"শরৎচন্দ্রের বৈঠকী গল্প" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: কথাসাহিত্যে শরৎচন্দ্রের শ্রেষ্ঠত্ব ও লােকপ্রিয়তা সর্বঅর্থেই কালােত্তীর্ণ। আজও তিনি সমান সজীব ও বহুপঠিত। একথা অনেকেই জানেন না, গল্পলেখক শরৎচন্দ্রের মতাে গল্পকথক শরৎচন্দ্রও একদা দেশের হৃদয় হরণ করেছিলেন। তার নিকট সান্নিধ্যে যারা এসেছিলেন তাঁরা জানতেন, গল্প-লিখিয়েকে প্রায়ই ছাপিয়ে যেতেন গল্প-বলিয়ে মানুষটি। গল্প বলার অসাধারণ ক্ষমতা ছিল শরৎচন্দ্রের। তাঁর বলার ভঙ্গিতে এমন একটা জাদু থাকত, যার স্পর্শে মুহুর্তে অভিভূত হয়ে যেতেন শ্রোতারা। মােহিতলাল মজুমদার সাক্ষ্য দিয়েছেন: “..শরৎচন্দ্রের গল্প সকলে পড়িয়াছেন ও মুগ্ধ হইয়াছেন, কিন্তু তাঁহার মুখে যাহা শুনিয়াছি তাহার অনুপ্রেরণা আর এক ধরনের, তাহাতে ভাবের সংক্রামতা আরও অব্যর্থ।” শরৎচন্দ্র ছিলেন এক বিরল মজলিশি মানুষ। বন্ধুমহলে বা কোনও বৈঠকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা খােশগল্প করে তিনি আসর জমিয়ে রাখতে পারতেন। সে সব গল্পের বিষয়বস্তুও অভিনব: প্রেম-অপ্রেম, হাসি-কান্না, সাধু-অসাধু, সতী-অসতী, মায়া ভূতের গল্প। অলিখিত অবস্থায় খ্যাত-অখ্যাত বহু শ্রোতার কাছে এবং নানান পত্র-পত্রিকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল এইসব বৈঠকি গল্প। বিভিন্ন সূত্র থেকে সংগৃহীত সেই আশ্চর্য আখ্যানগুলি নিয়ে রচিত হয়েছে ‘শরৎচন্দ্রের বৈঠকি গল্প। প্রথম প্রকাশের পর আরও গল্পসহযােগে পরিবর্ধিত আকারে প্রকাশিত হল এই বইয়ের আনন্দ-সংস্করণ।