ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা বর্তমান আমাদের দেশে চাইনিজ, থাই, ইটালিয়ান, ম্যাক্সিকান, টার্কিস, ইন্ডিয়ান ইত্যাদি খাবারের রেস্টুরেন্ড থেকে আমাদের বিদেশী খাবারের প্রতি মানুষের আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। আমাদের আগ্রহ মিটানোর জন্য এতে পাওয়া যাবে চাইনিজ, থাই, কন্টিনেন্টাল, ইটালিয়ান ইত্যাদি খাবারের রেসিপি। এতে পছন্দের অবকাশ থাকবে। ঘরেই বসেই বিদেশী খাবারের স্বাদ নেওয়া যাবে। বাইরের খাওয়ার চেয়ে খরচ কম পড়বে। ভেজালমুক্ত খাবার নিচিস্তে বাড়ির সবাই মিলে উপভোগ করতে পারবে। বাড কম্প্রিন্ট এন্ড পাবলিকেশন্স-এর স্বত্ত্বাধিকারী মোহাম্মদ শিহাব উদ্দিন সাহেব এই বই প্রকাশে এগিয়ে এসেছেন, ওনার এ কাজে সফলতা আসুক এবং দেশের লোক উপকৃত হউক এই আমার কাম্য।অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবীর ভূমিকা আজকাল পুষ্টি সম্বন্ধে মধ্যবিত্ত সব ধরনের পরিবারের মধ্যে সচেতনতা লক্ষ্য করা যায়। সরকারি বেসরকারি মাধ্যমে নানা বিষয়ে নানাভাবে জনসাধারণকে স্বাস্থ্য বিষয়ে যত্নবান হতে প্রচার করছে ও বিভিন্ন কার্যক্রম নেয়া হচ্ছে। পত্র-পত্রিকা ম্যাগাজিন, রেডিও, টেলিভিশন এমন কি স্কুলের পাটঠপুস্তকেও পুষ্টি বিষয় অন্তভূক্ত হচ্ছে। শৈশব থেকে স্বাস্থ্য, পুষ্টি বিষয়ে জানা অতি প্রয়োজন। আমরা জেনেছি মানুষের বয়স, শারীরিক অবস্থা ও লিঙ্গভেদে খাওয়া দাওয়ার চাহিদাও একরকম থাকে না। সবার আগে জানতে হবে পুষ্টিকর খাদ্য সম্বন্ধে। খাবার দাবার নিয়ে তাই বর্তমানে বহুল প্রচার প্রচাণনা লক্ষ্য করা যায়। দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক, ত্রৈমাসিক, পাক্ষিক সব ধরনের পত্র-পত্রিকায় স্বাস্থ্য, খাবার দাবার ও রান্না বিষয়ক লেখালেখি থাকছে। ফলশ্রুতিতে আমরা পাচ্ছি নানা তথ্য ও রান্নার অগুণিতি রেসিপি। পিছিয়ে নেই রান্নার বই প্রকাশনাও। শহরে, গ্রামে সব বয়সের লোকই রেসিপি পড়ে রান্নায় আগ্রহী হচ্ছে। মহিলারাও তাদের ভাল ভাল রান্নার রেসিপি প্রকাশে এগিয়ে আসছেন। তাদের উৎসাহে আমি মনে করি এ পর্যন্ত আমরা রান্নার বিষয়ে কিছুটা উন্নতি করতে পেরেছি যার সাক্ষর “দেশী, বিদেশী ঘরোয়া রান্না” বইটি। দেশী, বিদেশী ঘরোয়া রান্না বইয়ে বাংলাদেশের দৈনন্দিন খাবারের রেসিপি অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। ডালভাত, শাকসবজি, মাছ-মাংস যা আমরা দৈনন্দিন খাবারের শহরে এবং গ্রামাঞ্চলে খেয়ে থাকি সে ধরনের খাবারের রেসিপি যথাযথভাবে লেখা হয়েছে। সেসাথে আছে ছোটদের টিফিন, কিশোর কিশোরীদের জন্য স্ন্যাকস, নানা পালা পার্বণ, উৎসব অনুষ্ঠান যেমন শবে-ই-বরাতের হালুয়া, রুটি, রমজান মাসে ইফতার, ঈদের সেমাই এসব ঐতিহ্যপূর্ণ খাবারও বাদ পড়েনি। আর লক্ষ্য রাখা হয়েছে পুষ্ঠি, সহজভাবে রান্না ও সময় সংক্ষিপ্ত করে রান্নার বিষয়টিও। আমি মনে করি শহরে গ্রামে সবাইকে উৎসাহিত করবে এ বইয়ের রেসিপি ব্যবহার করে রান্না করতে। আশা রাখছি তারা সফলকাম হবেন। পরিবারকে পুষ্টিকর খাবার দিয়ে সুস্থ রাখতেও খুশী করতে পারবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৬ সালে গণিতশাস্ত্ৰে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি ইডেন গার্লস কলেজে গণিতের প্রভাষিকা পদে যোগদান করেন। ১৯৬১ সালে তিনি ফোর্ড ফাউন্ডেশনের স্কলারশিপ নিয়ে ওকলাহােমা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে খাদ্য ও পুষ্টি এবং প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে এম. এস. ডিগ্রি লাভের পর ঢাকায় গাৰ্হস্থ্য অর্থনীতি মহাবিদ্যালয়ে ১৯৬৩ সালে সহকারী অধ্যাপক পদে নিযুক্তি পান। ১৯৯৩ সালে তিনি গাৰ্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের অধ্যক্ষার পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন । সমাজকে পুষ্টিমান সম্পন্ন রান্নায় সচেতন করার জন্য বিভিন্ন সম্মাননা পুরস্কার পেয়েছেন। সাম্প্রতিককালে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত “সিদ্দিকা কবীর’স রেসিপি’ বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তিনি একটি মশলা প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক রান্না প্রতিযোগিতায় বিশেষজ্ঞ ও অন্যতম জুরি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৯৯৬ সাল থেকে দশ বছর নেসলে বাংলাদেশ-এর নিউট্রিশন এবং কালিনারি কনসালটেন্টের কাজ করেন। তিনি অনন্যা শীর্ষ দশ, শেলটেক পদক ও বুড়িগঙ্গা রোটারি ক্লাব পুরস্কার অর্জন করেন। অধ্যাপক সিদ্দিকা কবীর ৩১ জানুয়ারি ২০১২-তে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার স্কয়্যার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগে তিনি হৃদরোগসহ বিভিন্ন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুপূর্ব বেশ কিছুদিন সিআরপি-তে চিকিৎসারত থাকার পর, উন্নত চিকিৎসার জন্য স্কয়্যার হাসপাতালে স্থানান্তরের পর সেখানে চিকিৎসারত থাকাকালীন তিনি স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেন।