ফ্র্যাপে লেখা কিছু কথা সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অকৃতদার ফয়েজ আহ্মদ বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবনের অধিকারী। রাজনৈতিকভাবে সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারায় বিশ্বাসী। ১৯৪৮ সালে থেকে সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত। তিনি ইত্তেফাক, সংবাদ, আজাদ ও পরবর্তী সময়ে পূর্বদেশ-এ চিফ রিপোর্টার ছিলেন। সাপ্তাহিক ইনসাফ ও ইনসান পত্রিকায়া রিপোর্টিং করছেন। ১৯৫০ সালে কিশোর পত্রিকা হুল্লোড় সম্পাদনা করেন।১৯৭১ সালে স্বরাজ পত্রিকার সম্পদক ছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সংবাদ সংস্থার(বিএসএস) প্রথম প্রধান সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবার্তা দৈনিকে প্রধান সম্পাদকরূপে কাজ করেন।১৯৫২সালে প্রতিষ্ঠিত মুক্তচিন্তা ও অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল লেখকদের সংগঠক পাকিস্তান সাহিত্য সংসদ-এর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন দু’বছর। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি বছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বছর সিন্ডিকেটের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন ৮০ ও ৯০-এর দশকে। ১৯৮২-এর দিকে বাংলা একাডেমীর কাউন্সিল সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু এরশাদের সামরিক শাসনের প্রতিবাদে অন্য ছয়জনের সঙ্গে তিনি পদত্যাগ করেন। ১৯৮৩ সারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট-এর সভাপতি নির্বাচিত হন এবং তেরো বছর এ-পদে ছিলেন। জাতীয় কবিতা উৎসব-এর আহবায়ক ছিলেন।
ভূমিকা `মধ্যরাতের অশ্বারোহী’ বাংলাদেশে সর্বাধিক প্রকাশিত সুপ্তকগুলির মধ্যে অন্যতম প্রায় প্রতিবছরই এর সংস্করণ নতুন করে প্রাশের তাগিদ আছে। এমের্ম পাঠক আদৃত অবস্থায় এই পুস্তকটি তৃতীয়বার প্রকাশিত হলো-তবে চার খণ্ড এক মলাটের অন্তর্গত। অর্থাৎ পাঠকদের সুবিধার্থে পুস্তকের চার খণ্ডকে একত্রে একই মলাটের অন্তর্গত করে এবার মধ্যরাতের অশ্বারোহী প্রকাশিত হলো। প্রকাশক মহিউদ্দিন আহমেদ ১১৪ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা থেকে দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের পক্ষে ‘মধ্যরাতের অশ্বারোহী’ প্রথম প্রকাশ করেন। প্রথম প্রকাশ ডিসেম্বর ১৯৮২ পরে নিয়মিত প্রকাশিত হতে থাকে। প্রখ্যাত শিল্পী রফিকুননবী এই পুস্তকের প্রচ্ছদ এঁকেছেন এবং অলংকরন করেছেন। পুস্তকটির এক খণ্ড জাতীয় প্রেস ক্লাবকে উৎসর্গ করা হয়।এরপরে পুস্তকটি প্রকাশের দায়িত্ব নেন জনাব মফিদুল হক তাঁর সাহিত্য প্রকাশ থেকে। পরিপাটি অবস্থায় প্রথম সাহিত্য প্রকাশ সংস্করণ প্রকাশিত হয় ২০০৩ সালে চার খণ্ডে।বাজারে বর্তমানে এই প্রকাশনাই এখন চার খণ্ডে চলছে।বর্তমানে পুস্তকটি পুনঃপ্রকাশের প্রশ্ন উঠেছে। এই পু্স্তুকের চার খণ্ড একত্রে এক মলাটের অধীনে ‘অনন্যা’ অখণ্ড সংস্করণ প্রকাশ করেছে এতে পাঠকের সুবিধা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করি। আমার রচনাবলীর মধ্যে অনেক পাঠকই ‘মধ্যরাতের অশ্বারোহী’কে সেরা রচনা বলে গণ্য করেন-আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। পূর্ব প্রকাশিত প্রথম চার খণ্ডের রফিকুননবীর আঁকা অলংকরণ অখণ্ড সংস্ককরণে পুনরায় ব্যবহার করছি। এজন্য রফিকুল নবী ও সাহিত্য প্রকাশ-এর কর্নধার জনাব মফিদুল হক কাছে কৃতজ্ঞ। ফয়েজ আহ্মদ ১.১.২০১২
সূচিপত্র *মধ্যরাতের অশ্বারোহী *সত্যবাবু মারা গেছেন *নন্দনে নন্দিনী *এবং তারপর
তিনি সারাজীবনই প্রধানতঃ শিশু-কিশােরদের জন্য ছড়া। ও কবিতা লিখেছেন। বর্তমানে তাঁর বইয়ের সংখ্যা ১০০। এর মধ্যে ৫০টি শিশু-কিশােরদের জন্য ছড়া ও কবিতার পুস্-ক। অধ্যাপক কবীর চৌধুরী তাঁর চারটি শিশুপু-ক ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন। তাঁর লেখা। ছড়া নিয়ে এশটি আব"ত্তি ও এশটি সঙ্গীতের ক্যাসেট বেরিয়েছে। তাঁর বইগুলাের মধ্যে মধ্যরাতের অশ্বারােহী’ ট্রিলজী সবচাইতে বিখ্যাত। এটি তাঁর শ্রেষ্ঠ পুস্-ক বলে বিবেচিত ছড়ার বইয়ের মধ্যে হে কিশাের', কামরল হাসানের চিত্রশালায়’, ‘গু"ছয়ড়া, ‘রিমঝিম’, ‘বোঁ বোঁ কাটা’, ‘পুতলি’, ‘কালে যাঁর কামান’, ‘টুং’, ‘জোনাকী’, ‘ড়ি নেই’, ‘ছােট ছেলে জামারে’, ‘প্রিয়ং’, ‘তুলির সাথে লড়াই’, ‘টিউ টিউ’, ‘একালের ছড়া’, ‘য়ড়ায় ছড়ায় ২০০' বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য। চীনসহ বিভিন্ন দেশের কবিতার পাঁচটি বই তিনি অনুবাদ করেছেন। এর মধ্যে হাে চি মিন’ -এর জেলে কবিতা বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য। দশটি দেশের অনুবাদ কবিতার বই-এর নাম ‘দেশা-রের কবিতা'। মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভে প্রেসকাবে রাতে ২৫শে মার্চ আশ্রয় নিয়ে তিনি পাকিস্-নী বাহিনীর আক্রমনে আহত হন। রাত ১১টায় আশ্রয় নেবার ভাের রাতে ঔ ২৪ ট্যাংক দিয়ে শত্র"বাহিনী প্রেসকাবে তাঁর আশ্রয় ক েদোতলায় গােলাবর্ষণ করে। তিনি বাঁ উর"তে আঘাত পেয়ে মেঝেতে পড়ে থাকেন। ১৯৭১ সালে ২৫শে মার্চ সকাল দশটায় কারফিউ ওঠার পর তিনি চিকিৎসার জন্য বেরিয়ে যান।