"অষ্টম গর্ভ" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: কৃষ্ণ এক অদ্ভুতকর্মা শিশুর নাম। আমাদের লােককথায়, পুরাণে, আমাদের চেতনায় মিশে আছে কৃষ্ণকথা। তার ওপরে আছে অবতার-ভাবনা। প্রতিনিয়ত আমরা কৃষ্ণের অবতরণের প্রত্যাশায় থাকি। এই প্রত্যাশা যেমন করুণ তেমনই কৌতুকাবহ। কেননা জাতীয় চৈতন্যে ওতপ্রােত এই কৃষ্ণকথা যেন এক রূপক। যা বাস্তব হয়ে উঠতে চায় ঘরে ঘরে শিশুদের জন্মে, তাদের বড় হয়ে ওঠায়, তাদের সম্পর্কে আমাদের আশায়। কোনও না কোনওভাবে তারাও অদ্ভুতকর্মা, যেন এক একটি ছায়াকৃষ্ণ। মহামানবের পুনরাবির্ভাবের স্বপ্ন শুধু আমাদের। বিশেষত্ব নয়, স্বপ্নও। অর্ধস্ফুট এই আকাঙক্ষার একান্ত মানবিক প্রেক্ষাপটে তিনটি শিশুর বেড়ে ওঠার কাহিনী অষ্টম গর্ভ’। তাদের ঘিরে আবর্তিত হয় বাংলার ইতিহাসের সবচেয়ে কালান্তক সময়। শৈশবকে সাধারণত একটি সুন্দর উপসময়। হিসেবেই দেখি আমরা। কিন্তু মানুষ, পৃথিবী, জীবন সম্পর্কে শিশুর বােধও তত বড়দের মতােই। বাস্তব সত্য। শিশুদের দেখাকে পূর্ণ গুরুত্ব দিয়ে তৈরি হয়েছে এই উপন্যাসের আখ্যানভাগ। যেহেতু তাদের বােধের জগৎ বড়দের জগতের সঙ্গে সমান্তরাল নয়, তাই দুই জগৎ পরস্পরের সঙ্গে কাটাকুটি খেলে এ উপন্যাসে। তৈরি করে এক জটিল ছক। বস্তুজগৎ সেখানে অনবরত পুরাণ হয়ে যাচ্ছে আর পুরাণ হয়ে উঠছে বাস্তব।
বাণী বসু একজন বাঙালি ভারতীয় লেখক, লেখক, সমালোচক এবং কবি। তিনি বিখ্যাত স্কটিশ চার্চ কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষালাভ করেন। তিনি জন্মভূমি মতিঝুমির প্রকাশনার সাথে উপন্যাস লেখক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। একজন প্রফুল্ল লেখক, তাঁর উপন্যাসগুলি নিয়মিত বাংলার প্রখ্যাত সাহিত্য পত্রিকা দেশে প্রকাশিত হয়। তার প্রধান কাজগুলির মধ্যে রয়েছে সোয়েথ পাঠেরার থালা (মার্বেল সালভার), একুশে পা (একুশের ধাপ), মৈত্রেয়া যাকাত (স্ট্রি দ্বারা মৈত্র্যের জন্ম হিসাবে প্রকাশিত), গান্ধারভি, পঞ্চম পুরুষ (পঞ্চম পুরুষ, বা পঞ্চম প্রজন্ম?) এবং অষ্টম গর্ভা (অষ্টম গর্ভাবস্থা)। তিনি আন্তরঘাট (ট্রেজন), এবং মৈত্র্য্য জাট্টা জন্য আনন্দ পুরষ্কারের জন্য তারশঙ্কর পুরষ্কার জিতেছিলেন। তিনি সুশিলা দেবী বিড়লা পুরস্কার এবং সাহিত্য সেতু পুরস্করের প্রাপক। তিনি ব্যাপকভাবে বাংলাতে অনুবাদ করেন এবং প্রবন্ধ, ছোট গল্প এবং কবিতা লিখেছেন। বঙ্গ বসুকে বাংলা সাহিত্যে অবদান রাখার জন্য, ভারতের একাডেমীর সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার, সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার ২010 প্রদান করা হয়েছে।