"রঙের রবীন্দ্রনাথ” বইয়ের পিছনের কভারের লেখা: লিখনের এবং অঙ্কনের ভাষায় তা কী স্বাক্ষর রেখে গেছে। তাঁর বর্ণদৃষ্টিতে যদি কোনাে ঘাটতি থেকে থাকে, তা হলে তা সত্ত্বেও ভাষায় তথা চিত্রে তিনি কিভাবে হয়ে উঠলেন একজন মহৎ শিল্পী? প্রতিবন্ধের সঙ্গে সংগ্রাম কি উসকে দেয় প্রতিভাকে, শাণিততর করে তােলে তার ধারকে? কিভাবে রবীন্দ্রনাথ বর্ণনা দিতেন, গঠন করতেন বৰ্ণভাষা, নির্মাণ করতেন বর্ণপ্রতিমা, বৰ্ণরূপক? তাঁর রচনায় শ্রুতি বা ঘ্রাণ কি দৃষ্টির অপূর্ণতা দূর করতে সদাব্যস্ত? ছবির প্রতি আকর্ষণ সত্ত্বেও পুরােদস্তুর আঁকিয়ে হয়ে উঠতে তিনি যে এতটা দেরি করলেন, তার মূল কারণ কি ঐ বর্ণদৃষ্টির অপূর্ণতা? ঠিক কোন পথে তিনি হয়ে উঠলেন চিত্রশিল্পী? কী সেই আত্মনির্মাণের ইতিহাস? সেখানে কি কোনাে বিদেশী প্রভাব কাজ করেছে, তাঁকে পথের সংকেত দিয়েছে? চিত্রকলায় তাঁর বর্ণব্যবহারের প্যাটার্ন কি বৈজ্ঞানিক প্রত্যাশার সঙ্গে মেলে? এই বইয়ে পাঠকরা পাবেন রবীন্দ্ররচনাবলীর বর্ণভাষার পুঙ্খানুপুঙ্খ সমীক্ষণ, সাহিত্যিকের চিত্রী হয়ে ওঠার ইতিহাস, তাঁর ছবিতে বিদেশী প্রভাব এবং রেখারঙের ব্যবহার সম্পর্কে সচিত্র বিদগ্ধ আলােচনা, বর্ণদৃষ্টি বিষয়টির উপরে প্রাসঙ্গিক বৈজ্ঞানিক আলােকপাত, রবীন্দ্রচিত্রকলায় বর্ণব্যবহারের বৈজ্ঞানিক পরিমাপ, তা থেকে লব্ধ উপাত্তসমূহের বিশ্লেষণ। কোনাে সন্দেহ নেই, রবীন্দ্রগবেষণায় এই বই এক অভাবিতপূর্ব সংযােজন, পাঠকের দৃষ্টির সামনে খুলে দেয় এক নূতন দিগন্তকে । এ বই পড়ার পর পাঠকরা রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টির দিকে পুরাতন দৃষ্টিতে আর তাকাতে পারবেন। এই জাতের এবং মাপের আন্তর্বিদ্য গবেষণাগ্রন্থ সারা পৃথিবীর পরিপ্রেক্ষিতে বিরল।
Ketaki Kushari Daison কলকাতায় ১৯৪০ সালের ২৬ জুন জন্মগ্রহণ করেন। পৈত্রিকসূত্রে তার নাম কেতকী কুশারী বোস। ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজী সাহিত্যে রেকর্ড নম্বর পেয়ে তিনি বি.এ পাস করেন। ১৯৬৩-তে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণীতে ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি অর্জন করেন। ইতোমধ্যে রবার্ট ডাইসনের সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন এবং নামের শেসে ডাইসন পদবী ব্যবহার করতে শুরু করেন। তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত কবি, লেখিকা, অনুবাদক ও গবেষক যিনি যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন। বাংলা ও ইংরেজী উভয় ভাষাতেই তিনি লিখে থাকেন। তিনি রবীন্দ্রনাথের চিত্রকর্ম বিষয়ে তাঁর গবেষণার জন্য বিশেষভাবে খ্যাত। ।