“চিকিৎসা বিজ্ঞানের আজব কথা” এই বইয়ের গোড়ার কথা: রোগ যেমন রকমারি আছে, তার প্রতিকারও আছে অনেক রকম। আজকাল চিকিৎসার জন্য আগেকার মতো প্রেশক্রিপশন বড় একটা লিখতে হয় না। দোকানে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষাও করতে হয় না ওষুধ তৈরির জন্যে। ওষুধ তৈরিই আছে—পিল, ক্যাপসুল, পেস্ট, ইনজেকশন এইসব। এটা চিকিৎসা-বিজ্ঞানের এক চমকপ্ৰদ কৃতিত্ব, সন্দেহ নেই। কী করে অল্প সময়ের মধ্যে এই সাফল্য এল, সে এক তাজ্জব ব্যাপার। আজকের দিনে চিকিৎসা বিজ্ঞানের অদ্ভুত সব আবিষ্কার সম্বন্ধে অজ্ঞ থাকা কাজের কথা নয়। আকস্মিক দুর্ঘটনা সকলের জীবনেই ঘটতে পারে, ব্যাধিও যে কোনও সময় আক্রমণ করতে পারে। এর প্রতিকারের জন্য ডাক্তার আছেন একথা সত্যি। কিন্তু ডাক্তার তো আমাদের প্রত্যেকের সঙ্গে সঙ্গে ঘুরে বেড়াতে পারেন না! কাজেই ব্যাধির প্রারম্ভিক চিকিৎসা, কোন রোগের কোন ওষুধ এটা মোটামুটিভাবে আমাদের অল্প বয়স থেকেই জানা দরকার। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের আজব কাহিনীগুলি এই বইতে কিশোর বয়স্কদের জন্য গল্পের মতো করে লেখা হয়েছে। এই বইখানি লিখতে আমার পিতা এবং পিতৃবন্ধু অধ্যাপক ক্ষিতীন্দ্রনারায়ণ ভট্টাচাৰ্য আমাকে নানাভাবে সাহায্য করেছেন। সেজন্য আমি তাঁদের কাছে বিশেষভাবে ঋণী। পার্থসারথি চক্রবর্তী
“চিকিৎসা বিজ্ঞানের আজব কথা” এই বইয়ের সূচিপত্র: * চিমনির কথা * আমাদের দেহ যেন একটি আধুনিক বাড়ি * আমাদের শত্রু রোগ * জীবাণু * ভাইরাস * মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই * প্রাকৃতিক চিকিৎসা-সূৰ্যকিরণ * চিকিৎসা বিজ্ঞানের অভিনব আবিষ্কার * আমরা কী করে বেঁচে থাকি * বিভিন্ন গ্ৰন্থির কাজ ও হরমোন উদ্ভাবন * শরীরে লিভার কী কাজ করে * যে ব্যাঙ্কে টাকা নেই কিন্তু জীবন আছে * একটি আধুনিক মহামারী—এডস * চোখের আড়ালে * প্লাসটিক সার্জারির যাদু
জন্ম : ১৮ই জানুয়ারী ১৯৪১ সন, কৃষ্ণনগর শহরে। লেখাপড়া : কৃষ্ণনগর গভর্মেন্ট কলেজ ও প্রেসিডেন্সি কলেজ। কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ণশাস্ত্রের পি-এইচ. ডি.। অধ্যাপনা শুরু করেন ১৯৬৪ সনে প্রথমে মৌলানা আজাদ কলেজে। পরে কোলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ও কৃষ্ণনগর গভর্মেন্ট কলেজ। - পার্থসারথি চক্রবর্তী যে খুব বেশীদিন সাহিত্য রচনা করছেন এমন নয়। তবু, এরই মধ্যে তিনি হয়ে উঠেছেন বাংলা কিশোর সাহিত্যের অতি প্রিয় ও অপরিহার্য একটি নাম। বিজ্ঞানের রহস্যকে ছোটদের কাছে গপের মতো মনোগ্রাহী করে তুলতে তাঁর রচনার তুলনা মেলা ভার। তাছাড়া বিষয়বস্তুকে কৌতুহলকর, আকর্ষণীয় ও মজাদার করে তুলতে হয় কোন যাদুতে—তাও তাঁর অজানা নয়। দীর্ঘদিন অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত থাকায় সরস করে বিজ্ঞানের কাজের কথা লিখবার দিকেই তাঁর ঝোঁকটা বেশী। বাংলা সাহিত্যে বিজ্ঞানের উপর ছোটদের জন্য সরস করে লেখা নির্ভরযোগ্য বই এমনিতেই দুর্লভ। পাথসারথি চক্রবর্তী যে শুধু, সেই অভাব পুরণ করে চলেছেন তাই নয়—তাঁর কলমের গুণে সেই লেখা হয়ে ওঠে কখনও ম্যাজিকের মতো, কখনও আজব কাহিনীর মতো অথবা মজার খেলার মতো চিত্তাকর্ষক। ছোটদের মহলে তাই তাঁর বই নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। তাঁর লেখা কয়েকটি বিখ্যাত বই : ‘কেমিক্যাল ম্যাজিক’, ‘চিকিৎসা বিজ্ঞানের আজব কথা’, ‘রসায়নের ভেলকি, ‘ম্যাজিকের মতো মজা’, ‘তত সহজ ছিল না। | বৃটিশ গভর্মেন্টের ফেলোসিপ নিয়ে গ্রেট বৃটেন ও ইউরোপের বহু, দেশ ঘুরে এসেছেন। আন্তর্জাতিক সংস্থা UNICEF-এর সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা বিভাগে বহু শিক্ষা অধিকর্তার পদে নিযুক্ত আছেন।