"দিদিমাসির জিন" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা কথা: বাণী বসুর সামগ্রিক সৃষ্টির সঙ্গে যাঁরা পরিচিত তাঁরা জানেন, লেখিকা মানবচরিত্র ও সমাজে মানুষের অবস্থান নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করেন। সেই অনুভবী ভাবনা এই রচনায় ভিন্ন মােড় নিয়েছে। রসবােধ এই ব্যতিক্রমী উপন্যাসের মূল সুর । জীবনযাপনে, মানুষের প্রতিদিনের কাজেকর্মে, চরিত্রের প্রকাশে যে-হাস্যময় রসের ধারা প্রবাহিত হচ্ছে, তাকে অনুপম কুশলতায় লিপিবদ্ধ করা দুরূহ। সেই দুরূহতাকে যেন অবলীলায় অতিক্রম করেছে ‘দিদিমাসির জিন’ এই উপন্যাসের চরিত্রগুলি আমাদের চেনা, তিন-চার প্রজন্ম ধরে তাদের ব্যাপ্তি। আছেন রাশভারি অধ্যাপক। গঙ্গাপ্রসাদ ও তাঁর পরিবেশ। রয়েছেন তাঁর স্বভাবস্বতন্ত্র গৃহিণী কাজলরেখা, আজকালকার নতুন ছেলেমেয়েরা—তীণা, অনীক, রাংতা, গােপাল আর যশজিৎ। সর্বোপরি আছেন। ফেলে-আসা-সময়ের প্রতিনিধি এক রসিক বৃদ্ধা—সরলাবালা সকলের দিদিমাসি। তিনি ছড়া কাটেন, পিঠে গড়েন, পাঁচালি লেখেন। আবার তিনি তরুণ প্রজন্মের চেয়েও আধুনিক । প্রবীণ প্রজন্মের চেয়েও প্রাচীন। সংস্কার-মক্ত সংস্কৃতির একক বাহক। এই নবীন প্রাচীনাকে লেখিকা ধরেছেন রস-রসিকতার আধারে, বারবার পটবদলানাে এক প্রেক্ষিত সমেত ।
বাণী বসু একজন বাঙালি ভারতীয় লেখক, লেখক, সমালোচক এবং কবি। তিনি বিখ্যাত স্কটিশ চার্চ কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষালাভ করেন। তিনি জন্মভূমি মতিঝুমির প্রকাশনার সাথে উপন্যাস লেখক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। একজন প্রফুল্ল লেখক, তাঁর উপন্যাসগুলি নিয়মিত বাংলার প্রখ্যাত সাহিত্য পত্রিকা দেশে প্রকাশিত হয়। তার প্রধান কাজগুলির মধ্যে রয়েছে সোয়েথ পাঠেরার থালা (মার্বেল সালভার), একুশে পা (একুশের ধাপ), মৈত্রেয়া যাকাত (স্ট্রি দ্বারা মৈত্র্যের জন্ম হিসাবে প্রকাশিত), গান্ধারভি, পঞ্চম পুরুষ (পঞ্চম পুরুষ, বা পঞ্চম প্রজন্ম?) এবং অষ্টম গর্ভা (অষ্টম গর্ভাবস্থা)। তিনি আন্তরঘাট (ট্রেজন), এবং মৈত্র্য্য জাট্টা জন্য আনন্দ পুরষ্কারের জন্য তারশঙ্কর পুরষ্কার জিতেছিলেন। তিনি সুশিলা দেবী বিড়লা পুরস্কার এবং সাহিত্য সেতু পুরস্করের প্রাপক। তিনি ব্যাপকভাবে বাংলাতে অনুবাদ করেন এবং প্রবন্ধ, ছোট গল্প এবং কবিতা লিখেছেন। বঙ্গ বসুকে বাংলা সাহিত্যে অবদান রাখার জন্য, ভারতের একাডেমীর সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার, সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার ২010 প্রদান করা হয়েছে।