"রাজীব" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: রাজীব গান্ধীকে সবচেয়ে ভাল জানতেন তাঁর স্ত্রী সােনিয়া। তিনিই রাজীবের এই জীবনালেখ্য রচনা করেছেন। এ বই চার ভাগে বিভক্ত। প্রথম ও শেষ ভাগের প্রকৃতি অনেকটাই আত্মগত চিন্তার মতাে। প্রথম ভাগে সেই চিন্তা শব্দের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, শেষ ভাগে চিত্রে। প্রথম ভাগে সােনিয়া গান্ধী তাঁর স্মৃতিচারণার মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন রাজীবকে। সেখানে তাঁর কণ্ঠস্বর মৃদু ও সংযত, আবার একইসঙ্গে আমাদের চিত্তে তা এক তীব্র অনুরণন জাগিয়ে দেয়। শেষ ভাগে রয়েছে রাজীবের তােলা চিত্রাবলি, যার মাধ্যমে নিজের সত্তাকে তিনি প্রকাশ করেছেন। মধ্যবর্তী দুটি ভাগের ভিতর দিয়ে, প্রচুর চিত্র ও তার পরিচায়িকার মাধ্যমে, লিপিবদ্ধ হল তাঁর জীবনকথা ; ব্যক্তিগত জীবন কীভাবে সামাজিক ও রাজনৈতিক খাতে প্রবাহিত হয়েছিল, তার ইতিহাস। যে-সব জায়গায় লেখিকার নিজেরও ভূমিকা ছিল, কিংবা যেখানে-যেখানে তিনি নিজে উপস্থিত ছিলেন, সেখানে-সেখানে যা বলবার, তা তিনি প্রথম পুরুষেই বলেছেন। তবে, চিঠিপত্র, বক্তৃতা ও সাক্ষাৎকারের যে-সব অংশ মাঝে-মাঝে তুলে দেওয়া হয়েছে, মূল চরিত্রগুলির কণ্ঠস্বরও সেখানে আমরা শুনতে পাই। জওয়াহরলাল নেহরু ও ইন্দিরা গান্ধীর পত্রাবলিতে—ভারতের মুক্তিসংগ্রামের সময়ে যা লেখা হয়েছিল—প্রকাশ পেয়েছে এক অন্তরঙ্গ পৃথিবীর ছবি। জনসাধারণ সেই পত্রাবলির সঙ্গে পরিচিত। ভারতের সর্বাধিক বিখ্যাত যে রাজনৈতিক পরিবার, তখন থেকেই তার সদস্যদের নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আলােচনা চলেছে বটে, কিন্তু নিজেদের বিষয়ে তাঁরা কেউই বড়-একটা মুখ খােলেননি। বর্তমান গ্রন্থে সােনিয়া গান্ধী এই পরিবারের সঙ্গে গ্রথিত তাঁর জীবনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ের কথা বলেছেন, এবং আপন অনুভূতি ও অন্তদৃষ্টির সাহায্যে দীপ্ত করে তুলেছেন রাজীবের চিন্তানুভূতির আভ্যন্তর জগৎকে। ব্যক্তি ও নিয়তির সংঘর্ষের এ এক অন্তস্পর্শী বিবরণ। সােনিয়া গান্ধীর ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে নির্বাচিত ও ইতিপূর্বে-অপ্রকাশিত প্রচুর চিঠি ও ছবি এ-গ্রন্থে বিভিন্ন যুগ ও চরিত্রকে এক আশ্চর্য আলােকে উদ্ভাসিত করে তুলেছে।