পর আরো উচ্চাকাঙ্ক্ষী অভিযান গ্যালিলিও পাঠানো হয়। আশায় বুক বেঁধেছিলাম গ্যালিলিওকে নিয়ে, সে যাবে, বৃহস্পতির বাতাবরণে একটা প্রোব ছুঁড়ে দেবে, দু বছর খুঁটিয়ে দেখবে বৃহস্পতীয় উপগ্রহজগৎ। এর উৎক্ষিপ্ত হবার কথা ছিয়াশির মে মাসে। ডিসেম্বর আটাশিতে লক্ষ্যে যাবার কথা এবং উনিশশো নব্বইতে নূতন বাণীর স্রোতে ভেসে যাবার কথা আমার। হায়, চ্যালেঞ্জটা পিছিয়ে গেল, জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরিতে গ্যালিলিও তার ক্লিন রুমে অপেক্ষার প্রহর গুণছে। আরেকটা লঞ্চ ভেহিকলের আশায় তার বসে থাকা। হয়তো নির্ধারিত সময়ের সাত বছর পর সেটা ঠিকই জায়গামতো পৌছবে, তদিন আমার ধৈর্য থাকলেই হল। গ্যালিলিওকে নিয়ে তৃতীয় স্বপ্ন দানা বেঁধেছিল, সেটায় চিড় ধরার আগেই আমি অপেক্ষা বন্ধ করে কলম হাতে নিলাম। কলম্বো, শ্ৰীলঙ্কা, এপ্রিল, ১৯৮৭
Maksudujjaman Khan লেখালেখি শুরু করেন মৌলিক কাজ দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কয়েকটা উপন্যাস লিখেছেন, লিখছেন।এছাড়াও ছোটগল্পের ঘরানায় আছে পদচারণা; আছে জীবনের উৎস বিষয়ক গ্ৰন্থ জীবন এলো কোথা থেকে, বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর ভুবনটাকে এক মলাটে নিয়ে আসার চেষ্টায় বড় লেখা, সায়েন্স ফিকশনঃ এক অসাধারণ জগৎ। বেশ কয়েকটি সাড়া জাগানো সায়েন্স ফিকশন অনুবাদের পর লেখার গণ্ডীতে থ্রিলার, ওয়েস্টার্ন, হরর ও এ্যাডভেঞ্চার যুক্ত হয়েছে। অনুবাদ-মৌলিক দু ক্ষেত্রেই নতুন ও সহজ বানানরীতি অনুসরণ করেন। তার করা অনুবাদে কিছু বাদ পড়ে না, কিন্তু বাক্যরীতি পরিবর্তিত হয়ে যায়। অন্বেষা প্রকাশন থেকে ড্যান ব্রাউনের আরেক থ্রিলার ডিসিপশন পয়েন্ট, অলিভার স্ট্রেনঞ্জারের ওয়েস্টার্ন উপন্যাস আউটলড, ডি ওয়াটসনের ডি এন এ আবিষ্কারের কাহিনী দ্য ডাবল হেলিক্স অচিরেই আসছে। পড়ালেখা করছেন জিন প্রকৌশল ও জৈব প্রযুক্তিতে। অবসর কাটে লিখতে লিখতে, পড়তে পড়তে গান শুনে।