"লোটাকম্বল (২য় পর্ব)" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: লোটাকম্বলের প্রথম পর্ব শেষহওয়া মাত্রই দেশের দপ্তরে আসতে শুরু করেছিল দ্বিতীয় পর্বের জন্য অসংখ্য অনুরােধ। তারই ফলশ্রুতিরূপে এই নবপর্বে। প্রাপ্তি ঘটে পূর্বের মতােই আত্মজীবনীর মাত্রায় রচিত হয়েও ভিন্নস্বাদের বিচিত্র-মধুর একটি উপন্যাস। রঙ্গে-ব্যঙ্গে, বিরহ-মিলনে, প্রেয়-শ্রেয়ের ঐকতানে এই কিতানে এই পর্ব যেন হয়ে উঠেছে। নান্দনিক নবরসে তরঙ্গায়িত এক মূৰ্ছনা। দ্বিতীয় পর্বের সূচনায় এক দার্শনিক অভিব্যক্তিতে ‘আমি’র আবির্ভাব। •••উদাসীন পৃথিবীতে, জগৎ যেমন চলার চলছিল—তারই মাঝে চলমান সে হঠাৎ নিজেকে আবিষ্কার করলাে, আমি যেন অন্য জগতের মানুষ, এই মাত্র পৃথিবীতে বেড়াতে এসেছি..আদর্শব্রতী নিরুদ্দিষ্ট পিতাকে এক কঠিন মুহূর্তে ফিরে পেলেও নিজেকে খুঁজে পেতে তাকে হাত বাড়াতে হয়েছে একদা-বান্ধবী মুকুর দিকেই। নতুন মূল্যবােধ নিয়ে এসে দাঁড়িয়েছে মুকু। রূপসী মুকুর রক্তমাংসের শরীরটার লাবণ্য ভেদ করে ক্রমেই প্রকটিত হয়ে পড়েছে আর এক মুকু—নারীর সুষমা আর দৃঢ়তার পৌরুষযােগে অনবগুণ্ঠিতা এক মানবী। পৈত্রিক বাস্তববােধের বাতাবরণে প্রেমিকার নবানুরাগের স্রোতে এক অভিনব মাত্রায় যেভাবে সংযােজিত হয়েছে সূর্যালােকের মতাে ছােট দাদুর আধ্যাত্মিক প্রভাব, তা লক্ষ্য করলে সত্যিই । বিস্ময়াবিষ্ট হতে হয়। •••এ এক অন্তর্মুখী। পরিব্রাজন..অদ্ভুত এক ব্যঞ্জনায় হঠাৎ নজরে আসে যে কথা-সাহিত্যিক সঞ্জীব চিত্রশিল্পী হয়ে গেছেন। ললাটাকম্বল তখন হয়ে যায় অগণিত চরিত্রের বহুবর্ণরঞ্জিত একটা বিরাট ক্যানভাস—তাতে ফ্রেম নেই। ফ্রেমের দায় পাঠক-মানসে—যেখানে স্বতঃস্পন্দনে ক্রমেই চিত্রায়িত হয়ে উঠতে থাকে উত্তরণের আহ্বানে অসীমের ইঙ্গিত—নতুন এক জীবনবােধের অপেক্ষমানতায়।
সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বিখ্যাত ভারতীয় বাঙালি লেখক। তিনি ১৯৩৬ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহন করেন। মেদিনীপুর জেলা স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা এবং হুগলী কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাগ্রহন করেন । তিনি অনেক উপন্যাস,ছোটগল্প ও প্রবন্ধ রচনা করেছেন । তাঁর সবথেকে বিখ্যাত উপন্যাস লোটাকম্বল যা দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়েছিল। তাঁর রচনায় হাস্যরসের সাথে তীব্র শ্লেষ ও ব্যঙ্গ মেশানো থাকে ।ছোটদের জন্য তাঁর লেখাগুলিও খুবই জনপ্রিয় । তাঁর সৃষ্ট ছোটদের চরিত্রের মধ্যে বড়মামা ও ছোটমামা প্রধান ।